অযোধ্যার মন্দিরে প্রতিষ্ঠা হবে রামলালার মূর্তি। ওইদিন মসজিদ-দরগাতেও উঠুক ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। সম্প্রতি নিজের এই ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন আরএসএস নেতা ইন্দ্রেশ কুমার। নেপথ্যে বিশেষ যুক্তিও দিয়েছেন তিনি। ঠিক কী বলেছেন? আসুন শুনে নিই।
লোকসভা ভোটের আগেই অযোধ্যার রাম মন্দিরে প্রতিষ্ঠা হবে রাম লালার মূর্তি। ওইদিন দেশজুড়ে ওকাল দীপাবলির ডাক দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেই প্রসঙ্গ ধরেই সংঘ নেতার দাবি, দেশের সর্বত্র ওইদিন ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিতে ভরে উঠুক। স্রেফ হিন্দুরা নয়, রাম নাম জপে শামিল হন মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলেই।
আরও শুনুন: পুলওয়ামা হামলার মতোই রামমন্দিরও রাজনীতির চাল, বিস্ফোরক কর্নাটকের মন্ত্রী
সব ঠিক থাকলে, আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার মন্দির উদ্বোধন। তার জন্য ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিশেষ প্রস্তুতি। মন্দির উদ্বোধনকে সামনে রেখে অযোধ্যায় একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। উদ্বোধন হয়েছে নতুন বিমানবন্দরও। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, এইসব কিছুই হচ্ছে লোকসভা ভোটের তাগিদে। বিরোধীদের অনেকে সরাসরি এই মন্দির উদ্বোধনকে রাজনৈতিক চাল বলে দাগিয়েছেন। যদিও গেরুয়া শিবির সেসব নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাতে নারাজ। অন্তত তাঁদের কার্যকলাপ সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। সেইসঙ্গে রয়েছে আরএসএস-ও। গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রাম মন্দির নির্মাণ ঘিরে একাধিক কর্মসূচি পালন করেছেন সংঘ নেতারা। দেশের প্রতিটি রাজ্য, এমনকি জেলা স্তরেও এই নিয়ে যথেষ্ট তৎপরতা লক্ষ করা গিয়েছে। যা দেখে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, এইভাবে গোটা দেশে রাম মন্দির নিয়ে বিশেষ উন্মাদনা তৈরি করা হচ্ছে। সম্প্রতি সংঘ নেতা ইন্দ্রাশ কুমারের কথাতেও ধরা পড়ল সেই ইঙ্গিত। তাঁর দাবি, রাম মন্দিরে মূর্তি প্রতিষ্ঠার শুভক্ষণে গোটা দেশে রাম নামে জয়ধ্বনি পড়ুক। মুসলিমরা মসজিদ কিংবা দরগায় গিয়েও এইদিন অন্তত ১১ বার রামের নাম জপ করুন, এমনটাই চেয়েছেন ওই সংঘ নেতা। স্রেফ মুসলিম নয়, তাঁর এই অনুরোধ শিখ, খ্রিস্টান সকলের কাছেই রেখেছেন তিনি। যে যার নিজের উপাসনা স্থলে কিংবা বাড়িতে রাম নাম জপ করুন, এমনই নিদান দিয়েছেন সংঘ নেতা। স্রেফ খেয়াল রাখতে হবে সময়টা। রাম মন্দির তরফে জানা গিয়েছিল, ২২ তারিখ দুপুর ১১ টা থেকে ২ অবধি রামলালা প্রতিষ্ঠার শুভ মহরত। ইন্দ্রেশ চেয়েছেন ওই সময়ের মধ্যে অন্তত রাম নাম জপ করতে হবে।
আরও শুনুন: রাম মন্দিরের গর্ভগৃহে রামলালা আছেন, তবে পাশে নেই সীতা! কিন্তু কেন?
এমন দাবির নেপথ্যে বিশেষ যুক্তিও দিয়েছেন ইন্দ্রেশ। কিছুদিন আগে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা বলেছিলেন, ভগবান রাম শুধু হিন্দুদের নন, গোটা বিশ্বের সকলের। এই সুরে সুর মিলিয়েছেন সংঘ নেতাও। তাঁর সাফ দাবি, ভারতে বসবাসকারী হিন্দু-মুসলিমদের পূর্বপুরুষ একই ছিলেন। পরে অনেকের ধর্ম পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু দেশ একই রয়েছে। সংঘ নেতার কথায়, রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা গোটা দেশের জাতীয় অনুষ্ঠান। তাই এতে সরাসরি না পারলেও, নিজেদের মতো করে অংশ নেওয়া উচিত সকলের। এতেই দেশে শান্তি আর সৌভ্রাতৃত্বের আবহ বজায় থাকবে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অকাল দীপাবলি পালনের কথাও মনে করিয়ে দেন সংঘ নেতা ইন্দ্রেশ।