নাচের মণ্ডপে ঢুকতে গেলেও নাকি দেখাতে হবে নিজের পরিচয়পত্র। নবরাত্রির আগে এমনই ফরমান জারি করলেন মধ্যপ্রদেশের এক মন্ত্রী। ‘লাভ জিহাদ’-এর বাড়বাড়ন্ত রুখতেই এহেন পন্থা অবলম্বন করা জরুরি, দাবি করেছেন ওই মন্ত্রী। ঠিক কী ঘটেছে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
রুখতে হবে ‘লাভ জিহাদ’-এর প্রবণতা। বাঁচাতে হবে হিন্দু মেয়েদের। আর সেইজন্যই নবরাত্রির উৎসবে গরবা নাচতে গেলে দেখাতে হবে পরিচয়পত্র। সম্প্রতি এমনই নিদান দিলেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সাংসদ তথা সংস্কৃতি মন্ত্রী ঊষা ঠাকুর। গরবা নাচের মণ্ডপগুলিকে লাভ জিহাদের আখড়া বলেও অভিহিত করলেন তিনি। তাঁর এহেন মন্তব্য ঘিরে বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে উসকে উঠেছে বিতর্ক।
আরও শুনুন: ‘বেটি’ বাঁচাতে শিবের সঙ্গে নিতে হবে সেলফি, মন্ত্রীর নির্দেশ ঘিরে হইচই উত্তরাখণ্ডে
হিন্দু এবং মুসলিমের মধ্যে বিয়ের ঘটনা ঘটলে প্রায়শই তাকে ‘লাভ জিহাদ’ বলে দাগিয়ে দিয়ে থাকেন উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। তাঁদের দাবি, কোনও প্রেম ভালবাসার টানে নয়, এই বিয়ে নিছকই এক ধর্মীয় চাল। আসলে হিন্দু মেয়েদের ভুলিয়েভালিয়ে বিয়ে করতে চায় মুসলিম ধর্মাবলম্বী পুরুষেরা। তারপর জোর করে মেয়েটির ধর্মান্তর করে এবং তার গর্ভে একাধিক সন্তানের জন্ম দিয়ে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ানোই তাদের লক্ষ্য, এমনটাই দাবি হিন্দুত্ববাদীদের। আর এই ইস্যু টেনেই এবার মধ্যপ্রদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রীর বক্তব্য, “সকলেই জানেন, গরবা মণ্ডপগুলো লাভ জিহাদের বড় বড় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। আর সেইজন্যেই আমরা নিশ্চিত করতে চাইছি যাতে কেউ নিজের পরিচয় লুকিয়ে মণ্ডপে ঢুকতে না পারে। এটা পরামর্শ বটে, সতর্কবার্তাও বটে।” প্রতি বছর গরবার সময় ৪ লক্ষেরও বেশি হিন্দু মহিলার ধর্ম পরিবর্তন করা হয়, এমনই দাবি মন্ত্রীর। যদিও এমন তথ্যের সমর্থনে কোনও নথি দেখাতে পারেননি তিনি।
আরও শুনুন: কন্যাভ্রূণ হত্যার নিরিখে মুসলিমদের তুলনায় এগিয়ে হিন্দুরা, চাঞ্চল্যকর তথ্য মার্কিন সমীক্ষায়
এর আগেও ২০১৪ সালে গরবা প্যান্ডেলে মুসলিম সম্প্রদায়কে ঢুকতে না দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন ঊষা ঠাকুর। নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের গরবা উদ্যোক্তাদের তিনি চিঠি লিখে আর্জি জানিয়েছিলেন, গরবা প্যান্ডালে যেন মুসলিমদের ঢুকতে না দেওয়া হয়। এমনকি কোনও মুসলিম পুরুষ যেন হিন্দু মহিলাদের সঙ্গে কথা বলতে না পারেন, তা নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। আর এবার ফের সেই একই ইস্যুতে মুসলিমবিরোধী বক্তব্য রাখলেন তিনি। হিন্দু মহিলাদের বাঁচাতে এ ছাড়া কোনও উপায় নেই, এমন দাবি করে আবারও বিতর্ক উসকে দিলেন মধ্যপ্রদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রী।