মুছে ফেলা হচ্ছে মহাত্মা গান্ধীকে। তাঁর দর্শন, তাঁর স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলিকেও। আক্রমণের মুখে পড়ছে গান্ধীপন্থী কর্মকাণ্ড। সম্প্রতি এই অভিযোগ তুলে খোদ জো বাইডেনের দ্বারস্থ হল গান্ধীবাদী সংগঠন। ঠিক কী তাদের অভিযোগ? আসুন শুনে নিই।
একদিকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। অন্যদিকে ধারাবাহিক ভাবে মুছে দেওয়া হচ্ছে তাঁর স্মৃতি। মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে এই মুহূর্তে দেশে যেন এক অদ্ভুত সংকট। আক্রান্ত হচ্ছে গান্ধীর দর্শন। শুধু তাই-ই নয়, তাঁর স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলিকেও ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলেই খোদ জো বাইডেনের কাছে চিঠি দিল ‘সর্ব সেবা সংঘ’। গান্ধীপন্থী এই সমাজসেবী সংগঠন জি-২০-তে অংশ নেওয়া সমস্ত নেতাকেই এই পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করতে চান। বাইডেনের মতো অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানদেরও তাই সার্বিক এই সংকট খোলাখুলিই জানানো হয়েছে।
আরও শুনুন: মুসলিম-বিদ্বেষের কারণে ঠকছেন হিন্দুরাই! কেন এমন দাবি মৌলানার?
কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে জি-২০ সম্মেলন। বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রপ্রধানরা সেখানে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁরা জাতির জনককে শ্রদ্ধাও জানান। সঙ্গে ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অর্থাৎ আজও যে দেশ মহাত্মাকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে থাকে, এমনটাই জানে গোটা বিশ্ব। তবে, এই সংগঠনের দাবি, এর একটা উলটো দিকও আছে। যেখানে ধারাবাহিক ভাবে মুছে ফেলা হচ্ছে মহাত্মাকে। একদিকে তাঁর দর্শন পড়ছে আক্রমণের মুখে। অন্যদিকে তাঁর স্মৃতিও মুছে দেওয়া হচ্ছে। গান্ধীপন্থী সংগঠনগুলিকেও কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে তাদের অভিযোগ। এই সংগঠনও সেরকমই বাধার মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ। উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে দাবি করা হয়, যে জমির উপর এই সংগঠন দাঁড়িয়ে আছে, তা আসলে রেলের জমি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে সংগঠন। তবে, গত আগস্টে বুলডোজার পাঠিয়ে সংগঠনের বেশ কয়েকটি ভবন ভেঙে দেওয়া হয়। তা ছাড়া প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ বইপত্র খোলা মাঠে ফেলে দেওয়া হয়। একই ভাবে গুজরাটের গান্ধী আশ্রমের ঐতিহ্যও ধুলোয় মেশানো হচ্ছে বলে চিঠিতে অভিযোগ জানিয়েছে এই সংগঠন। সংগঠনের সাফ কথা, ধারাবাহিক ভাবে মুছে ফেলা হচ্ছে মহাত্মাকে। আর তা হচ্ছে যোগীরাজ্যের প্রত্যক্ষ মদতেই। আর তাই যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গিয়ে মহাত্মাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, তাঁদের জানা উচিত যে এ-দেশে মহাত্মাকে আসলে কীভাবে দেখা হচ্ছে। সেই বাস্তবতা তুলে ধরতেই বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতাদের চিঠি দিয়েছে এই সংগঠন।
আরও শুনুন: যাত্রা থামল পুরোনো সংসদ ভবনের, এবার কী পরিণতি হবে এই ভবনের?
গান্ধীকে শ্রদ্ধা জানালেও, তাঁর কর্মকাণ্ড ও দর্শন যে ক্রমশ নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে, এই অভিযোগে সরব হন বহু মানুষই। সেই অভিযোগের সুরেই সুর মিলল এই সংগঠনেরও। সামনে ২ অক্টোবর। জন্মতিথির আগে গান্ধীর দর্শন ও কাজ কি আরও ক্ষতির মুখে পড়বে? সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এই চিঠির নিরিখে সেই প্রশ্ন যেন আরও জেগে উঠল।