মোটা অঙ্কের পেনশন পেতেন মা। আর তাই তাঁর মৃত্যুর পর সে-খবর বাইরেই আনেননি ছেলে। এমনকী মৃতদেহটিকেও লুকিয়ে ফেলেছিলেন কায়দা করে। টানা ৬ বছর এই ভাবেই আদায় করেছেন মায়ের পেনশন। শেষমেশ কীভাবে ধরা পড়ল ছেলের কুকীর্তি? আসুন শুনে নিই।
৬ বছরে আদায় প্রায় ১.৫৯ কোটি টাকা। টাকার অঙ্কটা যে নেহাত কম নয়, সে তো বোঝাই যাচ্ছে। এতগুলো টাকার লোভ কিছুতেই ছাড়তে পারেননি এক ব্যক্তি। আর তাই মায়ের মৃতদেহ লোপাট করেই দিব্যি মায়ের নামে তুলছিলেন পেনশন। শেষমেশ পুলিশ অবশ্য ধরে ফেলে ব্যক্তির কুকীর্তি।
আরও শুনুন: ‘সেঙ্গল’ প্রতিষ্ঠায় মুসলিম ধর্মগুরু নেই কেন? মোদিকে খোঁচা দিয়ে মোক্ষম প্রশ্ন সমাজবাদী নেতার
কিন্তু এতদিন মৃতদেহ গুম করে রেখেছিলেন, আর পাড়া-প্রতিবেশীর সন্দেহ হয়নি! ব্যাপারটা ঠিক সেরকম নয়। যাতে সন্দেহ না হয়, তার জন্য আগাগোড়াই ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন ওই ব্যক্তি। মা-ছেলে বাস করতেন এক ঘরেই। হিসাবমতো ৬ বছর আগে মহিলার বয়স ছিল ৮৬ বছর। তখনই তাঁর মৃত্যু হয়। ছেলে সকলকে জানায়, মা অন্যত্র গিয়েছেন। এখন আর তাঁর সঙ্গে থাকেন না। আর কায়দা করে বৃদ্ধার মৃতদেহ মুড়ে প্রায় মমির মতো করেই বিছানায় রেখে দিয়েছিলেন। এতটাই দক্ষতার সঙ্গে মৃতদেহ লুকিয়ে ফেলার কাজটি করেছিলেন যে কেউ কিছু টেরও পাননি। এরকম করেই কাটে ছ-বছর। আর মায়ের নামে পেনশন তুলতে থাকেন ওই ব্যক্তি।
আরও শুনুন: প্রেরণা নয়, সাভারকরের বিরোধীই ছিলেন নেতাজি, রণদীপকে নস্যাৎ করলেন চন্দ্র বোস
তবে পুলিশের সন্দেহ হয় অন্য কারণে। ছিয়াশি বছরের এক বৃদ্ধা গত ৬ বছরে তাঁর হেলথ কার্ডে কোনও কিছুই দাবি করেননি। কেন? প্রশ্ন জাগে পুলিশের মনে। এমনকী এর মধ্যে চলে গিয়েছে কোভিড মহামারী, অথচ বৃদ্ধা তাঁর হেলথ কার্ডটি একবারের জন্য ব্যবহারই করেননি। এই সন্দেহ থেকেই শুরু হয় খোঁজখবর। আর তখনই কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে বেরিয়ে আসে কেউটে। বৃদ্ধার বাড়িতে হানা দিতেই উদ্ধার হয় মৃতদেহ। তখন অবশ্য বৃদ্ধার ছেলে অর্থাৎ ওই ব্যক্তি বাড়িতে ছিলেন না। তবে পরে পুলিশ তাঁকে খুঁজে পায়। অটোপসি রিপোর্ট জানাচ্ছে, ছ’ বছর আগেই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। আর এতদিন মায়ের নামে পেনশন তুলে প্রায় ১.৫৯ কোটি টাকা আদায় করেছে ছেলে। ইটালির এই ঘটনায় যারপরনাই তাজ্জব হয়েছে সে-দেশের পুলিশ। তবে ঠিক কোন কায়দাতে যে মৃতার দেহ ব্যবহার করে টাকা তুলতেন ওই ব্যক্তি তা এখনও অজানা। জালিয়াতির শিকড়ে পৌঁছাতে এখনও তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।