যখনই মনে করা গিয়েছিল দেশ এবার সুস্থ হয়ে ওঠার পথে, তখনই ফের হানা দিয়েছে করোনার নয়া স্ট্রেন ওমিক্রন। করোনার দুটি ঢেউয়ে দুবছর ধরে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই। ওমিক্রনের দরুন কি আরও একবার ভয়াবহ আক্রমণ হানবে করোনা? শুনে নেওয়া যাক, কী বলছেন বিজ্ঞানীরা।
দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রনের থাবা। দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছে সকলের মনেই। কতখানি ভয়াবহ হতে পারে করোনার নয়া স্ট্রেন? ওমিক্রনের হাত ধরেই কি ফের আছড়ে পড়বে করোনার তৃতীয় ঢেউ? শোনা যাচ্ছিল এমন আশঙ্কার কথাও। সম্প্রতি সেই প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়া গেল বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে। কী বললেন তাঁরা?
আরও শুনুন: গলা ব্যথা, দুর্বলতা… আর কী কী লক্ষণ দেখা যাচ্ছে ওমিক্রন আক্রান্তদের?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আমেরিকার সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সূত্রে খবর, করোনা ভাইরাসের অন্যান্য স্ট্রেনের থেকে বেশি ভয়ংকর নয় এই নয়া ভ্যারিয়েন্টটি। এমনকি করোনার সেকেন্ড ওয়েভের জন্য দায়ী স্ট্রেন ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রন কম ক্ষতিকর বলেই মত বিজ্ঞানীদের। তার মানে অবশ্য এই নয় যে এই স্ট্রেন একেবারেই নিরীহ। বরং ডেল্টার থেকেও দ্রুত সংক্রমিত হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ওমিক্রনের। তবে টিকাকরণের দৌলতে পাওয়া অনাক্রম্যতাকে পুরোপুরি এড়িয়ে যেতে পারবে না ওমিক্রন। সেই কারণেই টিকাকরণের উপর বারবার জোর দিচ্ছেন বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকেরা।
আরও শুনুন: থাবা বসাচ্ছে ওমিক্রন, টিকা নেওয়া থাকলে কি কমবে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি?
ডেল্টার তুলনায় এর মারণক্ষমতা যে কম, তার প্রমাণ মিলেছে ইতিমধ্যেই। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ ও নমুনা পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন তাঁরা। ডেল্টার সময় আক্রান্তের সংখ্যা এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা ছিল কাছাকাছি। কিন্তু এবার ওমিক্রন সংক্রমণের পরেও দক্ষিণ আফ্রিকায় অধিকাংশ আক্রান্তের হাসপাতালে যাওয়ার দরকার পড়েনি। এমনকি স্বাদ গন্ধ হারিয়ে ফেলার মতো উপসর্গ বা শ্বাসকষ্টের লক্ষণও দেখা যায়নি তাঁদের মধ্যে। হু-এর মতামতের সপক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী অ্যান্টনি ফসি-ও। তবে তিনি এ কথাও বলেছেন, আক্রান্তদের বড় একটা অংশই ছিল অল্পবয়সি। সে কারণেই তারা রোগের মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে এমনটাও হতে পারে। অনেক সময় রোগের ভয়াবহতা সম্পূর্ণ বুঝতে আরও বেশি সময় লাগে। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার অবকাশ রয়েছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। সেইজন্য কোভিডবিধি মেনে চলায় যাতে ঘাটতি না থাকে, সেই বিষয়ে সতর্ক করতে ভুলছেন না বিজ্ঞানীরা। তবুও, ওমিক্রন যে এখনও পর্যন্ত নতুন করে বিপদসংকেত দিচ্ছে না, এই ঘোষণাতেই সাময়িকভাবে স্বস্তি পেয়েছেন বিশ্ববাসী।