ঠিকমতো হিজাব না পরার অপরাধে পোশাক খুলতে বাধ্য করেছিল পুলিশ। ইরানের সাম্প্রতিক বিক্ষোভের আবহে এমনই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ইরানি মেয়ে মেরি মহম্মদি। মেয়েদের দমিয়ে রাখার জন্য যৌন হেনস্তাকে হাতিয়ার করে সে দেশ, এমনটাই দাবি তাঁর। ঠিক কী বলেছেন মেরি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
হিজাব না পরার অপরাধে মাহসা আমিনির গ্রেপ্তার ও মৃত্যুর ঘটনায় ফুঁসছে ইরান। মেয়েদের স্বাধীনতাকে সবরকমভাবে দমন করার এহেন প্রবণতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন ইরানের হাজার হাজার মেয়ে। এই আবহেই এবার মুখ খুললেন তাঁদের একজন। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ইরানের নীতিপুলিশির বাড়বাড়ন্তে বর্তমানে দেশছাড়া মেরি মহম্মদি। তাঁর বিস্ফোরক দাবি, প্রতিবাদী মেয়েদের কণ্ঠ রোধ করতে সে দেশের প্রশাসনের অন্যতম হাতিয়ার যৌন হেনস্তা।
আরও শুনুন: Sex Slave: যৌনদাসীর দিনরাত, ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানিয়েছিলেন Nadia Murad
হিজাব না পরার দরুন ইরানের নীতি পুলিশের হাতে নিহত হয়েছেন ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনি। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই হিজাব বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে উঠেছে সে দেশে। কোনোরকম চাপিয়ে দেওয়া পোশাকবিধি আর মেনে নেবেন না তাঁরা, এই দাবিতেই পথে নেমেছেন ইরানের মেয়েরা। বিক্ষোভ রুখতে পালটা দমননীতি নিয়েছে সে দেশের প্রশাসনও। এই পরিস্থিতিতেই এবার মেরি জানালেন, ঠিকমতো হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ ২০২০ সালে একবার তাঁকে আটক করেছিল পুলিশ। পুলিশি হেফাজতে তাঁকে পোশাক খুলতে বাধ্য করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন মেরি। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, ইরানে মেয়েদের দমিয়ে রাখার জন্য যৌন হেনস্তার আশ্রয় নেয় প্রশাসন।
আরও শুনুন: মাথার চুল কেটে রাখলেন কবরে, ইরানের হিজাব বিক্ষোভে নিহত ভাইকে শ্রদ্ধা তরুণীর
জন্মসূত্রে মুসলিম হলেও পরে ধর্ম পরিবর্তন করে খ্রিস্টান হন মেরি। কিন্তু ধর্ম পরিবর্তনের পর ইরানে তাঁর দিন কাটানো দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেছেন, ইরানের আইন অনুযায়ী, মুসলিম মেয়েদের মতো অমুসলিম মেয়েদেরও হিজাব পরতে হয়। একবার বাসে যাওয়ার সময় গরমের জন্য হিজাবটি সামান্য সরিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় এক অপরিচিত মহিলা তাঁকে ঠিকমতো হিজাব পরার নির্দেশ দেন। মেরি সে কথা না শোনায় ওই মহিলা তাঁকে আক্রমণ করে বসেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু পুলিশ তাঁর অভিযোগ গ্রহণ না করে উলটে তাঁকেই আটক করেছিল বলে দাবি মেরির।
মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর সরকারি দমন পীড়ন সত্ত্বেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ইরানি মেয়েরা। পুলিশের হাতে প্রতিবাদীদের অন্তত ২৩০ জন নিহত বলে খবর বেসরকারি সূত্রে। এই পরিস্থিতিতেই মুখ খুললেন ইরানের এই দেশছাড়া মেয়ে। যাই হয়ে যাক না কেন, এই আন্দোলন সহজে থামবে না বলেই আশা করছেন মেরি মহম্মদি।