রামমন্দিরের উদ্বোধনে আসছেন না শঙ্করাচার্যরা। ধর্মগুরুদের এই সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। তবে তাঁদের বাদ দিলে, রাম মন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে বেজায় খুশি অনেকেই। এমনকি মন্দির উদ্বোধনের আবহে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসাতেও পঞ্চমুখ হয়েছেন বেশ কয়েকজন ধর্মগুরু। কারা রয়েছেন তালিকায়? আসুন শুনে নিই।
রাম মন্দির উদ্বোধন ঘিরে সাজ সাজো রব গোটা দেশে। হাজার হাজার অতিথিকে স্বাগত জানাছে বিশেষভাবে প্রস্তুত হচ্ছে অযোধ্যা। একইসঙ্গে প্রস্তুত হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদিও। মন্দির উদ্বোধনের ১১ দিন আগে থেকে কঠোর সংযম ব্রত শুরু করেছেন তিনি। আর এই পদক্ষেপে রীতিমতো খুশি দেশের ধর্মগুরুরা।
আরও শুনুন: ৭৪ শতাংশ মুসলিমই রাম মন্দিরের পক্ষে, সমীক্ষার ফল দেখিয়ে দাবি রাষ্ট্রীয় মুসলিম মঞ্চের
২২ জানুয়ারি অযোধ্যার মন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা। যেখানে প্রধান অতিথি তথা মধ্যমণি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, তাঁর হাতেই হবে প্রাণপ্রতিষ্ঠার উৎসব। সারা দেশ থেকে বহু সাধু-সন্তই এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। থাকবেন না স্রেফ শঙ্করাচার্যরা। প্রথমে পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী একথা ঘোষণা করেন। একে একে বাকীরাও তাঁর সুরেই সুর মেলান। প্রভু রামকে নিয়ে এই যে উদযাপন, তাতে তাঁদের আপত্তি নেই। তবে মন্দির উদ্বোধনকে শাস্ত্রসম্মত বলতে তাঁরা নারাজ। আর সেই কারনেই এই অনুষ্ঠানে তাঁরা যোগ দিতে পারবেন না। তবে এর মানে মোদি বিরোধিতা নয়। একথাও সাফ জানিয়ে দেন উত্তরাখন্ডের শঙ্করাচার্য। এদিকে বিরোধীরা এই ঘটনাকে সামনে রেখে একাধিক অভিযোগ আনতে শুরু করে। তাঁদের অনেকেই রাম মন্দিরের উদ্বোধনকে শাস্ত্রবিরুদ্ধ বলে দাগিয়ে দেন। সম্প্রতি সেই বিতর্ক আরও উসকে দেন পুরীর শঙ্করাচার্য। খোদ প্রধানমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলে রাম মন্দির উদ্বোধনের সমালোচনা করেন তিনি। তবু রাম মন্দির উদ্বোধনের আগে বেশিরভাগ ধর্মগুরুই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ টেনে কথা বলছেন। বিশেষ করে রাম লালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগে মোদির সংযম ব্রত পালনে, তাঁদের অনেকেই মুগ্ধ হয়েছেন।
আরও শুনুন: রাম মন্দির উদ্বোধনে লঙ্ঘিত হচ্ছে সনাতন ধর্ম, শঙ্করাচার্যের যুক্তিই ঢাল কংগ্রেসের
তালিকায় প্রথমেই রয়েছেন পরমার্থ নিকেতন আসগ্রমের চিদানন্দ সরস্বতী। নরেন্দ্র মোদির মতো মানুষকে প্রধানমন্ত্রী হিসবে পেয়ে সকলের গর্ব হওয়া উচিত, এই দাবিই তুলেছেন তিনি। একইসঙ্গে রাম মন্দির তৈরির নেপথ্যে থাকা ৫০০ বছরের দীর্ঘ আন্দোলনের কথাও তিনি তুলে আনেন। একইভাবে জুনা আখড়ার কর্ণধার স্বামী অবদেশানন্দ গিরির সাফ যুক্তি, প্রধানমন্ত্রী যেমন সু-শাসক, তেমনই অতুলনীয় উপাসক। তিনি আরও বলে, রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার দিনে অন্যান্য জাতি ধর্মের মানুষও যে উৎসবে শামিল হবেন, তা সম্ভব হয়েছে স্রেফ মোদির জন্যই। এখানেই শেষ নয়, এই বিরাট কর্মযজ্ঞে মোদি যেন সফল হন, তার জন্য মোদির নাম করে বিশেষ পুজোপাঠের ব্যবস্থা করেছেন হরিদ্বারের হিন্দু সংগঠন। এমনিতে রাম মন্দিরের নির্মানে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভূমিকা নিয়ে প্রশংসা করতেই শোনা যায় দেশের অধিকাংশ ধর্মগুরুকে। মন্দির উদ্বোধনের আগে তা আরও বেশি করে প্রকাশ্যে আসছে। এর মধ্যে মোদির সংযম ব্রত পালন নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তাই শঙ্করাচার্যরা না এলেও, রাম মন্দির উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী মোদির উপর খুশি দেশের বহু সাধু সন্তই।