লাভ জিহাদের অভিনব অভিযোগ এবার উঠল রাজস্থানে। শিক্ষক নয়, শিক্ষিকার সঙ্গেই পালিয়ে গিয়েছে এক ছাত্রী। আর তাতেই উঠেছে ধর্মান্তরণের অভিযোগ। ঘটনায় কী বলছে পুলিশ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
প্রেম ধর্ম মানে না। মানে না লিঙ্গের পরিচয়ও। আর তাই এবার অভিনব এক লাভ জিহাদের অভিযোগ উঠল রাজস্থানের বিকানিরে। জনৈক মুসলিম স্কুল শিক্ষিকার সঙ্গে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল। আর তার সঙ্গেই জড়িয়ে গেল লাভ জিহাদের অভিযোগ।
আরও শুনুন: মদ্যপ হয়ে শিবাজি মূর্তির কাছে প্রস্রাব! মুসলিম যুবককে অর্ধনগ্ন করে সাজা, তুঙ্গে বিতর্ক
জানা গিয়েছে, পলাতক ছাত্রী ক্লাস টুয়েলভে পড়ত। বয়স ১৭। আচমকাই একদিন বাড়ি না ফেরায় চিন্তিত হয় পড়ে তার পরিবারের সদস্যরা। খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, যে স্কুলে ছাত্রীটি পড়ত, সে স্কুলের এক শিক্ষিকাও নিখোঁজ। এরপরই ধরে নেওয়া হয় যে, ওই শিক্ষিকার সঙ্গেই চম্পট দিয়েছে ছাত্রীটি। সাধারণত শিক্ষক-ছাত্রীর সম্পর্কের কথাই প্রকাশ্যে আসে। তবে এই ক্ষেত্রে ঘটনা বেশ অন্যরকমই। পলাতক দুজনের মধ্যে ভালবাসা বা প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলেই কানাঘুষো শোনা যেতে থাকে। ফলে এর মধ্যে লাভ জিহাদের প্রসঙ্গও ঢুকে পড়ে। অভিযোগ যে, মুসলিম ওই শিক্ষিকা ভালবাসার নামে ছাত্রীটিকে নিয়ে পালিয়েছেন ধর্মান্তরণের উদ্দেশ্যেই। এদিকে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে নাবালিকা অপহরণের অভিযোগে সরব হয়েছে পরিবার।
আরও শুনুন: গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর সামনে বাধা তাঁর ভক্তরাই! কোথায় সমস্যায় পড়ছেন স্বয়ং মোদি?
পরিবারের সদস্যদের দাবি, ধর্ম পালটানোর জন্যই নাবালিকা ওই ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। এই মর্মে পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের করেছে তারা। শিক্ষিকার ধর্মপরিচয়ই ঘটনায় অন্য মাত্রা যোগ করেছে। এদিকে ঘটনার খবর চাউর হওয়া মাত্র আসরে নেমেছে দক্ষিণপন্থী সংগঠন। তাদের অভিযোগ, এক্ষেত্রেও একই রকম ভাবে প্রেমকে সামনে রেখে জোর করে ধর্ম পালটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত দুজনেই মহিলা বলে একে লাভ জিহাদ না বলার কোনও কারণ দেখছেন না ওই সংগঠনের সদস্যরা। শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবিতে সরব তারা। একদিকে অপহরণ করে ধর্ম পালটানোর অভিযোগ, অন্যদিকে লাভ জিহাদের দাবি। দুইয়ে মিলে পরিস্থিতি বেশ ঘোরালোই। আসরে নেমে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশও। সবার আগে নাবালিকাকে উদ্ধার করা তাঁদের প্রথম লক্ষ্য। পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, এই শিক্ষিকার সঙ্গে ছাত্রীটির যে অন্যরকম সম্পর্ক ছিল, তা তাঁদের কানে এসেছে। তবে, এই ঘটনাকে লাভ জিহাদ বলা যাবে কি-না, তা তদন্তসাপেক্ষ। পুরো বিষটির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য একাধিক দল তৈরি করেছে পুলিশ। কয়েকটি দলে ভাগ হয়েই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন তাঁরা। নাবালিকাকে উদ্ধার করে ওই শিক্ষিকার খোঁজ পাওয়া গেলেই সম্পর্কের দিকটি স্পষ্ট হবে। লাভ জিহাদের অভিযোগ প্রায়শই ওঠে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। আপত্তি যাই থাকুক না কেন, এই সব অভিযোগ স্পষ্টতই জানিয়ে দেয় যে, ভালবাসা ধর্মের গণ্ডি মানে না। এবার দেখা গেল, তা শুধু ধর্ম নয়,লিঙ্গপরিচয়ের গণ্ডিতেও আবদ্ধ নয়। পুলিশ যদি শিক্ষিকা ও ছাত্রীর সম্পর্কের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়, তবে এই ঘটনা যে বেশ অন্যরকম, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।