ক্লাস নেওয়ার সময় ধর্মীয় ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। এমনই অভিযোগে এক শিক্ষককে বরখাস্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখানেই ঘটনার ইতি হয়নি। সম্প্রতি ওই শিক্ষককে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। কিন্তু কলেজ বরখাস্ত করার পরেও তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাল কারা? আসুন শুনে নিই।
হিন্দু ধর্মের অপমান করেছেন। তাঁর মন্তব্যে, হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। এমনই অভিযোগে পুনের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন হিন্দুত্ববাদীরা। কলেজ বরখাস্ত করেছিল অগেই। সম্প্রতি এর জেরে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে ওই অধ্যাপককে।
আরও শুনুন: মন্দির না মসজিদ! ‘জ্ঞানবাপী আসলে বৌদ্ধ মঠ’, দাবি পৌঁছল সুপ্রিম কোর্টে
ঘটনাটি পুনের এক বিখ্যাত কলেজের। সেখানে হিন্দি অধ্যাপক হিসেবে বিগত ১৮ বছর ধরে যুক্ত ছিলেন অশোক সোপান ঢোলে। বছর ৪৩-র এই অধ্যাপক বরাবরই নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের কাজ করতেন। ক্লাসে কোনওরূপ বেচাল একেবারেই বরদাস্ত করতেন না। তাই পড়ুয়াদের কাছে তিনি খুব একটা পছন্দের মানুষ ছিলেন না। ঘটনার সূত্রপাত এইরকম এক ক্লাস নেওয়াকে কেন্দ্র করে। দিনকয়েক আগে ক্লাসে ভক্তিরস পড়াচ্ছিলেন অশোকবাবু। সেই প্রসঙ্গেই একাধিক হিন্দু দেবদেবীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন তিনি। নিজের বক্তব্যে প্রমাণ করতে চান, সব ধর্মই সমান। কোথাও কোনও ভেদাভেদ নেই। আর এই ধরনের কিছু মন্তব্য শুনেই বেজায় চটে যান ক্লাসের কয়েকজন পড়ুয়া। তাঁরা প্রতিবাদ করতে উঠলে, ক্লাস থেকেই বের করে দেন অশোকবাবু। এর জেরে আরও জটিল হয় সমস্যা। কোনও এক পড়ুয়া সেদিনের ক্লাসের ভিডিও করেন। সেও ভিডিও সমাজ মাধ্যমে কিছুক্ষণের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি নজরে আসে কলেজ কর্তৃপক্ষেরও। তক্ষণি ওই অধ্যাপককে বরখাস্ত করেন তাঁরা। কিন্তু এখানেই ঘটনার শেষ নয়।
আরও শুনুন: বদলাচ্ছে দেশ! ১০০ বছর পেরিয়ে মিলল অধিকার, তামিলনাড়ুর মন্দিরে পুজো দিলেন দলিতরা
ভিডিও দেখে কলেজে হাজির হন হিন্দু সংগঠনের লোকজন। অশোকবাবুর বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগে সরব হন তাঁরা। প্রমাণ হিসেবে ভিডিও দেখিয়ে, পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানান তাঁরা। সেই অনুযায়ী ওই অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫এ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও পুলিশের দাবি, প্রাথমিক তদন্তের পরই ওই অধ্যাপককে গ্রাফতার করা হয়েছে। আপাতত তাঁকে জীজ্ঞাসাবাদ করা হবে। হিন্দুত্ববাদীদের সাফ দাবি, ওই অধ্যাপকের মন্তব্য হিন্দু দেবতাদের অপমান করেছে। এতে তাঁদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। যদিও ওই অধ্যাপকের কথায়, কাউকে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। মন্তব্যের ভুল ব্যখ্যা করা হয়েছে বলেই দাবি তাঁর। আর এই কাজের জন্য ওই বিক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের দিকেই নিশানা কএরছেন তিনি। তবু ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ওই অধ্যাপক। কিন্তু এতে চিঁড়ে ভেজেনি বললেই চলে। ওই অধ্যাপকের কড়া শাস্তির দাবিতে অনড় রয়েছে হিন্দুত্ববাদিরা। যদিও পুলিশের দাবি, এ বিষয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই ওই অধ্যাপককে কোর্টে পেশ করা হবে।