নোটবন্দি ইস্যুতে ফের উত্তাল গোটা দেশ। ৭ বছর আগে চালু হওয়া ২০০০ টাকার নোট, বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক। এই ইস্যুতে আরও একবার বিরোধীদের নিশানায় মোদি সরকার। কিন্তু আদৌ কি এর জন্য প্রধানমন্ত্রী দায়ী? সেই প্রশ্ন তুলেই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তাঁর প্রাক্তন সচিব। ঠিক কী বলেছেন তিনি? আসুন শুনে নিই।
২০১৬ সালে দেশজুড়ে চালু হয়েছিল ২০০০ টাকার নোট। সাত বছরের মাথায় সেই নোট বাজার থেকে তুলে নিচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এই ইস্যুতে ফের বিরোধীদের নিশানায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অনেকেই এই সিদ্ধান্তের জন্য সম্পূর্ণভাবে মোদিকেই দায়ী করছেন। ফিরে আসছে ২০১৬ সালের নোটবন্দির ভয়াবহ স্মৃতির কথাও। কিন্তু এসবের নেপথ্যে কোনওভাবেই মোদি নেই। বরং তিনি নিজেই চাননি ২০০০-এর নোট চালু হোক। সম্প্রতি এমনই দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন সচিব।
আরও শুনুন: নেহরু চেয়েও পারেননি, মুসলিম ‘বোন’দের জন্য তাই করেছেন মোদি! প্রশংসা কেরলের রাজ্যপালের
অনেকেই মনে করেন ২০১৬ সালের নোটবন্দির সিদ্ধান্ত একেবারেই সঠিক ছিল না। বিশেষত বিরোধী দলগুলো এই ইস্যুতে এখনও মোদি সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়ে না। সেই আবহেই ফের নোট বাতিলের ঘোষণা করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ৭ বছরের মাথায় বাজার থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে ২০০০ টাকার নোট। আর এই সিদ্ধান্তই যেন বিতর্কের আঁচ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বিরোধীরা একযোগে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এই সিদ্ধান্তের জন্য কটাক্ষ করছেন। কিন্তু এহেন বিতর্কের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন সচিব নৃপেন্দ্র মিশ্র। ২০১৬ সালে নোটবন্দির সময় তিনিই প্রধানমন্ত্রীর সচিব ছিলেন। তাই এই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মোদির ব্যক্তিগত অভিমত বলে মানতে নারাজ তিনি। তাঁর দাবি জনগণের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। একইসঙ্গে তিনি এমনটাও জানিয়েছেন, ২০০০-র নোট চালু হোক তা মোদি নিজেও চাননি। বরং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২০০০ টাকার নোট বাজারে আনছে জানার পর প্রধানমন্ত্রী আপত্তিই জানিয়েছিলেন। নৃপেন্দ্র-র দাবি, সেইসময় মোদি বলেছিলেন, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন লেনদেনের জন্য ২০০০ টাকার নোটের প্রয়োজন নেই। কিন্তু ততদিনে টাকা ছাপানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এমনকি বাজারে ২০০০-র নোট চলেও এসেছে। তাই তখন এই নোট বন্ধ করা সম্ভব ছিল না।
আরও শুনুন: শিশুজন্মে শীর্ষে সেই যোগীরাজ্য, রোজ কত হাজার শিশুর জন্ম হয় দেশে?
তবে ২০১৭ সালের শেষ দিকেই নতুন করে ২০০০-র নোট ছাপানো বন্ধ করে দেয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে এতদিনের পুরনো নোটগুলি অচল হওয়ার জোগাড়। তাই আরবিআই-এর ক্লিন নোট নীতি মেনেই ২০০০ টাকার সব নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে। এদিকে বিগত কয়েকবছর ধরেই বাজারে সেই অর্থে ২০০০-র নোট চোখে পড়ে না। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দাবি, এটিএম গুলোতেও মূলত ৫০০ বা ১০০ টাকার নোটই এখন রাখা হয়। তাই ২০১৬ সালের নোটবন্দির মতো অবস্থা এবারে আর হবে না। যারা নিজেদের ব্যক্তিগত সঞ্চয়ে এই নোট রেখেছেন তাঁরা অনায়াসে ব্যাঙ্কে গিয়ে জমা দিয়ে আসতে পারবেন। একসঙ্গে ২০ হাজার টাকা জমা দেওয়া যাবে। সেইসঙ্গে সময়ও দেওয়া হয়েছে যথেষ্টই। এবার কেউ যদি অস্বাভাবিক পরিমাণে ২০০০-র নোট জমা দিতে আসেন, তাহলে তাঁর সঙ্গে কালোটাকার যোগ রয়েছে কি না সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা যাবে। তবে যেভাবে বিরোধীরা এই সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলছেন তা একেবারেই অনুচিত বলে মনে করেছেন তাঁর প্রাক্তন সচিব। তাই সাত বছর আগের ঘটনা মনে করিয়ে মোদির পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন তিনি।