‘হাতে কেন তাগা বাঁধা?’ ছাত্রকে প্রশ্ন শিক্ষিকার। উত্তর, ‘পুজোর পর বেঁধে দিয়েছেন ঠাকুরমশাই।’ কিন্তু তা পরে স্কুলে কেন? এই কথা বলেই, তাগা ছিঁড়তে বাধ্য করলেন শিক্ষিকা। কোথায় ঘটেছে এমন কাণ্ড? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
‘পুলিশি পাহারায় সরস্বতী পুজো’! দিনদুয়েক আগেই এমন শিরোনাম রীতিমতো শোরগোল ফেলেছিল। খাস কলকাতায় কেন এমন ব্যবস্থা বাগদেবীর আরাধনায় এই নিয়ে প্রশ্ন ছিল অনেকেরই। এই আবহে আরও এক বিতর্ক নেটদুনিয়ায় শোরগোল ফেলল।
এবার অবশ্য সরাসরি পুজো নিয়ে নয়, বরং পুজোর আচার নিয়ে আপত্তি উঠেছে। এমনিতে পুজোর পর দেবতার আশীর্বাদ হিসেবে হাতে তাগা বাঁধা হয় বা কপালে তিলক কাটা হয়। সব পুজোতেই এমন নিয়ম চলতে পারে।মন্দিরে পুজো দিলেও অনেকসময় প্রতীকী এই তাগা হাতে বেঁধে দেওয়া হয়। বিশেষত উত্তর ভারতের প্রায় সব মন্দিরেই এমন চল দেখা যায়। বাঙালিদের ক্ষেত্রে যেমন বিপত্তারিণির তাগা বাঁধা বেশ চলতি একটা বিষয়। অনেকে সারাবছর সেই তাগা হাতে বেঁধে রাখেন। অফিস, স্কুল সব জায়গাতেই ওই তাগা হাতে নিয়েই হাজির হন। তাতে সেই অর্থে আপত্তি তোলেন না কেউই। আসলে, এই তাগা বাঁধা ব্যক্তিগত বিশ্বাস। তা খুলতে বলা ভাবাবেগে আঘাত দেওয়াই বটে। তবে এমনটাই হয়েছে অলে অভিযোগ। ছাত্রের হাতে বাঁধা তাগা খুলতে বাধ্য করেছেন শিক্ষিকা। আর সেই নিয়েই জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে নেটদুনিয়ায়।
যদিও এই ঘটনা এ দেশের নয়। সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকার এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমনটা ঘটেছে বলেই অভিযোগ এনেছে সে দেশের হিন্দু পরিষদ। বলা হয়েছে, ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা জোর করে এক ছাত্রকে হাতের তাগা খুলতে বাধ্য করেছেন। এদিকে, ভয়ে সেই ছাত্র মুখ খুলতে নারাজ। এমনকি তার পরিচয়ও জানা যায়নি। এই প্রসঙ্গ ধরে হিন্দু পরিষদের আরও অভিযোগ, ওই প্রতিষ্ঠান কোনওরকম ধর্মীয় চিহ্ন বা প্রতীকীকে সমর্থন করে না। এদিকে, স্কুলের প্রিন্সিপাল বা চেয়ারম্যান হিন্দু। তাঁরা হাতে আংটি বা বালা পরেন বলেও জানিয়েছেন। একথাও হিন্দু পরিষদের তরফেই জানানো হয়েছে। তাহলে কেন ওই স্কুলে এমন পদক্ষেপ করা হল, সেই প্রশ্নই তোলা হয়েছে হিন্দু সংগঠনের তরফে। তবে ওই ছাত্র যেহেতু অভিযোগ জানায়নি, তাই বিষয়টা নিয়ে আরও তদন্ত করতে হবে বলেই জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে অভিযোগ সত্যি হলে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়েছে তারা। এদিকে, হিন্দু পরিষদের তরফে একথাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে সে দেশের আইনে এমন কোনও নিয়ম নেই। এর আগেও সেখানকার কোনও এক স্কুলে নাকে নথ পরায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। সেবার আইনি পথেই নিয়ম বদলাতে বাধ্য করা হয়। এক্ষেত্রেও এমন কিছু হবে বলেই আশাবাদী হিন্দুত্ববাদীরা। যদিও এমন ঘটনা এর আগে ভারতেও হয়েছে। স্কুলে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরা বা হিন্দুদের পৈতে পরা নিয়ে আপত্তি উঠেছে বিভিন্ন স্কুলে। সেই নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার ঘটনায় নতুন করে সেই বিতর্ক উসকে উঠল।