পতিতালয় বা যৌনপল্লিতে অভিযানের সময় গ্রেপ্তার করা যাবে না কোনও যৌনকর্মীকে। তাঁদের হেনস্তা বা তাঁদের বিরুদ্ধে জরিমানা ধার্যও করা যাবে না। সম্প্রতি একটি নির্দিষ্ট মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম নির্দেশ মনে করিয়ে এই রায় দিল মাদ্রাজ হাই কোর্ট। ঠিক কী বলল আদালত? আসুন শুনে নিই।
যৌনপেশা অপরাধ নয়। স্বেচ্ছায় যদি কেউ এই পেশাকে গ্রহণ করেন, তবে তাঁকে হেনস্তা করা যাবে না। যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর সময় গ্রেপ্তার করা যাবে না কোনও যৌনকর্মীকেই। সম্প্রতি এক মামলার প্রেক্ষিতে এই রায়-ই শোনাল মাদ্রাজ হাই কোর্ট। এই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের সাম্প্রতিক নির্দেশর কথাও মনে করিয়ে দিলেন বিচারক।
আরও শুনুন: দ্বাদশ শ্রেণির পাঠক্রম থেকে বাদ গুজরাট হিংসা, নয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানাল কেন্দ্রীয় সিলেবাস কমিটি
ঘটনার সূত্রপাত যখন একটি মাসাজ সেন্টার থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, মাসাজ সেন্টারকে সামনে রেখে আসলে যৌনব্যবসা চালানো হচ্ছিল। এবং অভিযুক্তকে সেই সময় যৌনকর্মীদের সঙ্গেই দেখা যায়। এই অভিযোগেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। সওয়াল পর্বে অভিযুক্তের আইনজীবী জানান, যদি এই দুটি ঘটনাকে একসঙ্গেও দেখা যায়, তাহলেও তাঁর মক্কেলের দোষ প্রমাণিত হয় না। প্রমাণ হয় না যে, তিনি কোনও অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত।
আরও শুনুন: পরনের পোশাক এত স্বল্প কেন! কিশোরীকে বাসেই উঠতে দিলেন না নারাজ চালক
আইনজীবির দাবি, মাসাজ সেন্টারের আড়ালে যদি যৌনব্যবসা চালানোও হয়, তার মানে এই নয় যে তাঁর মক্কেল সেই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। যৌনপল্লি চালানো বেআইনি, কিন্তু যৌনপেশায় কেউ যদি স্বেচ্ছায় জড়িত থাকেন, তাহলে তা অপরাধ নয়। সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের অপরাধ প্রমাণিত হচ্ছে না। আইনজীবীর এই সওয়ালের পরই আদালত পর্যবেক্ষণে জানায় যে, যৌনপেশা যেহেতু অপরাধ নয়, সেক্ষেত্রে এই ধরনের অভিযানে কোনও যৌনকর্মীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। একই ভাবে অভিযুক্তর সম্পর্কে আদালত জানায়, যদি অভিযান চলাকালীন তাঁকে যৌনকর্মীদের সঙ্গে দেখাও যায়, তাহলেও প্রমাণ হয় না যে, তিনি জোর করে কাউকে যৌন পেশায় বাধ্য করেছেন। বলপূর্বক যৌন পেশায় নামানো অপরাধের শামিল। কিন্তু এক্ষেত্রে অভিযুক্তকে সেই পর্যায়ভুক্ত করা যায় না। যৌনপল্লি চালানো বেআইনি হলেও, অভিযুক্ত সেটির মালিক নন। ফলত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়, কেননা তিনি ঠিক কী অপরাধ করেছেন, সেটিই নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
এই মামলার নিরিখেই আদালত আরও একবার মনে করিয়ে দেয় যে, যৌনপল্লি চালানো অপরাধ হলেও, স্বেচ্ছায় যৌনপেশা গ্রহণ অপরাধ নয়। তাই যৌনপল্লিতে অভিযানের সময় কোনও যৌনকর্মীকে হেনস্তা বা গ্রেপ্তার করা যাবে না।