ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হোক বা প্যান কার্ড, সবকিছুর সঙ্গেই আধার কার্ড যোগ বাধ্যতামূলক। একই নিয়ম মানতে হয় নতুন সিম কার্ড কেনার ক্ষেত্রেও। তবে সম্প্রতি সেই ব্যবস্থাতেই ধরা পড়েছে এক অদ্ভুত জালিয়াতি। একই আধার কার্ড ব্যবহার করে কেনা হয়েছে ৬৫৬ টি সিমকার্ড। না বুঝে আপনিও কি জড়িয়ে পরছেন এই চক্রান্তে? কীভাবে সুরক্ষিত থাকবেন? আসুন শুনে নিই।
এক আধার কার্ড ব্যবহার করে একাধিক সিম কার্ড কেনা। এ কোনও নতুন জালিয়াতি নয়। একই আধার কার্ড ব্যবহার করে ১০০টি সিম কার্ড কেনার ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে। সম্প্রতি সেই সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছেন এক ব্যক্তি। একই আধার যোগে ৬৫৬টি সিম কার্ড কিনেছেন তিনি। ঘটনার কথা জেনে হতবাক পুলিশয়া আধিকারিকরাও।
আরও শুনুন: ছোট হাতে বড় কাজ, নিজের হাতে ৭টি লাইব্রেরি তৈরি করে নজির খুদে বইপোকার
নতুন সিম কার্ড কেনার সময় আধার যোগ বাধ্যতামূলক। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একটা আধার কার্ডে সর্বোচ্চ ৯টি সিম কার্ড কেনা সম্ভব। তার বেশি সিম কার্ড যদি একই আধার কার্ডে যোগ করা হয়, তবে তা মোটেও আইন স্বীকৃত নয়। সম্প্রতি এ বিষয়ে নিরীক্ষণ করতে গিয়েই অদ্ভুত তথ্য উঠে এসেছে সাইবার ক্রাইম বিভাগের হাতে। জানা গিয়েছে, গত চারমাসে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে ১০০-১৫০ টি করে সিম কার্ড একই আধার ব্যবহার করে কেনা হয়েছে। এমনকি একটি আধার কার্ডের সঙ্গে যোগ রয়েছে ৬৫৬টি সিম কার্ড, এমন তথ্যও পুলিশের হাতে এসেছে। যা রীতিমতো আশঙ্কার বলেই মনে করা হচ্ছে। বেআইনি ওই সমস্ত সিমকার্ড ইতিমধ্যেই ব্যান করা হয়েছে। আর সেই সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই কয়েকমাসে মোট ২৫,১৩৫টি সিম ব্যান করা হয়েছে। যেগুলির বেশিরভাগই এক আধারের সঙ্গে যোগ করা।
আরও শুনুন: শুধু ‘ফ্লাইং কিস’ নয়, নানা ভঙ্গি নিয়েই আপত্তি নানা দেশে… কোন দেশে কোন নিয়ম?
তবে সেইসঙ্গে সাধারণ নাগরিকদের আধার কতটা সুরক্ষিত সেই প্রশ্নও ফের মাথাচাড়া দিয়েছে। যদিও ভয়ের কোনও কারণ নেই বলেই জানিয়েছেন টেক বিশেষজ্ঞরা। কারণ, আধার কার্ডের সঙ্গে কতগুলি নাম্বারের যোগ রয়েছে তা সরকারি ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই সহজে জেনে ফেলা সম্ভব। কেন্দ্রের টেলিকম বিভাগের তরফে একটি বিশেষ পোর্টাল চালু করা হয়েছে। সেখানে নিজের মোবাইল নাম্বার দিলেই আধার সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জেনে ফেলা সম্ভব। একই আধারের সঙ্গে কতগুলি মোবাইল নাম্বার যুক্ত রয়েছে সেই সবকিছুই জানিয়ে দেবে ওই বিশেষ পোর্টাল। এর জন্য দরকার হবে স্রেফ ইন্টারনেট সংযোগ। ডিপার্টমেন্ট অফ টেলিকমের সরকারি ওয়েবসাইটে গেলেই, মোবাইল নাম্বার দেওয়ার জায়গা থাকবে। কীভাবে মোবাইল নাম্বার দিতে হবে তার যাবতীয় নির্দেশও সেখানেই লেখা। যে কেউ এই ব্যবস্থার সুবিধা নিতে পারেন। আর সুরক্ষার দিকেও ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ ওয়েবসাইটটি সরকারি। টেক বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা একই আধার কার্ড ব্যবহার করে একাধিক সিম কিনেছেন, বা এমন কোনও জায়গা থেকে সিম কার্ড এনেছেন যেখানে সুরক্ষা নিয়ে কিছুটা ভাবনা থাকতে পারে, তাঁরা যেন অবশ্যই এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজেদের আধার কার্ড ও মোবাইল নাম্বার সংক্রান্ত নথি যাচাই করে নেন।