সমলিঙ্গ বিয়ের দাবিতে সরব হয়েছেন সমকামী যুগলেরা। এই ইস্যুতে বেশ কয়েকদিন ধরেই মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে, চলছে নানা মতের চাপানউতোর। এর মধ্যেই সমলিঙ্গ বিয়েকে মান্যতা দেয় না বেদ, এই মর্মে তোপ দাগলেন এক হিন্দু ধর্মগুরু। তাঁর মতে, এহেন বিয়ে মানবসভ্যতাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। সুপ্রিম কোর্টের যাতে সমলিঙ্গ বিয়েতে সায় না দেয়, এই দাবিতে জোর সওয়াল করেছেন ওই হিন্দুত্ববাদী গুরু। ঠিক কী বলেছেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সমলিঙ্গ বিয়ে হিন্দু ধর্মের পরিপন্থী। এর মাধ্যমে বিয়ের মতো পবিত্র অনুষ্ঠানকে অপমান করা হয়। তাই কোনওভাবেই এই বিয়ে যেন আইনি স্বীকৃতি না পায়। সম্প্রতি দেশের সুপ্রিম বিচারপতির কাছে এমনই আর্জি জানিয়েছেন হরিদ্বারের ধর্মগুরু স্বামী অবধেশানন্দ। দেশের শীর্ষ আদালতের বিচারপতির উদ্দেশে করা টুইটে সমলিঙ্গের বিয়ের বিপক্ষে জোরদার সওয়াল করেছেন এই ধর্মগুরু। সমলিঙ্গ বিয়ের দাবিতে যখন সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে, সেই সময়েই ওই ধর্মগুরুর এহেন দাবিতে বিতর্ক উসকে উঠল আরও।
আরও শুনুন: ফের বিতর্কে দিল্লি মেট্রো! এবার চলন্ত মেট্রোয় প্রকাশ্যে হস্তমৈথুন, উদ্বিগ্ন মহিলা কমিশন
সমলিঙ্গ বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি নতুন নয়। তবে সম্প্রতি এই বিষয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে শীর্ষ আদালতে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা সমলিঙ্গ যুগলরা নিজেদের অধিকারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। সমলিঙ্গ বিবাহকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক, এই মর্মে ইতিমধ্যেই প্রধান বিচারপতির কাছে আরজি জানিয়ে চিঠি লিখেছেন ৪০০ জন সমকামী ও রূপান্তরকামী মানুষের মা-বাবা। যদিও এই ইস্যুতে কেন্দ্রের মনোভাব এখনও ইতিবাচক নয়। সমলিঙ্গ বিয়ের বিরোধিতা করে মুখ খুলেছেন একাধিক বিজেপি নেতা। এমনকি শুনানি শুরুর আগেই কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছিল, সমকামী বিবাহ বিষয়টি নেহাতই শহুরে ধ্যানধারণার প্রতিফলন, গ্রামীণ ভারতীয় সভ্যতার সঙ্গে তা খাপ খায় না। আর এবার একেবারে বেদের প্রসঙ্গ টেনে এই ইস্যুতে বিরোধিতা জানালেন হরিদ্বারের ধর্মগুরু।
আরও শুনুন: যন্ত্রণার দৃশ্য! শহিদ জওয়ানের চিতার উপর শুয়ে পড়লেন স্ত্রী, কেঁদে আকুল গোটা গ্রাম
ওই ধর্মগুরুর সাফ দাবি, সমলিঙ্গ বিয়ে বেদ বিরোধী। তিনি বলেছেন, ভারতবর্ষ বৈদিক সংস্কৃতির দেশ। সেখানে বিয়ে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আচার। তাঁর মতে, বিয়ে হল দুই পরিবারকে এক করার উৎসব। এর আসল উদ্দেশ্য, সেই পরিবারে নতুন প্রজন্ম নিয়ে আসা, সমাজের জনসংখ্যা বাড়ানো। সেক্ষেত্রে একজন নারী ও পুরুষের মিলনকেই সঙ্গত বলে মনে করেন তিনি। সমলিঙ্গ বিয়ের ফলে কখনই নতুন প্রজন্মের জন্ম হওয়া সম্ভব নয়। তাই এই বিয়ে আইনি স্বীকৃতি পেলে তা মানবসভ্যতাকে সংকটের মুখে ফেলবে, এমনটাই মত ওই ধর্মগুরুর। আসলে পিতৃতান্ত্রিক সভ্যতায় একসময় বলা হত, পুত্রার্থে ক্রিয়তে ভার্যা। অর্থাৎ, সন্তানের জন্যই স্ত্রীর প্রয়োজন। সেই কথা টেনেই এবার সমলিঙ্গ বিয়ের বিরোধিতা করে বসলেন হিন্দু ধর্মগুরু।