সম্প্রতি চাকরি বাঁচানোর জন্য সংস্থার প্রতি আরও একনিষ্ঠ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ইনফোসিস কর্তা। এদিকে কর্মক্ষেত্রে নিজের সেরাটুকু উজাড় করে দিয়েও চাকরি হারাচ্ছেন বিপুলসংখ্যক কর্মী। এক উভমুখী সংকটের মুখেই কি দাঁড়িয়ে এই সময়ের কাজের দুনিয়া? আলোচনায় শঙ্খ বিশ্বাস।
সংস্থার প্রতি আরও একনিষ্ঠ হতে হবে কর্মীদের। সম্প্রতি এমনই পরামর্শ দিয়েছেন ইনফোসিস কর্তা নারায়ণমূর্তি। তাঁর সাফ কথা, ওয়ার্ক ফ্রম হোম একরকম ফাঁদ হয়ে দাঁড়াচ্ছে অনেক কর্মীর কাছেই। বাড়িতে বসে নিজের সংস্থার কাজ করার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের লোভে অন্য কোনও সংস্থার হয়ে কিছু কাজও করে দিচ্ছেন তাঁরা। তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়ায় যার চেনা নাম মুনলাইটিং। কিন্তু এর ফলে একইসঙ্গে নিজের সংস্থার কাজটিও যেমন পিছিয়ে যাচ্ছে, তেমনই কোনও কোনও সংস্থা স্থায়ী নিয়োগের বদলে এমন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমেই কাজ চালিয়ে নিচ্ছে। আর এই প্রবণতাটিকে সামগ্রিকভাবে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সমস্যাজনক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই কেউ এমনটা করলে তাঁকে চাকরি হারাতে হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে একাধিক সংস্থা।
আরও শুনুন: Audio Blog: ঘড়িতেই প্রেশার-সুগার মাপছেন! প্রযুক্তিতে ভরসা করে হিতে বিপরীত হচ্ছে না তো?
কিন্তু এ তো গেল সমস্যার একটা দিক। মুদ্রার অন্য পিঠে কী রয়েছে? সম্প্রতিই আলোচনা হয়েছিল ইদানীং কালের কর্মহীনতার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে। কীভাবে ধীরে ধীরে এই কর্মহীনতা মহামারীর আকার নিতে চলেছে, তা নিয়েই কথা হয়েছিল। সাধারণ বুদ্ধিতে বলে, চাকরি বাঁচাতে গেলে যতটা সম্ভব সময়, যতটা সম্ভব নিষ্ঠা আর মনোযোগ দিতে হবে কাজের প্রতি, আর তবেই মিলবে সাফল্য। ঠিক যেমনটা বলছেন ইনফোসিস কর্তাও। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে অনেক সংস্থাতেই দেখা গিয়েছে বিপুল পরিমাণে ছাঁটাইয়ের ছবি। এমনকি, এমনও অনেক কর্মীর চাকরি গিয়েছে যারা কেউ আগের মাসেই সেরা কর্মীর পুরস্কার অর্জন করেছেন, কেউ আবার কাজ শেষ করার জন্য রাতভর থেকে গিয়েছেন অফিসেই। গুগল-এর হর্ষ বিজয়বর্গীয় যেমন ‘এমপ্লয়ি অফ দ্য মান্থ’ হওয়ার পরের মাসেই চাকরিটি খুইয়েছেন। আবার টুইটারের নয়া কর্ণধার এলন মাস্ক সংস্থার কর্মীদের দিনরাত এক করে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার পরেও চাকরি গিয়েছে অফিসেই রাত কাটানো এস্থার-এর। একইসঙ্গে ছাঁটাই হয়েছেন তাঁর দলের আরও ৫০ জন সদস্য। অর্থাৎ, মন দিয়ে কাজ করলেও চাকরিটি সুরক্ষিত কি না, এমনটা নিশ্চিত করে বলা আর সম্ভব হচ্ছে না আজকের যুগে দাঁড়িয়ে। এক উভমুখী সংকটের সামনেই এসে দাঁড়িয়েছেন এই প্রজন্মের চাকরিজীবীরা, যা হয়তো গোটা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির নিরিখেও অশনি সংকেত।