প্রেমের টানে ভারতে আসা পাক বধূকে নিয়ে বিতর্ক ঘোরালো হল আরও। সীমা হায়দার কি আদতে পাকিস্তানের গুপ্তচর? সন্দেহে তৎপর যোগীরাজ্যের সন্ত্রাসদমন শাখা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
প্রেমের টানেই কি পাকিস্তান থেকে ভারতে এসেছেন তিনি? নাকি পাকিস্তানের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করার জন্যই এহেন গল্প? সন্দেহ ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে এ দেশের পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে। প্রেমিকের কাছে ভারতে পালিয়ে আসা সীমা হায়দারকে নিয়ে যেভাবে কখনও বালোচ জঙ্গিদের থেকে হুমকি মিলছে, কখনও আবার ২৬/১১-র মতো হামলার হুমকি পাওয়া যাচ্ছে, তার জেরে ওই তরুণীর পাক যোগ নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। স্রেফ ভারত-পাক তরজা আর হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক বিতর্কের জেরেই কি এহেন হুমকি? নাকি পাকিস্তানের কাছে কোনও কারণে সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ ওই তরুণী? এর নেপথ্যে কি তাহলে পড়শি দেশটির তরফে কোনও গুপ্তচরবৃত্তির ইঙ্গিত রয়েছে? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই তৎপর যোগীরাজ্যের প্রশাসন। ইতিমধ্যেই সীমা হায়দারকে জেরা করছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এটিএস অর্থাৎ সন্ত্রাস দমন শাখা। জানা গিয়েছে, ওই তরুণীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গোপন জায়গায় রেখেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন আধিকারিকেরা।
আরও শুনুন: ‘৭২ ঘণ্টার মধ্যে ছাড়তে হবে ভারত’, গেম-প্রেমের পাক বধূকে হুমকি গো-রক্ষা হিন্দু দলের
অনলাইন গেম খেলার সূত্রে নয়ডার ২২ বছরের তরুণ শচীন মিনার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সীমার। প্রেমের টানে সংসার ছেড়ে শেষ পর্যন্ত প্রেমিকের কাছে চলে আসার ঝুঁকি নেন তিনি। পাসপোর্ট ভিসার পরোয়া না করেই সন্তানদের নিয়ে ভারতে পালিয়ে আসেন সীমা। কিন্তু বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশের জেরে ওই পাক তরুণীকে আটক করেছিল পুলিশ। সম্প্রতি জামিন পেলেও তাঁকে নিয়ে বিতর্ক চলছেই। পাকিস্তান থেকে যেমন ওই তরুণীকে ফিরিয়ে দেওয়ার হুমকি মিলেছে, তেমনই সীমা পাকিস্তানের গুপ্তচর হতে পারেন বলে সন্দেহ করে তাঁকে ভারত ছাড়ার হুমকি দিয়েছে দেশের গো-রক্ষা হিন্দু দল। এই পরিস্থিতিতে ‘নিখোঁজ’ হয়ে গিয়েছিলেন সীমা এবং শচীন। কিন্তু পরে জানা গিয়েছে, বেপাত্তা নন তাঁরা। আসলে ওই যুগলকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে উত্তরপ্রদেশে এটিএস। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত সীমাকে জেরা করে জানা গিয়েছে, তাঁর কাকা পাকিস্তান সেনার সুবেদার ছিলেন। ভাই পাক সেনায় কর্মরত। ফলে ‘চরবৃত্তির’ প্রসঙ্গ আরও জোরালো হতে শুরু করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সীমা সত্যি কথা বলছেন কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য পলিগ্রাফ পরীক্ষারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাঁর মোবাইল ফোনের তথ্য, হোয়াট্সঅ্যাপ কথোপকথন এবং ফোন কল ডিটেল। হাই কমিশনের কাছে তাঁর পরিচয়পত্র পাঠিয়েও খোঁজখবর করা হচ্ছে। তবে এই ইস্যুতে এখনই স্পষ্ট কোনও সিদ্ধান্ত জানাতে নারাজ প্রশাসন।