রাম মন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে সাজো সাজো রব অযধ্যায়। এদিকে রামের মূর্তি গড়তে ব্যস্ত বাংলার দুই মুসলমান শিল্পী। ব্যস্ত না হয়ে উপায়ই বা কি! তাঁদের গড়া মূর্তিই তো স্থান পাবে অযোধ্যার মন্দির চত্বরে। আসুন শুনে নিই।
নতুন বছরের শুরুতেই রামমন্দিরের গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠিত হবে রামলালা। সেইসঙ্গে মন্দির চত্বরও সেজে উঠবে একাধিক রাম মূর্তিতে। যা তৈরির বরাত পেয়েছেন বাংলার দুই মুসলিম শিল্পী। আপাতত মূর্তি তৈরি এবং তা অযোধ্যায় পাঠানোর কাজেই বেজায় ব্যস্ত তাঁরা।
আরও শুনুন: রাম নামে মুছবে ভেদাভেদ! অযোধ্যার মন্দির উদ্বোধনে আমন্ত্রণ মুসলিমপ্রধান দেশগুলিকেও
রামের নামে ধর্মীয় ভেদাভেদ ঘুচবে। এই ইঙ্গিত অযোধ্যার মন্দির কর্তৃপক্ষ আগেই জানিয়েছিল। উদ্বোধনের অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে বেশ কিছু মুসলিম প্রধান দেশে। মনে করা হচ্ছে, সেইসব দেশের ভিনধর্মের প্রতিনিধিরাও সাক্ষী থাকবেন রাজকীয় অনুষ্ঠানের। এবার সামনে এল আরও এক তথ্য, যা অবশ্যই সম্প্রীতির বার্তা দেবে। দীর্ঘ আন্দোলনের পর মিলেছিল বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির তৈরির অনুমতি। আর তারপর থেকেই রামজন্মভূমিতে রামমন্দির প্রতিষ্ঠার দিকে নজর গোটা দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের। লোকসভা নির্বাচনের আগেই ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে মন্দিরের দরজা। ২০২০ সালের ৫ অগস্ট অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার পর থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়ে যায় মন্দির নির্মাণের কাজ। ভক্তদের অনুদানের সুবাদে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনের চেয়েও বেশি অর্থ জমা পড়েছে শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টে। যার জেরে মন্দির নির্মানে এতটুকু খামতি রাখতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই মন্দিরের গর্ভগৃহ প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছে। একইসঙ্গে সেজে উঠছে মন্দির চত্বর। সেখানেও থাকবে একাধিক রাম মূর্তি। জানা গিয়েছে, মূর্তি তৈরির বরাত পেয়েছেন বাংলার জামালউদ্দিন ও তাঁর ছেলে। অনলাইনে তাঁদের কাজ দেখে মুগ্ধ হন অযোধ্যার মন্দির কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকেই মেলে মন্দির চত্বরের জন্য রাম মূর্তি তৈরির বরাত।
আরও শুনুন: ভাঙাচোরা লোহা দিয়েই তৈরি হল ‘রামমন্দির’! হাত লাগালেন মুসলিম কারিগরেরাও
ধর্ম বিশ্বাস যাই হোক, জামালউদ্দিন মনে করেন শিল্পী হিসেবে তাঁর পরিচয় সবার উপরে। যেখানে কোনও ভেদাভেদ নেই। তাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যখন সাম্প্রদায়িক অশান্তির খবর সামনে আসে তখন নিশ্চিন্তে জগদ্ধাত্রী, দুর্গা কিংবা রামের মূর্তি গড়ে চলেন জামালউদ্দিনরা। এক্ষেত্রেও যত্ন নিয়েই রামের মূর্তি গড়েছেন তাঁরা। তবে মাটির নয়। মূর্তি তৈরি হচ্ছে ফাইবার দিয়ে। যা দীর্ঘদিন একইরকম থাকবে বলেই দাবি শিল্পীদের। সবথেকে বড় মূর্তিটি তৈরি করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। তবে মূর্তি গড়লেই তো হল না, তা পাঠাতেও হবে সুদূর অযোধ্যা। জানা গিয়েছে, প্রায় ৪৫ দিন সময় লাগবে ওই মূর্তি অযোধ্যা পৌঁছাতে। উদ্বোধনের দিনই মন্দির চত্বরে দেখা মিলবে মূর্তিগুলির। একথা বলাই বাহুল্য, রামমন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে যেমন ব্যস্ত অযোধ্যার শিল্পীরা তেমনই দিনরাত এক করে কাজ করছেন বাংলার জামালউদ্দিনরাও।