ধনী হন কি দরিদ্র, সন্তানের প্রতি বাবার ভালবাসায় প্রভাব ফেলে না সেই বৈষম্য। আর সে কথাই যেন ফের একবার প্রমাণ করে দিলেন এই ব্যক্তি। নিজের যা কিছু আছে, তা দিয়েই মেয়ের প্রথম জন্মদিন উদযাপন করলেন তিনি। কিন্তু এমনই অভিনব উপায়ে সেই উদযাপন সেরেছেন তিনি, যা অবাক করে দেওয়ার মতোই। এ কাজে প্রশংসা জানিয়েছেন খোদ সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সন্তান জন্ম দেওয়ার হিড়িক নিয়ে সম্প্রতি সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। এই তাগিদ যে পুত্রসন্তান পাওয়ার আশাতেই, সে কথায় সহমত জানাচ্ছেন সকলেই। পাশাপাশি উঠে আসছে এই কথাটিও, যে, কোনও দেবীর পুজো উপলক্ষে এই ট্রেন্ড চোখে পড়ে না। অর্থাৎ সরকারি তরফে যতই ‘বেটি বচাও, বেটি পড়াও’-এর মতো কন্যাশিশুদের গুরুত্ব দেওয়া প্রকল্পগুলি চালু করা হোক না কেন, সমাজে যে কন্যাসন্তানের চেয়ে পুত্রই এখনও বেশি কাঙ্ক্ষিত, সে কথাই ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে এই ঘটনা। কিন্তু সংখ্যায় কম হলেও, এর ব্যতিক্রম যে একেবারেই নেই, সে কথাও কিন্তু বলা চলে না। যেমন ব্যতিক্রমের নজির গড়েছে মধ্যপ্রদেশের এই সাম্প্রতিক ঘটনাটি। যেখানে কন্যাসন্তানের প্রথম জন্মদিন উপলক্ষে বিপুল আয়োজন করেছেন এক ব্যক্তি। না, কোনোরকম দেখনদারি নেই এর পিছনে। নেই ধনসম্পদের অহংকারও। মেয়ের জন্মদিন পালনের মধ্যে দিয়ে ‘বেটি বচাও, বেটি পড়াও’ বার্তাটিকেই তুলে ধরতে চেয়েছেন তিনি, আর সেই কারণেই এই আয়োজন তাঁর- এমনটাই জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
আরও শুনুন: রোষ শুধুই সিনেমাকে ঘিরে! ‘বয়কট’ ট্রেন্ড ধর্ষকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় কেন? প্রশ্ন উরফির
ঠিক কী করেছেন তিনি?
মধ্যপ্রদেশের ভোপালের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি পেশায় একজন ফুচকাবিক্রেতা। কিন্তু আর্থিক ক্ষমতা, শ্রেণিগত অবস্থান কিংবা সামাজিক পদমর্যাদা- কোনও কিছু দিয়েই তো সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসা নির্ধারিত হয় না। এইসব বৈষম্য আদতে সেখানে কোনও ছাপ ফেলতে পারে না। সে কথাই ফের প্রমাণ করে দিয়েছেন অঞ্চল গুপ্তা নামের ওই ব্যক্তি। নিজের আয়ত্তে যা আছে, তা দিয়েই মেয়ে আনোখির প্রথম জন্মদিন ধুমধাম করে পালন করেছেন তিনি। সে উদযাপনের প্রধান উপকরণ ছিল ফুচকা। জানা গিয়েছে, মোট ২১টি স্টল বসিয়ে সেদিন ফুচকা বিলি করেছেন ওই ব্যক্তি। বিলি করা ফুচকার পরিমাণ এক লক্ষ ছাড়িয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। পেশায় ফুচকাওয়ালা হলেও, ওই বিপুল পরিমাণ ফুচকা বিলি করার ব্যয়ও কম নয়। তবে সেই বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাতে চাননি তিনি। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর এই কাজের উদ্দেশ্য ছিল সকলের মধ্যে ‘বেটি বচাও, বেটি পড়াও’ বার্তাটিকেই ছড়িয়ে দেওয়া।
আরও শুনুন: অন্য মহিলাদের সঙ্গে স্ত্রীর তুলনা টেনে বিদ্রুপ অপরাধের শামিল, সাফ জানাল আদালত
ওই উদযাপনে হাজির ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক রামেশ্বর শর্মা। তিনি তো বটেই, এমনকি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী খোদ শিবরাজ সিং চৌহানের কাছ থেকেও প্রশংসা কুড়িয়েছে এহেন অভিনব আয়োজন। কন্যাসন্তানও যে পরিবারের কাছ থেকে সবরকম স্নেহ ভালোবাসা সম্মান পাওয়ার যোগ্য, অভিনব উপায়ে সে কথাই মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন ওই ব্যক্তি।