আর জি কর কাণ্ডে উত্তাল গোটা দেশ। শহর জুড়ে প্রতিবাদের ঝড়। একটাই স্লোগান, ‘ধর্ষকদের বিচার চাই!’ একই বার্তা এবার মিলবে কলকাতার পুজো মণ্ডপেও। বাহারি আলোর বদলে মণ্ডপ সেজে উঠবে ধর্ষণ বিরোধী পোস্টারে। কোন মন্ডপে দেখা যাবে এমনটা? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
আগে মেয়ের বিচার করুন, মায়ের পুজোর ব্যবস্থা আমরা করে নেব। এই দাবিতেই দুর্গাপুজোর অনুদান ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন ক্লাব। স্রেফ দুর্গাপুজো নয়। আর জি কাণ্ডের প্রতিবাদে শামিল হতে চলেছে কলকাতার এক গণেশ পুজো কমিটিও। যদিও তাঁদের প্রতিবাদের ধরণটা খানিক আলাদা।
আরও শুনুন: ‘রাস্তার মোড়ে যমরাজ অপেক্ষা করছেন!’ ধর্ষকদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন যোগী আদিত্যনাথ
দুর্গাপুজোর বাকি মাত্র কয়েকদিন। প্রতিবছর এই সময়টায় সেজে ওঠে গোটা শহর। আলোয় আলোয় ভরে ওঠে চারিদিক। তবে এবারের ছবিটা হয়তো খানিক অন্যরকম হবে। আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় অস্থির গোটা শহর। দোষীদের শাস্তির দাবিতে উঠছে প্রতিবাদের ঝড়। কখনও রাত দখল, কখনও মৌনমিছিল, একাধিক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে দিকে দিকে। এই আবহে পুজোর আনন্দে মেতে ওঠার মতো মানসিক অবস্থা নেই অনেকেরই। সোশাল মিডিয়ায় কেউ কেউ দাবি তুলছেন পুজো বন্ধ হোক। তাতে সায় দিচ্ছেন আরও অনেকেই। তবে কলকাতার পরিচিত ও প্রসিদ্ধ পুজো কমিটিগুলি পুজো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে নারাজ। আর জি কর ঘটনার নিন্দায় তাঁরাও সরব হচ্ছেন, তবে পুজো বন্ধ কখনই এর সমাধান হতে পারে না বলেই মনে করছেন তাঁরা। বরং পুজোর মন্ডপকেই প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছেন তাঁরা। বাহারি আলোর বদলে মণ্ডপ সাজানো হোক ধর্ষণ বিরোধী পোস্টারে, এমনই পরিকল্পনা সারছেন কলকাতার বিখ্যাত কিছু ক্লাব। তবে দুর্গাপুজোর আগেই গণেশপুজো। বিগত কয়েকবছরে এই শহরেও যেভাবে গণপতি উৎসবের ধুম বেড়েছে, তাতে দুর্গাপুজোর মতোই জাঁকজমক চোখে পড়ে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিকে সামনে রেখে চলতি বছরে সেই আলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলকাতা বিখ্যাত গণেশ পুজো কমিটি।
আরও শুনুন: ছলনা করেই অবলা রমণীর সর্বনাশ! পুরুষদের সম্পর্কে লিখেছিলেন আর জি করের ‘সঙ্গিনী’
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারে গণেশপুজোর আড়ম্বর কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সল্টলেক বি বি ব্লক। প্রতিবছর ঘটা করে গণপতি উৎসব আয়োজন করে কলকাতার এই ক্লাব। চন্দননগরের বাহারি আলোয় সাজানো হয় মণ্ডপ। মূর্তি, মণ্ডপ সবই হয় দেখার মতো। কিন্তু এবছর এই ক্লাবের গণেশপুজোয় অন্যরকম ছবি ধরা পড়বে। থাকবে না কোনও বাহারি আলো। লাল আলো রাখা হবে মণ্ডপের অন্দরে। চারিদিক ভরে উঠবে ধর্ষণ বিরোধী পোস্টারে। একটা, দুটো নয়, কয়েকশো পোস্টার রাখা হবে গোটা মন্ডপে। কিংবা তারও বেশি। অবশ্যই আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে শামিল হতেই এই ভাবনা। তবে কমিটির দাবি, গোটা দেশের নানা প্রান্তে ঘটে চলা যৌন অপরাধের বিরুদ্ধের সোচ্চার হতে চাইছেন তাঁরা। পুরুষ-মহিলা কেউ যেন ধর্ষণের শিকার না হন, সেই বার্তাই দেবে কলকাতার গণেশপুজো কমিটি। আগামীদিনে সমাজ থেকে ধর্ষণ নামের ব্যধি দূর হোক। এই ভাবনা সামনে রেখেই চলতি বছরের গণেশপুজো আয়োজন করতে চলেছে কলকাতার ওই ক্লাব।