কিছুদিনের মধ্যেই বাজেট ঘোষণা করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সেই নিয়ে বিভিন্ন মহলে চাপানউতোড় চলছে। কোন জিনিসের দাম বাড়বে, কমবেই বা কীসের, ভাবনায় বুঁদ সকলেই। এই আবহে ধর্মের ভিত্তিতে বাজেট তৈরির দাবি উঠল কর্নাটকে। ঠিক কী বলা হচ্ছে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অর্থনীতি নয়, বাজেটের ভিত্তি হোক ধর্ম! এমনটাই চাইছেন কর্নাটকের মুসলিম সংগঠন। এই নিয়ে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও সেরেছেন তাঁরা। বিভিন্ন প্রস্তাবের সঙ্গে ধর্মের কথাও সেখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। পাল্টা প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিজেপি। সবমিলিয়ে কেন্দ্রীয় বাজেটের আগে আগে মুসলিম সংগঠনের এমন দাবি নিয়ে রীতিমতো চর্চা চলছে।
আরও শুনুন:
দেশের জিডিপি বৃদ্ধি নিয়ে ধন্দ! তবে হরিয়ানায় গো-রক্ষা বাজেট ১০ বছরে বেড়ে ৫১০ কোটি
জানুয়ারির শেষে বসছে সংসদের বাজেট অধিবেশেন। জানা গিয়েছে, যৌথ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর ভাষণের মধ্যে দিয়ে অধিবেশন শুরু হবে। ১ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। এবারের বাজেটে কোন কোন বিষয়ে জোর দেওয়া হবে, তা অনুমান করতেই ব্যস্ত বিশেষজ্ঞরা। এই আবহে কর্নাটকের মুসলিম সংগঠন নিজেদের দাবি সামনে আনল। কর্নাটকের রাজ্য বাজেটে মুসলিমদের উন্নয়নে আলাদাভাব নজর দেওয়া হোক, এমনটাই চাইছেন তাঁরা। দাবি বলতে আসন্ন বাজেটে মুসলিমদের জন্য আরও বেশি টাকা বরাদ্দ করা হোক। যা নিয়ে এর আগেও বিতর্ক হয়েছে। আগের বাজেটে এই খাতে ৩০০০ কোটি বরাদ্দ করেছিল কর্নাটক সরকার। তাতে বিরোধীরা সরব হন, প্রশ্ন ওঠে এত টাকা কেন মুসলিম উন্নয়নে খরচ হবে? পালটা রাজ্য সরকারের যক্তি ছিল, বাজেটের পরিমাণ ৩.৭১ লক্ষ কোটি টাকা, তার মধ্যে মাত্র ১% এই খাতে খরচ করা যেতেই পারে। তবে এই হিসাবে কর্নাটকের আসন্ন বাজেটের মোট অঙ্ক হওয়ার কথা ৪ লক্ষ কোটি, তবে কি এবার মুসলিম উন্নয়নে ৪০০০ কোটি বরাদ্দ করবে সরকার? এই প্রশ্নেই ফের সরব বিরোধীরা। এর মাঝে সে রাজ্যের মুসলিম সংগঠনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বৈঠকে, সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিরোধীরা।
আরও শুনুন:
বাজেটের জনক বলা হয় এক বাঙালিকেই! কে তিনি, জানেন?
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিজেপি মুখপাত্র অমিত মালব্য। তাঁর দাবি, কর্নাটকের মুসলিম সংগঠন যেভাবে ধর্মের ভিত্তিতে বাজেটের দাবি তুলছেন, তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সেখানকার মুসলিম নেতাদের বৈঠক নিয়েও ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা। বাজেটে এইভাবে মুসলিমদের প্রাধান্য দেওয়ার অর্থ হিন্দুদের অবজ্ঞা করা, এমন অভিযোগও সরাসরিই আনা হয়েছে বিজেপির তরফে। কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে এমনিই গোটা দেশের মানুষ চিন্তায়, সেই আবহে ধর্মকে সামনে রেখে বাজেট গড়ার আবদার মানতেই পারছেন না বলে দাবি বিজেপি নেতার। এক্ষেত্রে কংগ্রেসকেই দুষছে বিজেপি। প্রসঙ্গত উঠে এসেছে সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর নামও। এর আগে কর্নাটকের মুসলিমদের সম্পর্কে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মনমোহন। নতুন করে সেই কথার প্রসঙ্গ মনে করিয়েছেন বিজেপি নেতা। কংগ্রেসের কারণেই যাবতীয় সমস্যা, এমনটাই মনে করছেন তাঁরা। সত্যি সত্যিই যদি রাজ্য বাজেটে ধর্মকে ভিত্তি করে টাকার অঙ্ক বরাদ্দ হয়, তাহলে আগামীদিনে এই ইস্যুতে প্রতিবাদে সরব হবেন বলেই ইঙ্গিত বিরোধী দলের।