অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে উত্তপ্ত তেলেঙ্গানা। সে-রাজ্যে অভিযোগ উঠেছে যে, শিবাজি মহারাজের মূর্তির কাছেই প্রস্রাব করেছেন এক যুবক। এদিকে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই যুবককে অর্ধনগ্ন করে ঘুরিয়েছেন সমবেত জনতা। অভিযোগ উঠেছে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোরও। তবে এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই লেগেছে সাম্প্রদায়িকতার রং। কেননা অভিযুক্ত যুবক ইসলাম ধর্মাবলম্বী। নির্বাচনের আগে কি নতুন করে সরগরম হচ্ছে তেলেঙ্গানা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে রীতিমতো উত্তপ্ত তেলেঙ্গানার সিদ্দিপেট জেলা। শিবাজি মহারাজের মূর্তির কাছে প্রস্রাব করার অভিযোগ উঠেছে এক মুসলিম যুবকের বিরুদ্ধে। কিন্তু ওই ব্যক্তিকে সাজা দেওয়ার ঘটনা নিয়ে অশান্তি চরমে উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে ওই যুবককে অর্ধনগ্ন করে ঘোরানোর। এমনকী জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোরও অভিযোগে সরব মুসলিমরা। ‘মজিলিস বাচাও তেহরিক’ বা এমবিটি নামে রাজনৈতিক সংগঠনের দাবি, এই ঘটনা সে রাজ্যের সংখ্যালঘু নির্যাতনের ছবিটিকেই স্পষ্ট করেছে। ঘটনায় অভিযোগের তির হিন্দুত্ববাদী সংগঠন গুলির দিকেই। আর তাই যাঁরা আইন হাতে তুলে নিয়েছেন, তাঁদের কঠোর শাস্তির দাবি তোলা হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
আরও শুনুন: ‘মুসলিমদের বৈষম্যকে তোপ, হিন্দুদের জাতপাত নিয়ে চুপ কেন?’ UCC ইস্যুতে মোদিকে খোঁচা সাংবাদিকের
ঘটনার সূত্রপাত, সোমবার রাতে। ছত্রপতি শিবাজির একটি মূর্তির ঠিক পাশেই প্রস্রাব করতে দেখা যায় এক যুবককে। স্থানীয় জনতা ওই যুবককে হাতেনাতে পাকড়াও করে। দেখা যায় যুবকটি মদ্যপ, নেশার করেই এরকম কাজ করে ফেলেছেন যুবকটি। অভিযোগ যে, এর পরেই ক্ষুব্ধ জনতা ওই যুবকের পোশাক-আসাক খুলে তাঁকে প্রায় অর্ধনগ্ন করে ফেলে। সেই অবস্থায় যুবককে আশেপাশে ঘোরানো হয়। জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলানোও হয় যুবককে। অভিযোগ যে, এক্ষেত্রে অপরাধের থেকেও গুরুতর হয়েছে যুবকের ধর্মপরিচয়। মুসলিম বলেই যুবককে এই ধরনের সাজার মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এদিকে ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই উত্তাল হয় পরিস্থিতি। মুসলিমদের অভিযোগ, জায়গা পরিষ্কারের নামে প্রস্রাবে জিভ দিতে বাধ্য করা হয়েছে ওই যুবককে। ইসলাম ধর্মাবলম্বী স্থানীয় মানুষরা জমায়েত হয়ে এর প্রতিবাদ শুরু করেন। দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় সংঘর্ষ বেধে যায়। একে অপরের দিকে পাথর ছোড়ারও অভিযোগ ওঠে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে নামে পুলিশ। এমবিটি-র তরফে জানানো হয়েছে, এই ঘটনার নেপথ্যে হাত আছে বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো দক্ষিণপন্থী সংগঠনের। মুসলিম জনতার নিরাপত্তার দাবিতেও পুলিশের কাছে সরব হয়েছে এই সংগঠন। মুখ্যমন্ত্রী যেন এই ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেন, এমনটাও দাবি তাঁদের।
আরও শুনুন: এগিয়ে মোদি! বিরোধীরা ব্যস্ত ২০২৪ নিয়ে, ২০৪৭-কে পাখির চোখ করে প্রস্তুতি শুরু প্রধানমন্ত্রীর
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে রাতারাতি মোতায়েন হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। খোদ পুলিশ কমিশনার বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করেন। অভিযুক্ত যুবককে যেমন গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তেমন সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগেও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। ডিসেম্বরেই নির্বাচন তেলেঙ্গানায়। এই ধরনের সংঘর্ষ যে নির্বাচনের আগে পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলতে পারে, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।