প্রায় রাতারাতি সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিল আফগানিস্তানের এক খুদে। মেসির ভক্ত সে। মেসি লেখা প্লাস্টিকের জার্সি পরে তাই দাঁড়িয়ে সে। সেই ছবিই মন কেড়েছিল সকলের। খোদ মেসিও তাঁর খুদে ভক্তের আবদার পূরণ করেছিলেন। আজ যখন তালিবানের দখলে আফগানভূম, তখন কেমন আছে খুদে মেসি?
ছোট্ট একটি ছেলে। পরনে প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি জার্সি। আর তাতে লেখা মেসি। এই একটি ছবিই রাতারাতি পরিচিত করে তুলেছিল আফগানিস্তানের খুদে মেসিভক্ত মুর্তাজা আহমেদিকে। সেটা ২০১৬ সাল। ইন্টারনেটে ভাইরাল হয় মুর্তাজার ছবি।
খবর গিয়ে একসময় পৌঁছায় খোদ ফুটবলের ঈশ্বরের কানেও। মুর্তাজার দাদা যখন ছবিটি তুলেছিল, তখন বোধহয় ভাবেনি, এমন কাণ্ড ঘটতে পারে। খোদ মেসির প্রাণ কেঁদেছিল এই খুদে ভক্তের জন্য। ইউনিসেফ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি খুদে ফ্যানের জন্য পাঠিয়েছিলেন, জার্সি এবং ফুটবল। সবই স্বাক্ষর করে দিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: যৌনদাসীর জন্য কফিনবন্দি করে মেয়েদের পাচার করছে তালিবান
মেসির সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল খুদে। সেই সাধ পূরণ করতে বার্সার এক ম্যাচে খুদেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আর সেখানেই ফুটবল ঈশ্বরের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তাঁর খুদে ভক্তের।
তারপর বদলে গেছে অনেক কিছু। এখন আফগানিস্তান চলে গিয়েছে তালিবানদের দখলে। আবার ফিরে এসেছে সন্ত্রাস। আর পাঁচ জনের মতোই তাই ভীত মুর্তাজার পরিবার। মেসির সঙ্গে খুদের দেখা হওয়ার ফলে, সকলেই ধরে নিয়েছিল যে মেসি বিরাট অঙ্কের অর্থ উপহার দিয়েছেন খুদের পরিবারকে। আর তাই আগেই তালিবানরা গোটা পরিবারকে কবজা করার হুমকি দিয়ে রেখেছিল।
আরও পড়ুন: তালিবান মেরে ফেললেও মন্দির ছেড়ে পালাতে নারাজ হিন্দু পুরোহিত
পরন্তু কেন কোরান হাতে না নিয়ে মেসি জার্সি হাতে খুদেকে দেখা গিয়েছে, তা নিয়েও রুষ্ট ছিল তালিবানরা। এবার আফগানিস্তান তালিবানের দখলে যেতেই নিজেদের বাসস্থান ছেড়ছে মুর্তাজার পরিবার। এক সংবাদসংস্থাকে মুর্তাজার মা জানিয়েছেন, ‘তালিবানরা আগেও হুমকি দিয়েছিল। তাই এবার আর কোনও ঝুঁকি নিইনি। তালিবানরা মুর্তাজাকে ছিনিয়ে নিয়ে যেতে পারে। সেই ভয়ে ওরা দখল করেছে শুনেই আমরা রাতে আমাদের বাসস্থান ছেড়ে চলে যাই। মুর্তাজার বাবা জানান, তালিবানের ভয়ে তাঁরা এতটাই ভীত যে বর্তমানে তাঁরা পাকিস্তানে চলে গিয়েছেন। সেখানেই আশ্রয় খুঁজছেন।
ছোট্ট মেসি এখন তাঁর স্কুলকে মিস করছে। মন খারাপ বন্ধুদের জন্যও। কিন্তু কবে যে এই সন্ত্রাসের দিন শেষ হবে, সে উত্তর যেন কারও কাছেই নেই।