দেশের উন্নয়ন নিয়ে যত প্রতিশ্রুতিই আসুক না কেন, বেকারত্বের হার কমার কোনও লক্ষণ নেই। কিন্তু তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে হিন্দু মুসলিম বিতর্কেই ব্যস্ত শাসক দল। এই মর্মেই এবার সরকারকে তোপ দাগলেন নেটিজেনরা। ঠিক কী বলেছেন তাঁরা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
গোটা একটা বছরের সালতামামি শেষে দেখা গেল, দেশে কর্মসংস্থানের হাল যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে। বরং তার চেয়ে আরও খারাপ হয়েছে বললেও ভুল বলা হবে না। যুবসমাজের কাছে নানারকম কর্মসংস্থানের যত আশ্বাসই দেওয়া হোক না কেন, দেশে হুহু করে বাড়ছে কর্মহীনের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে এবার সরকারের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানালেন নেটিজেনরা। তাঁদের সাফ কথা, কেবল হিন্দু-মুসলিম বিতর্ক নিয়ে মাথা ঘামাতেই ব্যস্ত এই সরকার। দেশের ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব নিয়ে তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। মোদি সরকারের দেওয়া একাধিক প্রতিশ্রুতি যে আদতে দিনের আলোর মুখ দেখেনি, সে কথাও তুলে ধরেছেন তাঁরা। কর্মসংস্থানের দিকে গুরুত্ব না দিয়ে একের পর এক মন্দির আর ধর্মীয় স্থান নিয়ে পদক্ষেপ করা নিয়েও সরকারকে তোপ দেগেছেন নেটিজেনরা।
আরও শুনুন: হিন্দুধর্মকে অসম্মানের অভিযোগ, শিব ও বিষ্ণুর মিলনের কথায় চটুল গান গেয়ে বিপাকে ব্যক্তি
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতে বেকারত্বের হার ছিল ৮.৩ শতাংশ, যা গত ১৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। গ্রামীণ কাজের সুযোগ ৭.৪৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও, শহরে উলটে বেকারত্ব বেড়ে গিয়েছে ১০.৯ শতাংশ। আর এই ছবিটা যে কর্মক্ষম যুবক-যুবতীদের কাছে একটা বড় ধাক্কা, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে শহরে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়া থেকে এ কথাও স্পষ্ট যে, শিক্ষা এবং মেধাকে জীবিকা করে উপার্জনের সুযোগটাই আসলে কমে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না নেটিজেনরা। কেউ মোদি সরকারের সেইসব প্রতিশ্রুতির কোলাজ তুলে ধরেছেন, যা ২০২২ সালের মধ্যেই বাস্তবায়িত হওয়ার কথা ছিল কিন্তু আদতে কিছুই হয়নি। কেউ আবার স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান কুণাল কামরার জনপ্রিয় কথাটি তুলে এনে বিদ্রুপের সুরে বলেছেন, ‘সিয়াচেনে জওয়ানরা লড়ছে আর আপনারা বেকারত্ব নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন?’ এই সরকার মন্দির, দেবস্থান এবং হিন্দুত্ববাদ নিয়ে মাথা ঘামাতেই বেশি ব্যস্ত, এই মর্মেও তোপ দেগেছেন নেটিজেনদের একাংশ। কেউ কেউ ব্যঙ্গ করে বলেছেন, চাকরি না হোক, অযোধ্যা কাশী কেদার বদ্রির উন্নয়ন ঘটিয়েছেন মোদি। সেই সুরেই কেউ জুড়ে দিয়েছেন, এই সরকারের কাছে গুরুত্ব পায় ওই কাজগুলিই।
আরও শুনুন: ‘ধর্ষকদের থেকেও কি আমি বিপজ্জনক!’ বিজেপি নেত্রীকে তোপ উরফির
চাকরিপ্রার্থীদের বিপুল ভিড়ের ছবি পোস্ট করে মোদি সরকারের উদ্দেশে একের পর এক আক্রমণ শানিয়েছেন নেটিজেনরা। রাজনীতির মাধ্যমে কোনও উন্নয়ন না হলে, কেবল ধর্মের রাজনীতিতে যে তাঁরা আগ্রহী নন, সে কথাই এবার বুঝিয়ে দিলেন তাঁরা।