বিজ্ঞাপনে ভগবানের সঙ্গে নিজেদের তুলনা। সম্প্রতি এমনটাই করেছে ‘ওয়ো’। তাতে চটে লাল হিন্দু সংগঠন। বিষয়টি কেন্দ্র করে রীতিমতো বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ঠিক কী বলা হয়েছে, ওই বিজ্ঞাপনে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
রণে বনে জলে জঙ্গলে… ভগবানের অস্তিত্ব সব জায়গায়। এবং তা টের পেয়েছিলেন ভক্ত প্রহ্লাদ থেকে রামকৃষ্ণ, সকলেই। শুধু পুরাণের গল্প নয়, একথাকে মান্যতা দেয় শাস্ত্রও। আর সেই কথার প্রসঙ্গ ধরেই ওয়োর দাবি, তারাও রয়েছেন সর্বত্র।
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। সম্প্রতি ওই সংস্থার এক বিজ্ঞাপনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। সেখানে বড় বড় হরফে লেখা, ‘ভগবান সব জায়গায় রয়েছে’। নীচে ছোট হরফে লেখা, ‘এবং ওয়ো-ও’। অর্থাৎ সংস্থা বোঝাতে চেয়েছে ভগবানের মতো তারাও সবজায়গায় বিরাজমান। একথা অস্বীকারের উপায় নেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের ব্যবসা ভালমতো ছড়িয়ে দিতে পেরেছে ওয়ো। সকলের কাছেই যথেষ্ট জনপ্রিয় এই নাম। এতদিন কাপল-ফ্রেন্ডলি হিসাবেই এর সুনাম ছিল। অবশ্য অনেকের কাছেই সেটা ছিল বদনাম। তবে নতুন নিয়মে, এই সংস্থা নিজেদের ফ্যামিলি ফ্রেন্ডলি করার চেষ্টা চালিয়েছে। দেশের বিভিন্ন ধর্মস্থানে সংস্থার তরফে হোটেল খোলা হয়েছে। অববাহিতদের হোটেল বুকিং নিয়েও কড়াকড়ি দেখা গিয়েছে। তাতে কারও কোনও আপত্তি ছিল না। যেখানে সরকারের তরফেই স্পিরিচুয়াল ট্যুরিজমকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, সেখানে ধর্মস্থানে ওয়োর হোটেল খোলায় খুশি হয়েছিলেন অনেকেই। বিপত্তি দেখা দিল সেই ভগবানের নাম বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করায়।
এমনিতে বিজ্ঞাপনের কোনো ব্যাকরণ হয় না। তবে কিছু নিয়ম না মানলেই নয়। সেখানে অশ্লীল শব্দ ব্যবহারে যেমন আপত্তি থাকে, তেমনই এমন কিছু লেখা বা আঁকা যায় না, যা অন্য কারও ভাবাবেগে আঘাত দেয়। অথচ এক্ষেত্রে হয়েছে ঠিক তেমনটাই। ভগবানের নাম ব্যবহার করে এই বিজ্ঞাপন মোটেও ভালভাবে নেননি হিন্দুত্ববাদীরা। তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সংস্থার বিরুদ্ধে মামলাও ঠুকেছেন তাঁরা। মোটা টাকা জরিমানার দাবি জানিয়েছেন। এই নিয়ে সংস্থার তরফে কোনও জবাব মেলেনি এখনও। তবে আদালতে বিষয়টি নিয়ে জোর চর্চা হবে তা বলাই যায়।