শান্তি ফিরুক বাংলাদেশে, বন্ধ হোক সংখ্যালঘু তথা হিন্দুদের উপর চলা অত্যাচার। এই প্রার্থনায় মসজিদে চাদর চড়ালেন ভারতের মুসলিমরা। শুধু তাই নয়, ওপার বাংলার হিংসার কারণ হিসেবে বিশেষ কিছু গোষ্ঠীকে দায়ী করলেন তাঁরা। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
পরীক্ষা হোক বা ভোট, রেজাল্টের আগে মন্দির-মসজিদে হাজির হন অনেকেই! বিশ্বাস, মন দিয়ে প্রার্থনা করলে কাঙ্খিত ফল মিলবেই। সম্প্রতি এমনই আশা নিয়ে মসজিদে চাদর চড়িয়েছেন এক মুসলিম সংগঠনের সদস্যরা। তবে নিজেদের জন্য নয়, বাংলাদেশের হিন্দু অত্যাচার কমানোর প্রার্থনাতেই এই কাজ করলেন তাঁরা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই বাংলাদেশ অশান্ত। ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া বিপ্লবের আঁচ ছড়িয়েছিল ওপার বাংলার সর্বত্র। সেই আগুন, সরকার বদলাতে বাধ্য করে, গদিচ্যুত হন শেখ হাসিনা। নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুস। তাতেও অশান্তি কমেনি, বিভিন্ন ইস্যুতে উত্তাল হয়েছে বাংলাদেশ। তবে বিগত কয়েক সপ্তাহে পরিস্থিতি চরমে পৌঁছেছে। নেপথ্যে বাংলাদেশের হিন্দু অত্যাচার। অভিযোগ, এই কদিনে সে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মারাত্মক অত্যাচারের শিকার হচ্ছে। আগুনে ঘি ঢেলেছে সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতার। তিনি একা নন অবশ্য, গরাদের ওপারে পাঠানো হয়েছে আরও অনেককে। এসব মেনে নিতে না পেরে যারাই প্রতিবাদে নেমেছেন, অত্যাচারের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদের। শুধু প্রতিবাদ কেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি বদলেন কামনায় কোনওরকম প্রার্থনাও সে দেশে ‘নিষিদ্ধ’! কিন্তু সে সেসব ওপার বাংলায়, এ দেশে প্রতিবাদে সমস্যা কোথায়! তাই এপার বাংলার অনেকেই প্রতিবাদে নামছেন। জোর গলায় সওয়াল করছেন বন্ধ হোক বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অত্যাচার। খোদ ভারত সরকারও এই নিয়ে কড়া বার্তা শুনিয়েছে বাংলাদেশ প্রশাসনকে। বিদেশ সচিবের বৈঠকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, অবিলম্বে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এই আবহে, অন্য ছবি দেখা গেল উত্তরাখণ্ডের পিরান কালিয়ার শরিফ মসজিদে। বাংলাদেশে শান্তি ফেরানোর প্রার্থনায় এই মসজিদেই চাদর চড়িয়েছেন সেখানকার মুসলিম সংগঠনের সদস্যরা। তাঁদের কথায়, ওপার বাংলার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তাঁরা উদ্বেগে রয়েছেন। বাংলাদেশের হিন্দুরা যাতে অবিলম্বে নিশ্চিন্তের জীবন ফিরে পান, এমনটাই চাইছেন তাঁরা। ইসলাম ধর্ম শান্তির কথা বলে, এই প্রসঙ্গ মনে করিয়ে তাঁদের দাবি, যারা হিংসা ছড়াচ্ছেন তাদের মনুষ্যত্ব নেই। এক্ষেত্রে আইএস এবং জামাতকে নিশানা করে টোপ দেগেছেন তাঁরা। মুসলিম হয়েও হিন্দুদের জন্য তাঁদের এই প্রার্থনা সকলের নজর কেড়েছে। কিন্তু এর জন্য আলাদা কৃত্বিত্ব নিতে নারাজ মুসলিম সংগঠনের সদস্যরা। তাঁদের কথায়, বাংলাদেশের মানুষ অত্যাচারিত হচ্ছে, মন্দির ভাঙা হচ্ছে, মা-বোনেরা সুরক্ষিত থাকছেন না, এইসব সহ্য করতে না পেরেই তাঁরা ঈশ্বরের দরবারে ছুটে এসেছেন। তাঁদের একমাত্র চাহিদা, বাংলাদেশে শান্তি ফিরুক। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে, শান্তিতে থাকুন প্রতিটা মানুষ।