দেশ জুড়েই যখন মাঝে মাঝে উসকে উঠছে অসহিষ্ণুতার আঁচ, সেই সময়েই এক অভিনব নজির গড়লেন এই দম্পতি। ধর্মে মুসলিম, অথচ হিন্দু রীতি মেনে হিন্দুদের পুণ্যতীর্থ কাশীতেই বিয়ে সারলেন তাঁরা। যেন বুঝিয়ে দিলেন, ধর্মের মূল কথা মানবতাই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
ধর্মের আসল অর্থ যে ধারণ করা, সে কথাই যেন আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন এই ব্যতিক্রমী যুগল। ধর্মকে কেন্দ্র করেই যখন অসহিষ্ণুতা বারেবারে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে দেশে, সেখানে এক আশ্চর্য নজির গড়লেন তাঁরা। ধর্মে মুসলিম, অথচ হিন্দু রীতি মেনে হিন্দুদের পুণ্যতীর্থ কাশীতেই বিয়ে সারলেন এই যুগল। আর তার জেরেই এবার খবরের শিরোনামে এই নবদম্পতি।
আরও শুনুন: ৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা- প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেবে দেশবাসী, নয়া পরিষেবা ‘নমো’ অ্যাপে
আমেরিকার বাসিন্দা কিয়ামা দিন খলিফা এবং কেশা খলিফা। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন তাঁরা দুজনে। তবে সামাজিক মতে বিয়ে করে সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক শিলমোহর দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাঁদের ছিল না। কিন্তু সেই ধারণাই হঠাৎ বদলে যায় একবার কাশীতে ঘুরতে আসার পরে। আর সেই বেড়ানোরই ফল দুজনের গাঁটছড়া বাঁধা।
আর শুনুন: মন্দির চত্বরেই আয়োজন ইফতারের, মুসলমান পড়শিদের আমন্ত্রণ স্বয়ং পুরোহিতের
জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে বেনারসে ঘুরতে গিয়েছিলেন কিয়ামা এবং কেশা। হিন্দুদের পুণ্যতীর্থ বলে স্বীকৃত কাশীতে গিয়ে মন্দির দর্শনের সময় একটি হিন্দু বিয়ের অনুষ্ঠান দেখেন তাঁরা। দেখেন সিঁদুর দান, গাঁটছড়া বাঁধা, সাতপাক ঘোরার রীতিনীতিগুলি। আর দেখেশুনে এতটাই ভাল লেগে যায় যে, ঠিক করে ফেলেন, এই নিয়ম মেনেই বিয়ে করবেন তাঁরা। তবে হ্যাঁ, তখনই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেননি তাঁরা। সেই সিদ্ধান্তে থিতু হওয়ার জন্য আরও পাঁচ-পাঁচটা বছর সময় নিয়েছিলেন তাঁরা। অবশেষে যখন সত্যিই ঠিক করলেন এবার আনুষ্ঠানিকভাবেই স্বীকৃতি দেবেন নিজেদের সম্পর্ককে, তখন নিজেদের সেই পুরনো সিদ্ধান্তটিকেও গুরুত্ব দিলেন এই যুগল। আর সেইমতোই, আমেরিকা থেকে বেনারসে এসে বিয়ে সারেন দুজনে। আশ্চর্যের কথা হল, এমন ঘটনা ঘটালেও তার জন্য বিশেষ বাধা পোহাতে হয়নি তাদের। এদিকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিচার করে যুগলে নিশ্চিত ছিলেন, মুসলিম হয়ে হিন্দু মতে বিয়ে করতে গেলে বাধা আসবেই। কিন্তু আদতে সেসব কিছুই হয়নি। তাঁদের ইচ্ছার কথা জেনে মন্দিরের পুরোহিত সব নিয়ম মেনেই বিয়ে দেন দুজনের। মানবিকতা যে সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠতে পারে অনায়াসেই, সে কথা যেন বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনিও।