‘খিদের বালাই বড় খিদের বালাই’ – তবে তা নিয়ে যেন বালাই নেই সরকার থেকে মানবাধিকার সংস্থা কারওরই। মুখে খাবার নেই, ঘোর অপুষ্টিতে ভুগছে দেশের প্রায় ৩৩ লক্ষ শিশু। তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি সংখ্যক শিশুর অবস্থা নাকি আরও গুরুতর। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে নেপাল, পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশের থেকেও পিছিয়ে ভারত। বিশ্বাস না হলেও এ কথা সত্যি। কিন্তু এ নিয়ে আমরা কি ততটা সরব হচ্ছি? আসুন, নিজেদের দিকেই একবার ফিরে তাকাই।
তথ্য জানার অধিকার আইনে একটি আবেদন করেছিল সংবাদ সংস্থা পিটিআই। তারই উত্তর দিতে গিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক জানিয়েছে, অপুষ্টিতে ভুগছে ভারতের ৩৩ লক্ষ শিশু। তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি সংখ্যক শিশু সিভিয়ারলি অ্যাকিউট ম্যালনারিশড বা গুরুতর অপুষ্টির শিকার। অপুষ্টির নিরিখে প্রথম তিনে রয়েছে মহারাষ্ট্র, বিহার এবং খোদ নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাট।
আরও শুনুন: কালো টাকা কি হল ভাল টাকা! নোট বাতিলের ৫ বছর পরে কী দাঁড়াল অবস্থা?
করোনা-আবহে নিম্নবিত্ত থেকে অতিনিম্নবিত্ত পরিবারের বহু শিশুই গুরুতর অপুষ্টির শিকার। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যাটা বেড়েছে প্রায় ৯১ শতাংশ। যা যথেষ্টই উদ্বেগের। গত নভেম্বরে সংখ্যাটা ছিল ৯ লক্ষ ২৭ হাজার ৬০৬, এ বারে তা ছাড়িয়েছে ১৭ লক্ষ। তথ্য বলছে, চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে গুরুতর অপুষ্টির শিকার বা সিভিয়ারলি অ্যাকিউট ম্যালনারিশড অন্তত ১৭ লক্ষ ৯৬ হাজার ৯০২টি শিশু। মাঝারি অপুষ্টিতে ভুগছে ১৫ লক্ষেরও বেশি। মোট ৩৪টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে সংখ্যাটা ৩৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৩২২। কেন্দ্রীয় সরকারেরই ‘পোষণ’ ট্র্যাকার অ্যাপে ধরা পড়েছে এই চিত্র।
আরও শুনুন: রোগ হবার আগেই সারাও… মহামারী ছড়িয়ে পড়ার আগেই এসেছিল কোন ভ্যাকসিন?
২০১৮ সালে পোষণ অভিযান প্রকল্প শুরু হলেও তা যে বিশেষ কাজে আসেনি, তা জানিয়েছে কেন্দ্র খোদ। অতিমারি পরিস্থিতি, টানা লকডাউন- সব মিলিয়ে জীবিকা হারিয়েছেন বহু মানুষ। স্কুল বন্ধ, তাই মিলছে না মিড ডে মিলও। ফলে খাবারই জুটছে না তো পুষ্টি! বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারত এ বছর নেমে এসেছে ১০১তম স্থানে। বিশ্বাস না হলেও, নেপাল, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের থেকেও শিশু-অপুষ্টিতে বেশ কিছুটা পিছিয়ে ভারত। আর এ সব তথ্য সামনে আসার পরে এই সূচকের পরিমাপ পদ্ধতির সারবত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে নয়াদিল্লি।
বাকি অংশ শুনে নিন।