অমিতাভ বচ্চনের জীবনে ‘কুলি’ সিনেমার গুরুত্ব নেহাতই কম নয়। একদিকে তাঁর জীবনের অন্যতম হিট সিনেমা, অন্যদিকে এই সিনেমার শুটিংয়ে চোট পেয়েই মরতে বসেছিলেন বিগ-বি। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর জীবনে জড়িয়ে পড়েছেন আরও এক ‘কুলি’। তবে ইনি পর্দার নন, বাস্তবের ‘কুলি’। বচ্চন সাহেবের খুব কাছের এক মানুষের হারিয়ে যাওয়া মোবাইল খুঁজে দিয়ে রীতিমতো চর্চায় উঠে এসেছেন তিনি। কী ঘটেছে ঠিক? আসুন শুনে নিই।
কুলি সিনেমার নায়কের কথা মনে আছে? খুবই সাধারণ মানের জীবনযাপন। উদয়াস্ত খেটে যতটুকু প্রয়োজন, কোনওক্রমে সেটুকু জোগাড় করা। কিন্তু সততার সঙ্গে এতটুকু আপস নয়। পর্দার সেই ‘কুলি’-রই বাস্তবরূপের দেখা মিলল মুম্বই স্টেশনে। তাঁর সততার সঙ্গেও জড়িয়ে গেলেন ‘কুলি’ সিনেমার অমিতাভ বচ্চনও।
আরও শুনুন: পাটনা স্টেশনের পর্ন-কাণ্ডের পরই ‘রহস্যময়’ টুইট, নিজের ভিডিও চিনতে পারলেন তারকা?
কী ঘটেছে ঠিক?
ঘটনার মুখ্য চরিত্র দশরথ দৌন্ড। বছর ৬২-র এই বৃদ্ধ মুম্বইয়ের দাদর স্টেশনে কুলি হিসেবে কাজ করেন। একেবারেই সাদামাটা তাঁর জীবন। দৈনিক উপার্জন খুব বেশি হলে ৩০০ টাকা। অথচ মনে এতটুকু লোভ নেই। ঘটনার দিন সকালে স্টেশনের বেঞ্চে একটা মোবাইল ফোন পড়ে থাকতে দেখেন দশরথ। তিনি এমন মোবাইল ব্যবহার করেন না। তবে মোবাইলটি দেখে বুঝতে পারেন এর দাম নেহাত কম নয়। তাই প্রথমে আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা নিত্যযাত্রীদের জিজ্ঞাসা করেন, এই মোবাইল তাঁদের কি না। কিন্তু তাঁদের কেউই মোবাইলটি নিজের বলে দাবি করেননি। এহেন পরিস্থিতিতে অনেকেই হয়তো মোবাইলটি বিক্রি করা দেওয়ার কথা ভাবতেন। তবে দশরথ এমনটা করেননি। এতটুকু লোভ না দেখিয়ে, মোবাইলটি নিয়ে তিনি সোজা হাজির হন রেলপুলিশের দপ্তরে।
আরও শুনুন: ছোট হোক স্তনের আকার, আশায় সার্জারির দ্বারস্থ ১৫ হাজার ভারতীয় মহিলা, কেন এই প্রবণতা?
এরপরই উঠে আসে এক অবাক করা তথ্য। জানা যায়, ওই মোবাইলটির মালিক দীপক সাওয়ান্ত নামে এক মেক-আপ আর্টিস্ট। তাও আবার স্বয়ং অমিতাভ বচ্চনের মেক-আপের দায়িত্বে থাকেন দীপক। তিনিই ভুলবশত ফোনটি স্টেশনে ফেলে চলে গিয়েছিলেন। ফোনটির দাম সত্যিই নেহাত কম নয়। প্রায় দেড় লক্ষ টাকার মূল্যের ওই ফোন পুলিশের জমা করেছিলেন দশরথ। তারপর পুলিশের মাধ্যমে তা চলে যায় আসল মালিক, দীপকের কাছে। সব ঘটনা জানার পর, দশরথের সততায় যথেষ্ট খুশি হয়েছেন দীপক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। পুরস্কার হিসেবে দশরথকে ১ হাজার টাকাও দেন তাঁরা। যদিও দশরথের কাছে এই কাজ বিরাট কোনও কৃতিত্ব নয়। পরিষ্কার জানিয়েছেন, অন্যের জিনিস তিনি ব্যবহার করেন না। তাই এই ফোন ফিরিয়ে দেওয়াই কর্তব্য বলে মনে হয়েছিল তাঁর। তবু এই সততায় মুগ্ধ সকলেই। রেল পুলিশের আধিকারিকরাও প্রশংসায় ভরিয়েছেন এই বৃদ্ধ কুলিকে। এমনকি ঘটনার কথা প্রকাশ পেলে নেটিজেনরাও দশরথের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।