জোর গলায় পাকিস্তান ঘেঁষা স্লোগান দিয়েছিলেন। তাতেই যত বিপত্তি। কড়া শাস্তির নিদান দিয়েছিলেন বিচারপতি। সেই আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন ব্যক্তি। ২১ বার কুর্নিশ ঠুকলেন তিরঙ্গায়। কোথায় ঘটেছে এমন কাণ্ড? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
জাতীয় পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে ব্যক্তি। পরনে সাদামাটা পোশাক। তাঁকে ঘিরে রয়েছে বেশ কয়েকজন পুলিশ। সেইসঙ্গে রয়েছেন সাংবাদিকরাও। পুলিশ আধিকারিকের ইশারায় জাতীয় পতাকার দিকে মাথা উঁচু করে কুর্নিশ ঠুকলেন ওই ব্যক্তি। একবার নয়, পর পর ২১ বার। উচ্চারণ করলেন, ‘ভারত মাতা কি জয়’। সম্প্রতি এমনই এক ভিডিও নেটদুনিয়ায় ভাইরাল। তবে এই কাজ ওই ব্যক্তি স্বেচ্ছায় করেননি। বরং আদালতের নির্দেশে এমনটা করতে বাধ্য হয়েছেন।
আরও শুনুন:
পাকিস্তানকে বাঁচাতে পারে মোদির ‘উল্লাস’, ইসলামাবাদকে পরামর্শ আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কের
ঘটনা দিন কয়েক আগেকার। পাকিস্তান ঘেঁষা স্লোগান দিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করেন মধ্যপ্রদেশের ফাইজান আলি। পোস্ট করেন সোশাল মিডিয়ায়। তাতেই চটে লাল নেটিজেনরা। সঙ্গে সঙ্গে থানায় অভিযোগ দায়ের হয় ফাইজানের নামে। অভিযোগ, ফাইজানের ভিডিওতে এমন কিছু কথা রয়েছে যা জাতীয় ভাবাবেগে আঘাত করছে। একইসঙ্গে এর থেকে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে হিংসার উদ্রেক হতে পারে, এমনটা আশঙ্কা করেন অনেকে। তদন্তে নেমে ফাইজানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পেশ করা হয় আদালতে। সেখানে সব কিছু বিস্তারে শুনে শাস্তির নিদান দেন বিচারপতি। সাফ জানিয়ে দেন, ২১ বার জাতীয় পতাকার সামনে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলতে হবে। সেইসঙ্গে কুর্নিশ জানাতে হবে। বিচারপতির নির্দেশ মেনে সেই কাজই করলেন ফাইজান। থানায় গিয়ে ২১ বার কুর্নিশ ঠুকলেন জাতীয় পতাকার উদ্দেশে। শুধু তাই নয়, আগামীনেও এমনটা করে যেতে হবে ফাইজানকে। বিচারপতির নির্দেশ, প্রতি মাসের প্রথম ও চতুর্থ মঙ্গলবার থানায় গিয়ে এই কাজ করে আসতে হবে তাঁকে। চলতি মাসের চতুর্থ মঙ্গলবার সেই নির্দেশ পালন করলেন ফাইজান। এবং আগামীদিনেও এমনটা করে যেতে হবে তাঁকে।
আরও শুনুন:
রাষ্ট্রসঙ্ঘে পাকিস্তানকে কড়া জবাব ভারতীয় কূটনীতিকের, মহিলার পরিচয় জানেন?
আসলে, সংবিধান অনুযায়ী প্রত্যেক ভারতীয়র কিছু মৌলিক কর্তব্য রয়েছে। জাতীয় পতাকা, জাতীয় চিহ্ন, কিংবা জাতীয় স্লোগানের প্রতি পূর্ণ মর্যাদা প্রদর্শণ প্রত্যেক ভারতবাসীর দায়িত্ব। একইসঙ্গে জাতীয় স্বার্থ জড়িয়ে আছে এমন কিছুর অপমান করাও আইনত অপরাধ। জাতীয় পতাকা অবমাননার দায়ে জেল অবধি হতে পারে। এক্ষেত্রেও সেই কারনেই শাস্তি পেতে হল ফাইজানকে। তাঁর বিরুদ্ধে ১৫৩বি ধারায় মামলা রুজু হয়। যা এ দেশের জাতীয় সংহতিকে অবমাননার কথা বলে। জেনে বুঝে এমন অপরাধ করেছিলেন ফাইজান, অভিযোগ ছিল এমনটাই। তাই শাস্তি হিসেবে এই কাজ তাঁকে করতে হয়েছে। নেটিজেনদের একাংশ অবশ্য এইটুকুতে খুশি নন। অনেকেই মনে করছেন এই ধরনের অপরাধের জন্য আরও কড়া শাস্তি হওয়া উচিত ছিল ফাইজানের। খোদ বিচারপতিও তাঁর এই আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যে দেশে জন্ম সেই দেশের মাটিকে অপমান করা মোটেও কাম্য নয়। তাই আইনের পথে থেকেই এমন শাস্তি দেওয়া হয় ফাইজানকে।