৯০তম ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে উঠে এল পূর্ণা মালাবতের নাম। তেলেঙ্গানার এই যুবতিকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কেন এমন কথা বললেন তিনি? কে এই পূর্ণা মালাবত? আসুন, তাহলে শুনে নেওয়া যাক।
তেলেঙ্গানার পাকালা গ্রামের পূর্ণা মালাবত যখন মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় পা রেখেছিল, তখন তার বয়স মাত্র ১৩। সর্বকনিষ্ঠ ভারতীয় হিসেবেই শুধু নয়, সারা বিশ্বের মেয়েদের মধ্যেই সবচেয়ে কমবয়সি হিসেবে এভারেস্ট শিখর ছুঁয়েছিল সে। সম্প্রতি ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে সেই মেয়ের কথাই উঠে এল খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে। তবে সেই পুরনো কৃতিত্বের জন্য নয়। পর্বতারোহণের পরিসংখ্যানে নয়া রেকর্ড গড়েই এই প্রশংসা আদায় করে নিয়েছেন পূর্ণা মালাবত।
আরও শুনুন: হার মানেননি রক্ষণশীলতার কাছে, সৌদি আরবের প্রথম মেয়ে হিসেবে এভারেস্ট জয় তরুণীর
নিজের ভাষণে মোদি বলেছেন, “সেভেন সামিট চ্যালেঞ্জ সম্পূর্ণ করা পূর্ণার মুকুটে যোগ করল নয়া পালক। পূর্ণা ভারতের সেই মেয়েটি, যে মাত্র ১৩ বছর বয়সে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছিল।” পূর্ণা মালাবতের এমন অদম্য শক্তি ভারতকেও সম্মান এনে দিয়েছে বলেই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও শুনুন: এভারেস্ট-সহ ছুঁয়েছেন পাঁচ সর্বোচ্চ শৃঙ্গ, প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে রেকর্ড প্রিয়ঙ্কার
পূর্ণার এভারেস্ট বিজয়কে অবলম্বন করে বলিউডে তৈরি হওয়া ছবি ‘পূর্ণা’-র ট্যাগলাইন ছিল, ‘মেয়েরা সব পারে’। বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গে পৌঁছে এমনটাই মনে হয়েছিল তাঁর, জানিয়েছিলেন পূর্ণা মালাবত। আসলে পূর্ণা যে জায়গা থেকে উঠে এসেছেন, সেখানে দিন গুজরান করাটা এভারেস্টে চড়ার চেয়ে কম কঠিন নয়। আদিবাসী গ্রামের, স্বল্পশিক্ষিত এক মেয়ের পক্ষে পাহাড় ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখাটাই রূপকথার মতো। সেখানে পূর্ণা কেবল এভারেস্ট জয় করেই থেমে যাননি। নিয়েছিলেন সেভেন সামিট চ্যালেঞ্জও। অর্থাৎ সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করার শপথ নিয়েছিলেন তিনি। এশিয়ার মাউন্ট এভারেস্ট, আফ্রিকার মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো, ইউরোপের মাউন্ট এলব্রুজ, দক্ষিণ আমেরিকার মাউন্ট অ্যাকনকাগুয়া, ওশিয়ানিয়ার মাউন্ট কারস্টেঞ্জ পিরামিড আর অ্যান্টার্কটিকার মাউন্ট ভিনসন জয় করেছিলেন ইতিমধ্যেই। চলতি মাসের ৫ তারিখে উত্তর আমেরিকার মাউন্ট দেনালির চূড়ায় পা রাখার পর পূরণ হয়ে গিয়েছে পূর্ণার সাত শৃঙ্গজয়ের স্বপ্ন। ৬১৯০ মিটার উঁচু এই শৃঙ্গ জয় করা এভারেস্টের চেয়েও কঠিন ছিল বলেই জানিয়েছেন পূর্ণা। কিন্তু সেই প্রতিকূলতার কাছে হার মানেনি তাঁর জেদ। আর তার ফলেই শেষমেশ জয়ের হাসি হেসেছেন তিনিই। আর পর্বতারোহীদের পাখির চোখ এই লক্ষ্য পূরণ করার পর এবার প্রধানমন্ত্রী মোদির মুখেও উঠে এল পূর্ণা মালাবতের নাম।