কোনও মুসলিম মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে জড়িয়ে তাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে পারলেই মিলবে পুরস্কার। লাভ জিহাদের পালটা দিতে হিন্দু পুরুষদের এই মর্মেই বার্তা দিল হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। এহেন মন্তব্যে আরও একবার লাভ জিহাদ ইস্যুতে উসকে উঠল বিতর্ক। কী ঘটেছে ঠিক? শুনে নেওয়া যাক।
প্রেমের ফাঁদে জড়াতে হবে মুসলিম মেয়েদের। আর তারপরেই পালাতে হবে তাকে নিয়ে। হিন্দু পুরুষদের উদ্দেশে এমনই ফরমান জারি করলেন এক হিন্দুত্ববাদী নেতা। শুধু তাই নয়, এ কাজে সফল হলে মিলবে পুরস্কারও। কোনও মুসলিম মেয়েকে নিয়ে ইলোপ করলেই সেই হিন্দু ব্যক্তিকে ১১ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে মধ্যপ্রদেশের ওই হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।
আরও শুনুন: স্কুলের প্রার্থনা সঙ্গীতে আজান! অভিভাবকদের বিক্ষোভের জেরে সাসপেন্ড শিক্ষক
হ্যাঁ, সম্প্রতি এমনটাই বলেছেন হিন্দু ধরম সেনার সভাপতি যোগেশ আগরওয়াল। জানা গিয়েছে, পরিবারের অমতে এক মুসলিম ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন এক হিন্দু তরুণী। সেই কারণে ওই তরুণীর পিণ্ডদানের আয়োজন করে তাঁর পরিবার। আর সেই আসর থেকেই এহেন ঘোষণা করেছেন ওই হিন্দুত্ববাদী নেতা। তাঁর দাবি, এমনিতেই হিন্দু ধর্মে পুরুষদের তুলনায় নারীর সংখ্যা কম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে লাভ জিহাদের মাধ্যমে হিন্দু নারীদের ধর্মান্তর করার মতো ঘটনা ঘটছে। সুতরাং একদিকে হিন্দু মেয়েদের যেমন রক্ষা করতে হবে, তেমনই মুসলিম মেয়েদেরও এখানে নিয়ে আসতে হবে, এমনটাই নিদান ওই নেতার।
আরও শুনুন: মসজিদে বসেই লেখা হয়েছিল রামচরিতমানস! বিজেপিকে বিঁধে বিতর্ক উসকে দিলেন আরজেডি নেতা
লাভ জিহাদের অভিযোগে মাঝে মাঝেই উত্তাল হয়ে ওঠে দেশ। আসলে হিন্দু এবং মুসলিমের মধ্যে বিয়ের ঘটনা ঘটলে প্রায়শই তাকে ‘লাভ জিহাদ’ বলে দাগিয়ে দিয়ে থাকেন উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। তাঁদের দাবি, কোনও প্রেম ভালবাসার টানে নয়, এই বিয়ে নিছকই এক ধর্মীয় চাল। আসলে হিন্দু মেয়েদের ভুলিয়েভালিয়ে বিয়ে করতে চায় মুসলিম ধর্মাবলম্বী পুরুষেরা। তারপর জোর করে মেয়েটির ধর্মান্তর করে এবং তার গর্ভে একাধিক সন্তানের জন্ম দিয়ে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ানোই তাদের লক্ষ্য, এমনটাই দাবি হিন্দুত্ববাদীদের। তাই হিন্দু তরুণীদের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি হিন্দু যুবকদেরও লাভ জিহাদ রোখার জন্য বারে বারে সতর্ক করেছে হিন্দুত্ববাদীরা। এর আগে শ্রীরাম সেনা দলের প্রধান প্রমোদ মুতালিক নিদান দিয়েছিলেন, একজন হিন্দু মহিলাকে যদি কোনও মুসলিম পুরুষ বিয়ে করে, তবে তার বদলে দশজন মুসলিম মহিলাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলতে হবে। আর এবার সেই সুরেই সুর মেলালেন হিন্দু ধরম সেনার প্রধানও। আগের থেকে এক ধাপ এগিয়ে এই কাজের জন্য আর্থিক পুরস্কার পর্যন্ত ঘোষণা করে বসেছেন তিনি। যদিও এই ঘোষণা আদতে সে রাজ্যের আইন মোতাবেক অবৈধ। ২০২১ সালেই ফ্রিডম অফ রিলিজিয়ন অ্যাক্ট পাশ করেছে মধ্যপ্রদেশ। এমনকি বম্বে হাই কোর্টও সম্প্রতি এই ইস্যুতে স্পষ্টই জানিয়েছিল, সম্পর্কে থাকা দুই ব্যক্তি দুই ধর্মের হলেই সেই ঘটনাকে লাভ জিহাদ বলা যায় না। তারপরেও সেই লাভ জিহাদ নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্যই করে বসল হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি।