বিয়ের আগে যৌনতায় মান্যতা দেয় না ইসলাম। সম্প্রতি এক মামলার শুনানিতে একথা সাফ জানিয়েছেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি। শুধু যৌনতাই নয়, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কেও কোনও প্রকার প্রণয়সুলভ আচরণেও রয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। ঠিক কোন মামলার প্রেক্ষিতে একথা জানাল আদালত? আসুন শুনে নিই।
বিয়ের আগে যৌনতা নিয়ে নানা মুনির নানা মত। বিষয়টিকে কেউ সহজভাবে দেখেন, আবার কারও ক্ষেত্রে এই নিয়ে যথেষ্ট ছুঁতমার্গ রয়েছে। সম্প্রতি এই ইস্যুতেই দুই ভিনধর্মী যুগল আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, বিয়ের আগে একসঙ্গে থাকার জন্য যথেষ্ট ভোগান্তি সহ্য করতে হচ্ছে তাঁদের। সেখানেই আদালতের রায়, ইসলাম সমাজ বিয়ের আগে যৌনতায় কোনওরূপ মান্যতা দেয় না।
আরও শুনুন: দাড়ি কাটলে বহিষ্কার করবে কলেজ, হুঁশিয়ারি ইসলামিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
লিভ ইন সম্পর্কের মান্যতা নিয়ে একাধিক মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালতের তরফে ক্ষেত্র বিশেষে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন রায়। এমনই এক সুপ্রিম পর্যবেক্ষনকে কেন্দ্র করে এলাহাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই ভিনধর্মী যুগল। মূলত আদালতের কাছে সুরক্ষা চেয়েছিলেন তাঁরা। অভিযোগ ছিল, দীর্ঘদিন ধরে পুলিশি হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে তাঁদের। এরপরই ঘটনার সবিস্তার বাখ্যা জানতে চায় আদালত। এবং সামনে আসে আসল তথ্য। জানা যায়, এলাহাবাদের ওই যুগল আসলে ভিন্নধর্ম থেকে আগত। অর্থাৎ একজন হিন্দু অন্যজন মুসলিম। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা লিভ ইন সম্পর্কে রয়েছেন। কিন্তু মেয়েটির পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। তাঁরাই অভিযোগ দায়ের করে থানায়। যার ভিত্তিতে পুলিশ ওই যুগলকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করে। এমনটাই অভিযোগ ওই যুগলের। এক্ষেত্রে লিভ ইন সম্পর্ক ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের কিছু রায়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন তাঁরা। দাবি করেন, সেই ভিত্তিতে তাঁদের সম্পর্কটিকেও মান্যতা দেওয়া হোক। কিন্তু সব কিছু শোনার পর তাঁদের এই দাবি কার্যত নাকচ করে দেন এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতিরা। আদালতের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ইসলাম ধর্মে কোনওভাবেই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে মান্যতা দেওয়া হয় না। বিয়ের আগে যৌনতাও কখনই স্বীকৃত নয়। শুধু তাই নয়, আদালত জানিয়েছে, ইসলাম মত অনুযায়ী কোনও যুগল বিয়ের আগে হাত ধরে ঘোরা, একে অপরকে জড়িয়ে ধরা কিংবা চুমু খাওয়ার মতো কাজ করতে পারবে না। এমনকি কোনও অবিবাহিত যুগল একে অন্যের দিকে সরাসরি তাকালেও, তা ‘হারাম’ বা ‘পাপের’ সমান।
আরও শুনুন: ডিজে আর নাচ-গান ইসলামী সংস্কৃতি নয়, বিয়ে না দেওয়ার বার্তা মৌলবিদের
এরপর হাই কোর্টের বিচারপতি, সুপ্রিম পর্যবেক্ষণ নিয়েও মন্তব্য করেছেন। তাঁর দাবি, শীর্ষ আদালতের রায় কখনই ভিনধর্মী যুগলের এই দাবিকে স্বীকৃতি দেয় না। বিচারপতি সাফ জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টও চায় বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদা রক্ষা পাক। অধিকাংশ রায় সেদিকেই ইঙ্গিত করে বলেই দাবি তাঁর। তাই এই যুগলের কোনও দাবি আদালত মান্যতা দিতে পারে না। একথা জানিয়েই তাঁদের সমস্ত দাবি নাকচ করেছে এলাহাবাদ আদালত।