মন্দিরে বিয়ের ঘটনা নতুন ব্যাপার নয়। কিন্তু সেই বিয়ের আয়োজন যদি অন্য সম্প্রদায়ের কেউ করেন, তাহলে অনেকেই হয়তো অবাক হবেন। এক্ষেত্রেও ঘটেছে তেমনটাই। দাঁড়িয়ে থেকে হিন্দু মন্দিরে এক দম্পতির চারহাত এক করলেন মুসলিম লিগের সদস্যরা। কোথায় ঘটেছে এই কাণ্ড? আসুন শুনে নিই।
ধর্মবিশ্বাস ভেদে আলাদা হয় বিয়ের নিয়মকানুন। হিন্দু, মুসলিম কিংবা খ্রিস্টান সকলের ধর্মেই বিয়ের জন্য বিশেষ কিছু নিয়মের কথা বলা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আলাদা হয় বিয়ের জায়গাও। হিন্দুদের ক্ষেত্রে মন্দির, খ্রিস্টানদের ক্ষেত্রে চার্চ কিংবা অন্য কোনও সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে তাঁদের নির্দিষ্ট উপাসনা স্থলে বসতে পারে বিয়ের আসর। সম্প্রতি এমনই এক বিয়ের আয়োজন বসেছিল কেরলের জনপ্রিয় মন্দিরে। কিন্তু সেই বিয়ের আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন মুসলিম লিগের সদস্যরা।
আরও শুনুন: অভিন্ন বিধি নিয়ে যত সমস্যা ভারতে! ব্যক্তিগত আইন বদলেছে ইসলাম-প্রধান দেশগুলিও
এ যেন এক অন্য কেরল স্টোরি! বিগত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন খবরের শিরোনামে এই উদ্ধৃতি চোখে পড়েছে অনেকেরই। সিনেমায় দেখানো গল্পের বাইরেও যে দক্ষিণের এই রাজ্যের অনেকগুলো ছবি রয়েছে, তা বারে বারে প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে যোগ হল এই সাম্প্রতিক ঘটনাটিও। কেরলের ভেঙ্গারা শ্রী আম্মানচেরি ভগবতী মন্দিরে বসেছিল এক বিয়ের আসর। পাত্র-পাত্রী দুজনেই হিন্দু। অথচ বিয়ের আয়োজনের সম্পূর্ণ দায়িত্ব ছিল মুসলিম লিগের সদস্যদের কাঁধে। তাঁরা প্রত্যেকে হিন্দু নিয়ম অনুযায়ী বিয়ের ব্যবস্থা করেন। বিয়ের দিন মুসলিম লিগের অন্যান্য কর্মকর্তারাও মন্দিরে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ছিলেন কেরলের প্রভাবশালী রাজনৈতিক বক্তিত্বরাও। সকলেই এদিন প্রাণভরে নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করেছেন। বিয়ের যাবতীয় খরচের ভারও মুসলিম লিগই সামলেছে। তবে এই ঘটনায় কোনও আপত্তি জানাননি ওই মন্দিরের সদস্যরাও। সেখানকার প্রধান পুরোহিতের তত্ত্বাবধানেই বিয়ে সম্পন্ন হয়।
আরও শুনুন: ‘মুসলিমদের বৈষম্যকে তোপ, হিন্দুদের জাতপাত নিয়ে চুপ কেন?’ UCC ইস্যুতে মোদিকে খোঁচা সাংবাদিকের
ঘটনার কথা সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রকাশ করেছেন অনেকেই। সকলকেই একযোগে এই উদ্যোগের প্রশংসা করতেই শোনা গিয়েছে। মূলত সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিতেই এই কাজ করা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। মুসলিম লিগও সে ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেনি। কেরলে সব ধর্মের মানুষই যে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকার সুযোগ পান, একথাই তুলে ধরতে চেয়েছেন তাঁরা। ঘটনায় খুশি হয়েছেন নেটিজেনদের একাংশও। তাঁরাও এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। সব মিলিয়ে কেরলের এই অন্য স্টোরি নিয়ে বেজায় খুশি সে রাজ্যের অনেকেই।