ধর্মীয় উৎসব ঘিরে সাম্প্রদায়িক অশান্তির ঘটনা নতুন নয়। তবে চলতি বছরে, সেই সম্ভাবনা কমাতে রীতিমতো সতর্ক ছিল কর্ণাটক পুলিশ। ইদের আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কড়া নজরদারি চালিয়েছে প্রশাসন। আর সেই কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন খোদ মুসলিমরাই। পুলিশি নির্দেশে ঠিক কী করেছেন ওই রাজ্যের মুসলিমরা? আসুন শুনে নিই।
ইদের সময় নতুন কোনও অশান্তি নয়। নিশ্চিত করতে, আগে থেকেই বিভিন্ন ব্যবস্থা করেছিল কর্ণাটক সরকার। এ ব্যাপারে যথেষ্ট তৎপরতা দেখিয়েছে সে রাজ্যের প্রশাসনও। তবে স্রেফ পুলিশ নয়, অশান্তির ঘটনা এড়াতে পুলিশকে সবরকম সাহায্য করেছে সে রাজ্যের মুসলিমরাও। যা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে কর্ণাটকের কোলার প্রদেশের এক ঘটনায়।
আরও শুনুন: মনোনীত হয়েছিলেন ৫ বার, রাজনীতিক বলেই কি নোবেল পাননি মহাত্মা গান্ধী?
সম্প্রতি গোটা দেশজুড়ে সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে ইদ। তবে মুসলিমদের এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিক্ষিপ্তভাবে সাম্প্রদায়িক অশান্তি দেখা গিয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিশেষ করে দক্ষিণের কিছু রাজ্যে অশান্তির প্রবণতা ছিল যথেষ্টই। তবে ব্যতিক্রম কর্ণাটকের কোলার অঞ্চল। আগে থেকেই অশান্তি রুখতে সতর্ক ছিল সেখানকার পুলিশ। সাধারণত এই উৎসবের উপলক্ষে শোভাযাত্রা বের করার চল রয়েছে। তার আগে সাজানো হয় গোটা শহর। ধর্মীয় চিহ্নযুক্ত পতাকা থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন আকৃতির হোর্ডিং-ও টাঙানো হয়। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কোলার অঞ্চলের স্থানীয় মুসলিম সংগঠনগুলি ইদ উপলক্ষে একাধিক ধর্মীয় শ্লোক লেখা হোর্ডিং টাঙিয়েছিল গোটা শহর জুড়ে। বিজ্ঞাপনের সেই ভিড়েই ছিল দুটি তলোয়ার আকৃতির হোর্ডিঙ। জানা যায়, স্রেফ শৌখিনতার উদ্দেশেই ওমন হোর্ডিং লাগিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তা পুলিশের নজরে পড়তেই অবিলম্বে সরানোর নির্দেশ দেন অফিসাররা। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, এর থেকে সাম্প্রদায়িক অশান্তি তৈরি হতে পারে। তাই মুসলিম সংগঠনকে তোলোয়ার আকৃতির ওই হোর্ডিঙ সরিয়ে ফেলতে বলা হয়। একইসঙ্গে জানা যায়, ওই হোর্ডিং লাগানোর আগে পুরসভার অনুমতিও নেওয়া হয়নি।
তবে পুলিশি নির্দেশ পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে হোর্ডিং সরানোর ব্যবস্থা করে খোদ মুসলিম সংগঠনের সদস্যরাই। ঘটনায় কোনওরূপ অভিযোগ দায়ের হয়নি। শান্তিপূর্ণভাবে পুলিশের দাবি মেনে নেওয়ায় স্থানীয় সংগঠনের সদস্যদের উপর খুশি এলাকার প্রশাসনও। তাঁদের দাবি, এভাবে মুসলিমদের সহযোগিতা না থাকলে শান্তিপূর্ণ ইদ হয়তো সম্ভব হত না। তাই রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা শোনা গেলেও, কর্ণাটকের কোলার শান্তিপূর্ণভাবেই ইদ পালন করেছে বলেই খবর।