সনাতন ধর্ম ইস্যুতে উদয়ানিধি স্ট্যালিনের মন্তব্য ঘিরে শোরগোল গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলে। এই পরিস্থিতিতেই এবার সনাতন ধর্ম নিয়ে পড়ুয়াদের বক্তব্য আহবান করে বসল তামিলনাড়ুর এক সরকারি কলেজ। কী নির্দেশ দিয়েছে কলেজটি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
দিনকয়েক আগেই সনাতন ধর্মের সঙ্গে রোগ ব্যাধির তুলনা টেনে বেনজির তোপ দেগেছিলেন ডিএমকে নেতা উদয়ানিধি স্ট্যালিন। যা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোরদার চাপানউতোর। একদিকে এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে লাগাতার আক্রমণ শানাচ্ছে বিজেপি, অন্যদিকে আবার উদয়ানিধির সুরেই হিন্দু ধর্মের বৈষম্যের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মল্লিকার্জুন খাড়গে বা স্ট্যালিনের মতো দক্ষিণের কোনও কোনও পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। এই ইস্যু যে সব মহলেই বড়সড় ছাপ ফেলছে, তা-ই বোঝা গেল এবার। এই প্রসঙ্গেই পড়ুয়াদের বক্তব্যসভা আয়োজনের নির্দেশ দিল তামিলনাড়ুর একটি সরকারি কলেজ। প্রয়াত ডিএমকে নেতা আরিগনার আন্না-র জন্মদিন উপলক্ষেই এই ব্যবস্থা করেছে কলেজ, যা নিয়ে এই ইস্যুতে নতুন করে উসকে উঠল বিতর্ক।
সম্প্রতি চেন্নাইয়ে একটি অনুষ্ঠানে ন্যায় ও সাম্যের বিরোধী সনাতন ধর্মের আদর্শকে মুছে ফেলার কথা বলেন উদয়নিধি। তিনি সাফ বলেছিলেন, ম্যালেরিয়া-ডেঙ্গির মতো রোগকে যেমন নিশ্চিহ্ন করার প্রয়োজন রয়েছে, তেমনই সনাতন ধর্ম ও তার আদর্শকেও সমাজ থেকে মুছে ফেলার প্রয়োজন রয়েছে। আর তাঁর সেই মন্তব্য নিয়েই উঠেছে বিতর্কের ঝড়। ওই মন্তব্যে আসলে সনাতন ধর্ম তথা হিন্দু ধর্মকে অপমান করা হয়েছে, এই মর্মে জোর প্রচার শুরু করেছে হিন্দুত্ববাদী শিবির। সম্প্রতি এই ইস্যুতে মুখ খুলে খোদ যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, ভারতের জাতীয় ধর্মই হল সনাতন ধর্ম। আর ভারতে যাঁরা বাস করেন, তাঁরা সকলেই এর শরিক। সকলেই হিন্দু। তাঁর মতে, হিন্দু শব্দটি আদৌ কোনও ধর্মীয় শব্দ নয়, তা ভারতের সাংস্কৃতিক পরিচয়। এই প্রসঙ্গে ঠিক কী ভাবছে পড়ুয়ারা? সনাতন ধর্ম নিয়ে তাদের কী মতামত, তা প্রকাশ করার জন্যই তাদের বক্তব্য রাখার নির্দেশ দিয়েছে কলেজটি। যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, এ নিয়ে কোনোরকম চাপিয়ে দেওয়ার ব্যাপার নেই। পড়ুয়ারা এই আলোচনায় স্বেচ্ছায় যোগদান করতে পারে বা নাও পারে, সেই পরিসর খুলে রাখা হয়েছে। কিন্তু কলেজের তরফে যাই বলা হোক না কেন, সনাতন ধর্ম নিয়ে বাকবিতণ্ডার মাঝে এহেন নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্কের জল গড়াল আরও।