বাংলাদেশের অন্দরের টালমাটাল পরিস্থিতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভারতবিদ্বেষও। এমনকি ভারতকে আক্রমণ বা দখল করার ডাকও তুলে ফেলেছেন পড়শি দেশের কেউ কেউ। এই পরিস্থিতিতেই এবার বাংলাদেশকে পালটা হুঁশিয়ারি শোনালেন শিব সেনা বিধায়ক।
গণবিক্ষোভে হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে বাংলাদেশ। তবুও অস্থিরতা কমেনি সে দেশে। বাংলাদেশের অন্দরের টালমাটাল পরিস্থিতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভারতবিদ্বেষও। এমনকি ভারতকে আক্রমণ বা দখল করার ডাকও তুলে ফেলেছেন পড়শি দেশের কেউ কেউ। যার প্রতিক্রিয়ায় সরগরম এ দেশের সমাজ, রাজনীতিও। এই পরিস্থিতিতেই এবার বাংলাদেশকে পালটা হুঁশিয়ারি শোনালেন শিব সেনা বিধায়ক। সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘বাংলাদেশকে হারাতে ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় নেবেন না মোদি।’
মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই বাংলাদেশের পাশে ছিল ভারত। বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের কথা তো নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই, মুজিব-কন্যা হাসিনার আমলেও ভারত-বাংলাদেশের সৌহার্দ্য বজায় ছিল পুরো মাত্রায়। কিন্তু বাংলাদেশে ইউনুস সরকারের জমানা শুরু হতেই কার্যত তলানিতে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। তার উপরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন আর ভারতবিদ্বেষের ধোঁয়া ছড়াতেই এ দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বাংলাদেশে যেভাবে হিন্দু নিপীড়নের ঘটনা সামনে এসেছে, বিশেষ করে ইস্কনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তার ও তার পরবর্তী ভয় দেখানোর ঘটনা ঘটেছে, তা এ দেশেও ক্ষোভ-রাগের আঁচ উসকে দিয়েছে। এর মধ্যেই বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনা আধিকারিক বলে বসেছেন চারদিনের মধ্যে কলকাতা দখল করার কথা। ভারতকে বয়কট করা, আক্রমণ করার ডাকও শোনা যাচ্ছে মাঝে মাঝেই। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে মহারাষ্ট্রের এক সভা থেকে সুর চড়ালেন শিব সেনা বিধায়ক নীলেশ রানে।
যদিও গেরুয়া শিবিরের ধাঁচেই হিন্দুত্বের পক্ষে সওয়াল করে মুসলিমদের খোঁচা দিতেও ছাড়েননি ওই নেতা। তাঁর বক্তব্য, হিন্দুদের মাত্র একটিই দেশ আছে, আর তা হল ভারত। নেপালে হিন্দুরা সংখ্যাগুরু হলেও, জনসংখ্যা কম বলেই তা ধর্তব্যে আনছেন না তিনি। কিন্তু বাংলাদেশে হিন্দুদের বাঁচানোর পাশাপাশি এ দেশেও হিন্দুদের রক্ষা করার ডাক দিয়েছেন তিনি। হিন্দুত্ববাদীদের সুরেই তাঁরও বক্তব্য, হিন্দুরা আসলে বিপন্ন। বলাই বাহুল্য, সেই বিপন্নতার কারণ হিসাবে তাঁর নিশানা মুসলিমদের দিকেই। প্রাক্তন বিজেপি নেতা, বর্তমানে শিন্ডে শিবিরের বিধায়ক এমনটাও বলেছেন যে, “মুসলিমদের একাধিক দেশ রয়েছে। আমাদের দেশ পছন্দ না হলে তারা চলে যেতে পারে।” অর্থাৎ, বাংলাদেশের হিন্দুবিদ্বেষের ইস্যুকে টেনে এনে দেশের অন্দরে মুসলিম-বিরোধিতাকেও খানিক উসকেই দিয়েছেন শিব সেনা নেতা।