মন্দির তহবিল দ্বারা পরিচালিত কলেজে চাকরি মিলবে না অ-হিন্দুদের। এবার তেমনই নির্দেশ এলো আদালত থেকে। কী হল, তার ফলাফল? আসুন, শুনে নিই।
মন্দিরের তহবিলে গড়া কলেজ। তাই সেখানে নিয়োগ করা যাবে না হিন্দু ছাড়া অন্য ধর্মের কোনও ব্যক্তিকে। নির্দেশ খোদ আদালতেরই। আর সে নির্দেশের জেরেই উসকে উঠেছে বিতর্ক।
সমস্যার উৎপত্তি যে জায়গাকে ঘিরে, তা হল চেন্নাইয়ের আরুলমিঘু কপালেশ্বর আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স কলেজ। সেই কলেজের একটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অফিস সহকারী হিসেবে আবেদন করেছিলেন এক মুসলিম প্রার্থী। নাকচ করা হয় তাঁর আবেদন। তার জেরে আদালতের দ্বারস্থ হন ব্যক্তি। আর তাতেই বিচারপতির স্পষ্ট রায়। যেখানে সাফ জানানো হয়েছে, বাতিল হবে চাকরি প্রার্থীর আবেদন। কেননা, মন্দির তহবিল ব্যবহার করে তৈরি হওয়া কলেজগুলিতে চাকরি পাওয়ার প্রথম শর্ত হিন্দুত্ব। হিন্দু মন্দিরের দ্বারা পরিচালিত কোনও কলেজে আর চাকরি মিলবে না অন্য ধর্মের প্রার্থীদের। সেখানে চাকরির অনুমতি পেতে হিন্দু হওয়া বাধ্যতামূলক, রায়ে জানিয়েছেন বিচারপতি বিবেক কুমার সিং।
তবে এ কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী চাকরিক্ষেত্রে এমন বৈষম্য নেই। তবে এখানে বিষয়টি অন্য। এই কলেজগুলি সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত নয়। মন্দিরের তহবিলে গড়া কলেজগুলি স্বয়ংশাসিত, তাই এই কলেজগুলির ক্ষেত্রে খাটবে না এই নিয়ম। বরং নিজেদের স্বাধীনভাবে পরিচালনার জন্য নিজস্ব নিয়ম-কানুন তৈরি করার অধিকার রয়েছে তাঁদের হাতে। আর সেই মোতাবেকই অহিন্দুদের নিয়োগ না করার ক্ষেত্রে অনড় কলেজ। কলেজ চায় না হিন্দু ব্যতীত অন্য কোনও ধর্মের ব্যক্তি যোগদান করুন তাদের পরিচালিত কমিটিতে। আবেদনকারীর মামলার বিরোধিতা করতে এখানে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে হিন্দু চ্যারিটেবল এনডাউমেন্টস (এইচআর অ্যান্ড সিই) আইনের রীতি-নীতি। কলেজটি যেহেতু এইচআর অ্যান্ড সিই-র অধীনস্থ, ফলে খারিজ হয়ে গিয়েছে মামলাকারীর আবেদন।
আরও শুনুন: মসজিদে নমাজ পাঠের পর বলতে হবে ‘বন্দেমাতরম’, দাবি হিন্দু ধর্মগুরুর
সর্বধর্মসমন্বয়ের ভারতে বারবার বাজছে ভাঙনের সুর। সেই সুরকেই আরও একটু যেন উসকে দিল মাদ্রাজ হাই কোর্টের সাম্প্রতিক রায়। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে এমন বৈষম্যকে মেনে নিতে অস্বস্তিতে পড়ছেন অনেকেই, এটুকুই ভরসার কথা।