স্কুলের প্রার্থনায় বাজানো হয়েছে আজান। ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল এলাকায়। অভিভাবকদের দাবিতে সাসপেন্ড করা হয়েছে এক শিক্ষককেও। ঘটনায় কী প্রতিক্রিয়া স্কুল কর্তৃপক্ষের? আসুন শুনে নিই।
স্কুলের ভিতর থেকে ভেসে আসছে আজানের শব্দ। ঘটনার ভিডিও তুলে নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন পথচারীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিডিওটি নেটদুনিয়ায় শোরগোল ফেলে দেয়। স্কুলের সামনে ছুটে আসেন অভিভাবকরা। সকলেই প্রশ্ন তোলেন, স্কুলের ভিতর আজান বাজানোর কারণ কী? স্কুলের সামনে বিক্ষোভও শুরু করেন তাঁরা। এরপরই সামনে আসে ঘটনার আসল কারণ।
আরও শুনুন: মুসলিম মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে জড়ানোর ‘টোপ’! মিলবে মোটা টাকা, ঘোষণা হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের
সম্প্রতি, মুম্বইয়ের বিদ্যানিধি ইন্টারন্যাশানাল স্কুলে ঘটেছে এমনই কাণ্ড। দীর্ঘ গরমের ছুটি কাটিয়ে সপ্তাহখানেক আগেই খুলেছিল এই স্কুল। অন্যান্য দিনের মতো এদিন যথাসময়ে স্কুলে হাজির হয় পড়ুয়ারা। রোজকার মতো এদিনও প্রার্থনায় অংশ নেয় সকলে। সেখানেই ঘটে এক অদ্ভুত কাণ্ড। লাউড স্পিকারে বেজে ওঠে আজানের শব্দ। মসজিদে নামাজ পড়ার আগে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের যে আহবান জানানো হয়, তাই আজান। যে কোনও মসজিদে দিনে পাঁচবার এই আওয়াজ শোনা যায়। কিন্তু এদিন সকালে প্রার্থনার সময় সেই আজানই, মুম্বইয়ের স্কুলে প্রায় ৩০ সেকেন্ড ধরে বাজানো হয়েছে। এইসময় কয়েকজন পথচারী স্কুলের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। স্কুলের ভিতর থেকে আজানের শব্দ শুনে তাঁরাও থমকে যান। কয়েকজন অখনই ঘটনার ভিডিও করে নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে দেন। এই সময় কয়েকজন অভিভাবকও স্কুল চত্বরেই ছিলেন। তাঁরাও আজানের শব্দ শুনে রীতিমতো অবাক হন। এরপর মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা। স্কুলের সামনে দলে দলে অভিভাবক-অভিভাবিকা জমায়েত হতে শুরু করেন। স্কুলের মধ্যে কেন আজান চালানো হয়েছে? প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ দেখাতে আরম্ভ করেন তাঁরা। খবর পেয়ে বেরিয়ে আসেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। উত্তেজিত অভিভাবকদের বিভিন্নভাবে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু তাঁরা কোনও কথা শুনতেই নারাজ। বাধ্য হয়েই ঘটনার আসল কারণ সকলের সামনে তুলে ধরেন প্রধান শিক্ষিকা। তাঁর কথায়, পড়ুয়াদের সর্বধর্ম সমন্বয়ের পাঠ শেখাতেই এমনটা করা হয়েছে। কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু এরপরই অভিভাবকদের তরফে প্রশ্ন ওঠে, কে এদিন স্কুলের মধ্যে আজান বাজিয়েছে? সামনে আসে ওই স্কুলেরই এক শিক্ষকের নাম। জানা যায়, স্থানীয় মসজিদে হওয়া আজান মোবাইলে রেকর্ড করে এদিন প্রার্থনার সময় বাজিয়েছিলেন তিনি। এরপর ওই শিক্ষককে সাসপেন্ড করার দাবি তোলেন অভিভাবকরা। চাপে পড়ে তেমনটা করতে বাধ্য হয় স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আরও শুনুন: বাড়িতে কড়া শাসন, পর্নদুনিয়ায় পা রেখে তবু মিয়া খালিফা হওয়ার স্বপ্ন মুসলিম তরুণীর
ঘটনার জল গড়ায় থানা অবধি। পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েকজন অভিভাবক এই ঘটনার অভিযোগ জানাতে থানায় এসেছিলেন। তবে স্কুলের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে ঘটনায় সমর্থন জানিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতা। এঁকে হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি। তবে, জানা গিয়েছে ওই স্কুলে মুসলিম পড়ুয়াও রয়েছে। তাই এই ঘটনায় তাদের প্রতিক্রিয়া ঠিক কেমন হবে, সেই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।