একদিকে গণেশপুজো। অন্যদিকে ইদ। কিছুদিনের মধ্যেই দুই সম্প্রদায়ের প্রধান দুই উৎসব ঘিরে মেতে উঠবে গোটা দেশ। তবে গণেশ পুজো উপলক্ষে বিশেষভাবে সাজবে মহারাষ্ট্র। সে রাজ্যের মুসলিমরাও ব্যবস্থা করবে ইদ উদযাপনের। এই নিয়ে কোনও ভাবে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে যেন বিরোধ না বাধে, এবার সেই ব্যবস্থাই করল মহারাষ্ট্রের কিছু মুসলিম সংগঠন। ঠিক কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
গণেশ পুজো উপলক্ষে রাজকীয় ভাবে সেজে ওঠে গোটা মহারাষ্ট্র। উৎসবের আসল চমক থাকে বিসর্জন ঘিরে। বিশালাকায় গণেশমূর্তি নিয়ে বেরোয় বিশেষ শোভাযাত্রা। কিন্তু এবছর গণেশ বিসর্জনের দিনেই পড়েছে ইদ। ফলত একইদিনে মুসলিমদেরও শোভাযাত্রা নিয়ে রাস্তায় বেরোনোর কথ। সেক্ষেত্রে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধ বাধার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। এরকম কোনও ঘটনা যাতে না ঘটে, তাই আগে ভাগেই ব্যবস্থা নিল সে রাজ্যের কিছু মুসলিম সংগঠন।
আরও শুনুন: গোটা সফর জুড়ে নাক ডাকা আর বাতকর্ম! সহযাত্রীর ‘অত্যাচারে’ অতিষ্ঠ দম্পতি
আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর দেশজুড়ে পালিত হবে গণেশ চতুর্থী। তবে মুম্বইয়ে ইতিমধ্যেই গণেশ উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। একদিন নয়, সেখানে গণেশ আরাধনা চলে ১০ দিন ধরে। তারপর প্রথা মেনে হয় বিসর্জন। সেও এক দেখা মতো বিষয়। বিশালাকার গণেশ মূর্তি নিয়ে রাজপথে বেরোয় বিরাট শোভাযাত্রা। রাজ্যের মহিলারাও সেই শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শুধু তাই নয়, বিভিন মন্ডপ বা গণেশ পুজো কমিটির তরফে বিশেষ চমকের ব্যবস্থা করা হয় এই বিসর্জনের শোভাযাত্রায়। ভিড়ও হয় চোখে পড়ার মতো। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেই শোভাযাত্রা দেখতে হাজির হন অনেকেই। তবে এ বছর গণেশ পুজোর বিসর্জনের দিনেই ইদ পড়েছে। সুতরাং মুসলিমরাও শোভাযাত্রার আয়োজন করবেন। ফলত দুই সম্প্রদায়ের মানুষের ভিড় একসঙ্গে নামবে রাস্তায়। যার থেকে বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধও বাধতে পারে। এইসব এড়াতেই আগেভাগে ব্যবস্থা নিল সে রাজ্যের বেশ কিছু মুসলিম সংগঠন। যদিও এর মূল উদ্যোগ কংগ্রেস নেতা নাসিম খানের। যিনি মহারষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রীও বটে। সম্প্রতি সে রাজ্যের বেশ কিছু মুসলিম সংগঠনের সঙ্গে তিনি এই বিষয়ে আলোচনা করেন। একইদিনে গণেশ বিসর্জন আর ইদ পড়ায়, ঠিক কী কী সমস্যা হতে পারে তা বিস্তারিত ভাবে সকলের সামনে তুলে ধরেন নাসিম। সেইসঙ্গে তিনি প্রস্তাব দেন, এবছর যদি ইদ উদযাপন একদিনের জন্য পিছিয়ে দেওয়া যায়। অন্তত গণেশ বিসর্জনের দিনেই শোভাযাত্রা বার করা থেকে যেন সকলে বিরত থাকেন, মুসলিম নেতাদের সেই অনুরোধ করেন নাসিম।
আরও শুনুন: হজে যাওয়া মুসলিমদের পরিচয় হিন্দুই, বিস্ফোরক যোগী আদিত্যনাথ
জানা গিয়েছে, তাঁর এই প্রস্তাবে সংগঠনের সকলেই প্রায় রাজি হয়েছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে এই উদ্যোগ যথেষ্ট কার্যকরী হবে বলেই মনে করছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই এই অনুরোধ জানিয়ে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি পাঠিয়েছেন নাসিম। হিসাবমতো চলতি বছরে গণেশ বিসর্জন হবে ২৮ সেপ্টেম্বর। ক্যালেন্ডারে ওই একইদিনে ইদ পালনের কথা লেখা রয়েছে। তবে নাসিম ও মুসলিন সংগঠনের ইচ্ছা এ বছর তাঁরা ইদ পালন করবেন একদিন পর। অর্থাৎ ২৯ সেপ্টেম্বর। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে সে কথাই বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছেন নাসিম। একইসঙ্গে ওই দিন ইদ উপলক্ষে মহারাষ্ট্রে ছুটি ঘোষণার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। সরকারি অনুমতি পেলেই চলতি বছরে এমন নজির দেখবে মহারাষ্ট্র।