জাহাঙ্গিরপুরী কাণ্ডের সূত্র টেনে ফের বিতর্ক উসকে দিল আরএসএস-এর ইংরেজি মুখপত্র ‘অর্গানাইজার’। জানাল, এই ধরনের ঘটনায় বিপন্ন হয়ে পড়ছে ভারতের মৌলিক ধারণাটিই। এই সংকটের সমাধান করা যায় কীভাবে, সে উপায়ও বাতলে দিয়েছে পত্রিকাটি। ঠিক কী বলা হয়েছে সেখানে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ভারত বলতে যা কিছু মনে হয়, অর্থাৎ ‘ভারত’ নামে দেশের যে ধারণাটি রয়েছে, তা-ই আজ বিপন্ন। এমনটাই মনে করে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ইংরেজি মুখপত্র ‘অর্গানাইজার’। জাহাঙ্গিরপুরী কাণ্ডের সূত্র ধরেই সম্প্রতি এহেন মন্তব্য করেছে এই পত্রিকা।
আরও শুনুন: হিংসা নয় চাই সম্প্রীতি, জাহাঙ্গিরপুরীতে জাতীয় পতাকা হাতে একযোগে মিছিল হিন্দু-মুসলমানদের
হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরী। এই পরিস্থিতির মধ্যেই আবার ওই এলাকায় বেআইনি দখল উচ্ছেদ করতে পুলিশ পাঠায় উত্তর দিল্লি পুরনিগম। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের পরও বুলডোজার দিয়ে একাধিক ঘরবাড়ি, দোকান ভেঙে ফেলা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা ভিন্ন মাত্রা পায় ওই অঞ্চলে। এবার সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনেই বিতর্ক উসকে দিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ তথা আরএসএস-এর ইংরেজি মুখপত্র ‘অর্গানাইজার’।
আরও শুনুন: ধর্মস্থান থেকে সরাতে হবে বেআইনি লাউডস্পিকার, কড়া নির্দেশ যোগী সরকারের
ঠিক কী বলা হয়েছে ওই পত্রিকায়?
পত্রিকার সম্পাদকীয় কলামে লেখা হয়েছে, পাকিস্তান তৈরি হওয়ার আগে জাতীয় কংগ্রেস মনে করেছিল, ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা আদায় করতে গেলে সেই লড়াইয়ে মুসলিমদের সঙ্গে নিতেই হবে। একে ‘মুসলিম তোষণ’ বলে চিহ্নিত করতে চেয়েছে ওই পত্রিকা। উপরন্তু দাবি করেছে, সেই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে স্বাধীনতার পরেও, আর তারই নয়া নজির জাহাঙ্গিরপুরীর ঘটনা। যদিও হিংসা ছড়ানোর ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা করে কড়া বার্তা দিয়েছে সরকার, কিন্তু তাতে আদৌ সন্তুষ্ট নয় এই পত্রিকা। বরং হিংসা ছড়ানোর ঘটনায় মুসলিমদের দিকেই আঙুল তাদের। পাশাপাশি বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের, বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের দিকেও কড়া নজরদারি চালানোর কথা বলা হয়েছে।
পত্রিকাটির মতে, এ জাতীয় ঘটনায় হিন্দুদের দিক থেকে উসকানির যে খবর মেলে, তা আসলে ভুয়ো। অপর পক্ষের হিংসাত্মক কাজকর্মকে আড়াল করার জন্যই এসব খবরের আমদানি হয় বলে সাফ দাবি করা হয়েছে আরএসএস-এর মুখপত্রে। তার জন্য বুদ্ধিজীবী এবং সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছে এই পত্রিকা। আর এসব কারণেই ‘ভারত’ নামে রাষ্ট্রের ধারণা বিপন্ন হয়ে পড়ছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই সম্পাদকীয় কলামে। এর জন্য অপরাধীদের আড়াল করা এবং বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রবণতাকেই দায়ী করেছে ওই পত্রিকা। এমনকি এর সমাধানের উপায়ও বাতলে দিয়েছে তারাই। জানিয়েছে, ভারতের সুরক্ষার জন্য এই জাতীয় মনোভাবকে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে হবে। হিংসায় অভিযুক্তদের জন্যে এমন কড়া ব্যবস্থাই একমাত্র কার্যকরী হতে পারে, উত্তরপ্রদেশের দৃষ্টান্ত টেনে এই মতই প্রকাশ করেছে আরএসএস-এর মুখপত্র।