তালিবান তাণ্ডবের মধ্যেই আফগানভূমে নতুন আতঙ্কের ছায়া। শক্তি জাহির করছে ISIS-খোরাসান। ইতিমধ্যেই কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তারা। পালটা জবাব দিয়েছে আমেরিকাও। কারা ISIS-খোরাসান? কী লক্ষ্য এই জেহাদি দলটির? জানাচ্ছেন মণিশংকর চৌধুরী।
কাবুলে কায়েম হয়েছে তালিবানের শাসন। ক্লান্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছে মার্কিন ফৌজ। এহেন পরিস্থিতিতে যুদ্ধজর্জর দেশটিতে আতঙ্কের আরও এক নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসলামিক স্টেট (খোরাসান)। বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণের দায় নিয়েছে যে সংগঠনটি।
আরও শুনুন: কাবুলে বিস্ফোরণের পরই বাইডেনের হুমকি, আফগানভূমে কি ঘনিয়ে উঠছে যুদ্ধ?
নাম থেকেই স্পষ্ট, মূল ইসলামিক স্টেট বা ‘ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া’-র (ISIS) শাখা সংগঠন হল ইসলামিক স্টেট (খোরাসান) বা ISIS-K । এর যোদ্ধারা, নিহত ISIS প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির অনুগামী। এক্ষেত্রে খোরাসান বলতে বোঝায় ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের কিছু অংশকে। মূলত আফগানিস্তানের নানগরহার প্রদেশেই জেহাদি সংগঠনটির মূল ঘাঁটি। ২০১৪-১৫ সালে ইরাক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক এন্ড সিরিয়া (ISIS)। সেই সময় থেকেই ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে আফগানিস্তানে জন্ম নেয় ISIS-K। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠা করাই ISIS-K সংগঠনের মূল লক্ষ্য। তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলিতে শিকড় ছড়ানোর চেষ্টা করছে তারা।
আরও শুনুন: কাবুল বিস্ফোরণের বদলা নিল আমেরিকা, মার্কিন ড্রোন হানায় নিকেশ হামলার মূলচক্রী ISIS-K জঙ্গি
আফগানিস্তানে তৈরি হওয়ার পর থেকেই লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদ ও আল কায়দার মতো পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গে মধুচন্দ্রিমা শুরু হয় খোরাসানের। আর গোটাটাই হয় কুখ্যাত পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের নেতৃত্বে। দলের প্রথম প্রধান বা ‘আমির’ ছিল পাকিস্তানি নাগরিক হাফিজ সইদ খান। তারপর দলটির দায়িত্ব নেয় আবু ওমর খোরাসানি। ২০২০ সালের মে মাসে আফগান বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার খোরাসানির দিন কাটছিল কাবুলের পুল-ই-চারখি জেলে। ১৫ আগস্ট কাবুল দখল করার দু’দিন পরেই তাকে জেল থেকে বের করে হত্যা করে তালিবান জঙ্গিরা। রাষ্ট্রসংঘের এক রিপোর্ট মোতাবেক, আবু ওমর খোরাসানি ওরফে মওলাই জিয়াউল হকের জায়গায় এবার ইসলামিক স্টেট খোরাসান শাখার প্রধান হয়েছে মওলাই আসলাম ফারুকি।
ইসলামের হয়ে জেহাদের নামে কী পরিমাণ শক্তি সঞ্চয় করেছে এই জেহাদি সংগঠন, তা নিয়েও সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। ২০১৫ সাল থেকেই আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার নেতৃত্বে থাকা মিত্রবাহিনীর উপর হামলা চালাতে শুরু করে তারা।