কপালে তিলক থাকলে, ঢুকতে দেয় না স্কুল। ধর্মগুরুর দরবারে এমনই অভিযোগ ছিল মহিলার। উত্তরে স্কুলের বিরুদ্ধেই মামলা করার নিদান দিলেন ধর্মগুরু। শুধু তাই নয়, সংবিধানের প্রসঙ্গ টেনে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যাও করেছেন তিনি। ঠিক কী বলছেন ওই ধর্মগুরু? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
যে কোনও প্রতিষ্ঠানেরই নিজস্ব নিয়ম থাকে। অফিস, আদালত সর্বত্রই নিয়ম মেনে চলতে হয় কর্মীদের। আর এই অভ্যাসের শুরুটা হয় স্কুল থেকে। নির্দিষ্ট পোশাক থেকে শুরু করে সময় মতো স্কুলে হাজির হওয়া, সবই মানতে বাধ্য থাকে পড়ুয়ারা। এমনই এক স্কুলের নিয়ম, কপালে তিলক বা কোনও ধর্মীয় চিহ্ন নিয়ে স্কুলে ঢুকতে পারবে না পড়ুয়ারা। এতেই জোর আপত্তি ধর্মগুরুর। সরাসরি স্কুলের বিরুদ্ধেই মামলা করার নিদান দিলেন তিনি।
আরও শুনুন: প্রধানমন্ত্রীকে নকল করেই জনপ্রিয়, বারাণসীতে মোদির বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে চান সেই কমেডিয়ান
ঘটনাটি ইন্দোরের। সেখানকার এক ধর্মসভায় বক্তব্য রাখতে হাজির হয়েছিলেন বাগেশ্বর বাবা। সোশাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় এই ধর্মগুরু প্রায়শই বিভিন্ন ইস্যুতে মন্তব্য করে থাকেন। তা নিয়ে বিতর্কও হয়। এবার তাঁর নিদান, তিলক পরে ঢুকতে না দিলে স্কুলের বিরুদ্ধেই মামলা করা হোক। ঘটনার সূত্রপাত এক মহিলার অভিযোগের থেকে। ধর্মসভায় নিজের সন্তানের স্কুল সম্পর্কে অদ্ভুত অভিযোগ তোলেন মহিলা। তাঁর দাবি, তিলক বা রক্ষা সূত্র জাতীয় কিছু থাকলে পড়ুয়াদের স্কুলেই ঢুকতে দেওয়া হয় না। এবার হিন্দু পরিবারে এমনটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কোনও পুজো হলেই কপালে তিলক এঁকে দেওয়া নিয়ম। আবার হাতে রক্ষা সূত্রও পরানো হয় পুজোর পরই। মনে করা হয় এই ধরনের মঙ্গলচিহ্ন থাকলে যে কোনও বিপদ থেকে রক্ষা মেলে। কাজেই সন্তানের হাতে যত্ন নিয়েই সেসব বেঁধে দেন অভিভাবকরা। কিন্তু এসব স্কুলে ঢোকার নিয়ম নেই। তাই কর্তৃপক্ষ সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, কেউ যেন এমনটা না করে। তাতেই সমস্যায় পড়েছেন মহিলা। পড়াশোনা নাকি মঙ্গল, সন্তানের জন্য কোনও বেশি জরুরি তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলেন না তিনি। তাই বাবার দরবারে নিজের সমস্যার কথা তোলেন।
আরও শুনুন: এমন কাণ্ড করবেন না যাতে কেজরির হাল হয়! ইঙ্গিতে অন্য নেতাদের সতর্ক করলেন মোদি?
অভিযোগ শুনে বাগেশ্বর বাবা বেশ রেগে যান। তাঁর পালটা প্রশ্ন, ওই স্কুল ভারতের না বিদেশের? অর্থাৎ ভারতের কোনও স্কুল এমন নিয়ম জারি করতেই পারে না বলে মনে করেন ধর্মগুরু। তাঁর দাবি, দেশের সংবিধানই সে অধিকার আমাদের দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে, সংবিধানে থাকা ধর্মীয় অধিকারের কথাই উল্লেখ করেছেন তিনি। সেক্ষেত্রে হিন্দুরা কপালে তিলক পরবেন এটাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন বাগেশ্বর বাবা। তাই সেই অধিকারে কেউ হস্তক্ষেপ করলে আইন মেনেই পদক্ষেপ করা উচিত। তাঁর নিদান, যে স্কুলে এমন নিয়ম জারি হয়েছে তার নামে মামলা করা হোক। সভায় উপস্থিত সকলেই তাঁর এই বক্তব্য শুনে বেশ উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন। সকলেই বাগেশ্বর বাবার ওই মন্তব্য সমর্থনও করেন। এবার স্কুলের বিরুদ্ধে আদৌ মামলা হয় কি না, সেটাই দেখার!