ফের প্রকাশ্যে বুলডোজার কাণ্ড। মুসলিমদের পবিত্র রমজান মাসেই বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল ২৫০ বছরের পুরনো এক মাদ্রাসা। ঠিক কোথায় ঘটেছে এই ঘটনা? আসুন শুনে নিই।
রমজান মাসেই ভেঙে ফেলা হল ২৫০ বছরের পুরনো একটি মাদ্রাসা। অন্তত ১২০ জন মুসলিম ছাত্রের পঠনপাঠন চলত ওই মাদ্রাসায়। তাদের মধ্যে অনেকে স্থায়ীভাবে থাকত ওই মাদ্রাসাতেই। অভিযোগ, বিনা নোটিশে সেই মাদ্রাসা কার্যত গুঁড়িয়ে ফেলা হয়েছে। প্রশাসনের সাফাই সত্ত্বেও ঘটনায় উসকে উঠেছে বিতর্ক।
আরও শুনুন: যেন উলটপুরাণ! সনাতন ধর্ম রক্ষায় ‘বেদ বিদ্যালয়ে’ জোর কংগ্রেসেরই
ঘটনাটি নয়া দিল্লির। সেখনকার বাঙালি বাজার এলাকার জনপ্রিয় এক মসজিদে এমনই কাণ্ড ঘটেছে। সম্প্রতি মসজিদ সংলগ্ন এক বহু পুরনো মাদ্রাসা বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে। দিল্লির ভূমি ও উন্নয়ন দপ্তরের মতে, ওই মাদ্রাসার কিছু অংশ অবৈধ ভাবে তৈরি করা হয়েছিল, আর সেই কারণেই তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে এ কথা মানতে নারাজ মসজিদ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, কোনোরকম নোটিস ছাড়াই এমন কাজ করেছে প্রশাসন। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, একেবারে সাতসকালেই কয়েকটি বুলডোজার-সহ মসজিদের সামনে হাজির হয় প্রচুর পুলিশ। মিনিট দশেকের মধ্যেই সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ করে দেওয়া হয় মাদ্রাসার একাধিক দেওয়াল ও বেশ কিছু ঘর। কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই মাদ্রাসায় ১২০ জন ছাত্রের পড়াশোনা চলত। এরা প্রত্যেকেই নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্য। তাই তাদের নিয়মিত খাবার দেওয়া হত মাদ্রাসা থেকেই। তা ছাড়া মাদ্রাসাতেই বাস করত একাধিক পড়ুয়া। হঠাৎ করে মাদ্রাসা ভেঙে দেওয়ায় ওই পড়ুয়াদের কী হবে? সেই প্রশ্নই তুলেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
আরও শুনুন: ‘মুসলমানদের দখলে’ আমের বাজার! মুসলিম ফল বিক্রেতাদের বয়কটের ডাক কর্ণাটকে
যদিও এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন ভূমি ও উন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিকরা। মাদ্রাসার যে অংশ ভাঙা হয়েছে তা কেবলমাত্র বারান্দা হিসেবে ব্যবহার করা হত বলে দাবি করেছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, মাদ্রাসার অভ্যন্তরে কোনও ক্ষতি হয়নি। আর যে অংশ ভাঙা হয়েছে তা অবৈধভাবে নির্মাণ করা বলেই দাবি প্রশাসনের। প্রশাসনের সূত্রে খবর, প্রায় ৪০ বছর আগে সরকারের তরফে ওই জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তী কালে সেখানে বেশ কিছু অবৈধ নির্মাণ করা হয়, যার মধ্যে ছিল মাদ্রাসার ওই বর্ধিত অংশটিও। সেই কারণেই সম্পূর্ণ আইনি পথে হেঁটে ওই অংশটুকু ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। যদিও এর আগেও অবৈধ নির্মাণের অজুহাতে বহু মসজিদ ভেঙে ফেলার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। সেই তালিকাতেই নতুন সংযোজন এই শতাব্দীপ্রাচীন মাদ্রাসা, এমনটাই মনে করছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।