ধর্মগুরুকে পরমাত্মা ঘোষণার আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। কিন্তু এককথায় সেই দাবি নাকচ করে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। এ ব্যাপারে কী যুক্তি দিয়েছেন বিচারপতিরা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সংবিধান অনুযায়ী ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। তাই কোনও নির্দিষ্ট ধর্মগুরুর আরাধনা করবেন সকল দেশবাসী, এমন নির্দেশ দিতে পারে না আদালতও। এই মর্মেই ধর্মগুরু ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে পরমাত্মা ঘোষণার আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশপাশি এহেন দাবি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা রুজু করার দায়ে মামলাকারীর জন্য বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানাও ধার্য করেছে শীর্ষ আদালত।
আরও শুনুন: বাড়ির নিচে পোঁতা ১০০ দেহ, অভিযোগে বাড়ির উঠোন খুঁড়ল যোগীরাজ্যের পুলিশ
সম্প্রতি নিজের ধর্মগুরু অনুকূল ঠাকুরকে ‘পরমাত্মা’ হিসাবে ঘোষণা করার আরজি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন জনৈক অনুগামী। মামলার শুনানিতে ধর্মগুরুর মাহাত্ম্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওই ব্যক্তির করা মামলাটি এককথায় খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি এম আর শাহ এবং বিচারপতি সি টি রবিকুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের সাফ বক্তব্য, মামলাকারী চাইলে তাঁর গুরুকে পরমাত্মা বলে মানতেই পারেন, কিন্তু দেশের সকল মানুষকে সে কথা মেনে নেওয়ার জন্য তিনি জোর করতে পারেন না। শীর্ষ আদালত আরও বলেছে, ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, যেখানে যে কোনও ব্যক্তির তাঁর বিশ্বাস মাফিক ধর্মাচরণের স্বাধীনতা রয়েছে। সেখানে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের কোনও ধর্মগুরুকে পরমাত্মা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া আদালতের পক্ষে সম্ভব নয়।
আরও শুনুন: মৌলবাদ শেখাচ্ছেন মুসলিম শিক্ষকেরা! এবিভিপি-র অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত ৬ শিক্ষক
বস্তুত এহেন দাবি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করা যায় না, এমনটাই মত দেশের শীর্ষ আদালতের। মামলাকারীকে কার্যত ভর্ৎসনা করেই বিচারপতিরা বলেছেন, “এর পর এই ধরনের মামলা করার আগে অন্যরা চার বার ভাববেন।” শুধু তাই নয়, ওই মামলারীর এক লক্ষ টাকার আর্থিক জরিমানাও করেছে সুপ্রিম কোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে এই জরিমানা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার সূত্রে আরও একবার দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার শর্তটিই সকলকে মনে করিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।