গুপ্তচরদের কাজ সহজ নয় মোটেও। নিজের আসল পরিচয় লুকিয়ে ফেলে শত্রুপক্ষের গোপন তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার কাজে পদে পদে আছে মৃত্যুভয়। তাই গুপ্তচরদের দেওয়া হয় অন্যরকম প্রশিক্ষণ। আর সেই খাতিরে প্রয়োজনমতো শেখানো হয় যৌনতার কলাকৌশলও। সম্প্রতি রাশিয়ার জনৈক প্রাক্তন গুপ্তচর সরাসরি স্বীকার করলেন সে-কথা। যৌনতার ফাঁদ পেতে শত্রুকে ঘায়েল করার কায়দা শিখে নিতে হত তাঁদের, ফাঁস করলেন তিনি।
তাঁরাও সৈনিক। দেশের প্রয়োজনেই জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে নানা মিশনে শামিল হন। তবে, তাঁদের কাজের ধরনটা আলাদা। কেননা তাঁরা গুপ্তচর। যেহেতু গোড়াতেই গুপ্ত কথাটা আছে, তাই সবার আগে শিখে ফেলতে হয় নিজেকে লুকিয়ে ফেলার কৌশল। আর সেক্ষেত্রে হাতিয়ারও হয়ে ওঠে অন্যরকম। প্রথাগত গুলি-বারুদ নিয়ে লড়াই নয় তাঁদের। বেশিরভাগ সময়েই তাঁদের লড়তে হয় মানুষের আদিম প্রবৃত্তিকে হাতিয়ার করে। হ্যাঁ যৌনতাই হয়ে ওঠে শত্রুকে ঘায়েল করার মোক্ষম অস্ত্র। আর তার জন্য নিতে হয় বিশেষ প্রশিক্ষণও। সম্প্রতি সেই কথা সরাসরি স্বীকার করলেন প্রাক্তন রাশিয়ান গুপ্তচর আলিয়া রোজা।
আরও শুনুন: যোগ দিতে চান সেনাবাহিনীতে, চাকরি শেষে রোজ ১০ কিমি দৌড়ে প্র্যাকটিস তরুণের
বর্তমানে তাঁর বয়স ৩৭। এখন আর তিনি গুপ্তচরের কাজ করেন না। একসময় পুতিন জমানাতেই গুপ্তচর হওয়ার প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। বয়স তখন তাঁর ১৮। প্রশিক্ষণে অন্যান্য বিদ্যা শেখানোর পাশাপাশি তাকে শেখানো হয়েছিল দুরন্ত যৌনতার কায়দা। আলিয়া বলছেন, ‘সেক্স টেকনিক’ আয়ত্ত হলে সহজেই শত্রুকে বশ করা যায়। নিজের রূপ, সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে প্রথমে ফাঁদ পাততে হয়। যাতে সেই ফাঁদে পা দেয় শত্রুপক্ষের হোমরাচোমরা কেউ। কিন্তু সেটুকুই সব নয়। কেউ একজন রূপের মোহে আটকে পড়লেন মানেই তিনি কোনও গোপন তথ্য সেই রূপবতী মহিলাকে জানিয়ে দেবেন, তা হতে পারে না। আর এখানেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যৌনতা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলিয়া জানিয়েছেন, যার থেকে তথ্য আদায় করতে হবে, ক্রমশ তার ভালোবাসার মানুষ হয়ে উঠতে হবে। অর্থাৎ সেই ভান করতে হবে। কিন্তু তা হওয়া চাই নিখুঁত। কোথাও যেন সন্দেহের বিন্দুমাত্র অবকাশ না থাকে। ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই এসে যায় যৌনতার প্রসঙ্গ। কিন্তু তা-ও যেমন তেমন হলে হবে না। একজন ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে যৌনতা যেমন হয়, এক্ষেত্রেও সেই নিখুঁত যৌনতায় লিপ্ত হতে হয়। তা একদিনে কারোর পক্ষে রপ্ত করা সম্ভব নয়। আর তাই এর জন্য তাঁদের আলাদা করে দেওয়া হত প্রশিক্ষণ। অর্থাৎ শিখিয়ে দেওয়া হত দুরন্ত যৌনতার কায়দাকানুন, যার পরে টার্গেট বা শত্রুপক্ষের ব্যক্তিটির আর টুঁ শব্দ করার জো থাকে না। আর এইরকম যৌনতার পরেই, দুর্বল মুহূর্তে টার্গেটে সফল আঘাত হানেন গুপ্তচর। অর্থাৎ, ভালোবাসার মানুষ হয়ে উঠে, যৌনতার মাধ্যমে টার্গেটের বিশ্বাস আদায় করেই একজন গুপ্তচর তার প্রয়োজনীয় তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে। তাই গুপ্তচর বিদ্যায় তাঁদের আবশ্যিক ভাবেই দেওয়া হত যৌনতার পাঠ, জানিয়েছেন আলিয়া।
আরও শুনুন: উচ্চতা ৬ ফুট ৯ ইঞ্চি, তাতেই বেসামাল পুরুষসঙ্গীরা! আজব সমস্যায় বিশ্বের সবথেকে লম্বা মডেল
তবে যৌনতাতেও যে শেষরক্ষা হয়, এমনটা নয়। আলিয়ার নিজের জীবনেই ঘটেছিল সেই ঘটনা। একটি মিশনে শামিল হয়েছিলেন তিনি। নিজের টার্গেটকে বশও করেছিলেন। শেষমেশ তবু তাঁর পরিচয় ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। কোনক্রমে প্রাণে বেঁচেছিলেন। তারপরই গুপ্তচরবৃত্তি ছেড়ে তিনি স্বাভাবিক জীবনযাপনকে বেছে নেন। অবশ্য এটিও তাঁর ছদ্মবেশ কি-না তা অবশ্য কেউই জানেন না। তবে মহিলা গুপ্তচরদের নিয়ে আলিয়ার এই বয়ান একটা ব্যাপার স্পষ্ট করে দিয়েছে। বিশ্বের একাধিক সিনেমাতেও দেখা গিয়েছে, মহিলা গুপ্তচরদের প্রধান দুটি অস্ত্র হয়ে দাঁড়ায়, তাঁদের শরীর আর যৌনতার কৌশল। অনেক সময়ই তা অতিরঞ্জিত বলে মনে হয় দর্শকের। আলিয়ার বয়ান অবশ্য সেইসব সিনেকাহিনিকে স্বীকৃতিই দিল।