তিন তালাক প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। তারপরও সেই রায়কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ওই প্রথার ফায়দা নিয়ে চলেছে কেউ কেউ। সম্প্রতি সেদিকেই নির্দেশ করল উত্তরপ্রদেশের এই ঘটনাটি। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অভিযোগ, ঠান্ডা খাবার পরিবেশন করেছিলেন স্ত্রী। সেই অপরাধেই তাঁকে তিন তালাক দিয়ে তৎক্ষণাৎ বিচ্ছেদ ঘোষণা করেন স্বামী। বেআইনি এই কাজের জন্য এবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন উত্তরপ্রদেশের ওই ব্যক্তি।
আরও শুনুন: বউ মানেই চিরকালের ঝামেলা! এমনটাই ভাবে তরুণ প্রজন্ম, পর্যবেক্ষণ কেরলের আদালতের
জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের পিলিভিট এলাকার বাসিন্দা ওই ব্যক্তির নাম মহম্মদ সলমন। এই বিচ্ছেদের পাঁচ মাস পরে তাঁর স্ত্রী উমরা পুলিশের কাছে স্বামী এবং শ্বশুর শাশুড়ির নামে অভিযোগ দায়ের করেন। আগে ইসলামিক শরিয়তি আইন মোতাবেক যে কোনও পুরুষ তাঁর স্ত্রীকে তিনবার তালাক বলে সঙ্গে সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘোষণা করতে পারতেন। কিন্তু বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় চব্বিশটি দেশ এই প্রথা আইন করে নিষিদ্ধ করেছে। পড়শি দেশ পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার সঙ্গে এই রায়ে সম্মতি জানিয়েছে ভারতও। আর সেইমতোই ২০১৯ সালের জুলাই মাসে এই তিন তালাক প্রথা নাকচ করেছে দেশের সংসদ। ২০১৯ সালে পাশ হওয়া মুসলিম মহিলার বিবাহসম্পর্কিত অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ীই অভিযোগ রুজু করেছেন ওই মহিলা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গৃহহিংসার জন্য বরাদ্দ ৪৯৮এ ধারা, স্বেচ্ছায় আঘাত করার জন্য ৩২৩ ধারা, মহিলার অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাঁর প্রতি জোর খাটানোর জন্য ৩৫৪ ধারা এবং অপমান করার জন্য ৫০৪ ধারাও।
আরও শুনুন: বেকারত্বের জেরে বাড়ছে কমবয়সিদের আত্মহত্যার ঘটনা, তালিকার শীর্ষে কোন শহর?
ওই মহিলা জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ২৩ মে বিয়ে হয় তাঁদের। কিন্তু পণের দাবিতে প্রথম থেকেই তাঁর উপরে নির্যাতন চলেছে বলে দাবি করেছেন মহিলা। এমনকি ৩ মাস পরে শ্বশুরবাড়ির দাবিদাওয়া মিটিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও নির্যাতন থামেনি বলেই জানিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের ১২ এপ্রিল তারিখে খাবার পরিবেশন করার সময় সেই খাবার ঠান্ডা বলে অভিযোগ করেন সলমন। যার জেরে সেখানেই একসঙ্গে তিনবার তালাক উচ্চারণ করে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘোষণা করেন ওই ব্যক্তি। সরকার এই প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরেও অন্যায়ভাবে তার সুবিধে নিয়েছেন তিনি। আর তার জেরেই এবার পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন ব্যক্তি।