রানির মুকুটে থাকা কোহিনূর হিরেটি নাকি আসলে প্রভু জগন্নাথের সম্পত্তি! এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে জমা পড়েছে এক চিঠি। রানির মৃত্যুর পরে পরেই এমন দাবি ঘিরে ঘনাল বিতর্ক। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সদ্যপ্রয়াত রানির মুকুটে থাকা হিরেটি যে ভারত থেকে লুঠ করা হয়েছিল এ কথা সকলেরই জানা। কিন্তু সেই হিরের আসল মালিক নাকি প্রভু জগন্নাথ! বহুকাল আগে পাঞ্জাবের রাজা রণজিৎ সিং সেই হিরে দান করেছিলেন প্রভু জগন্নাথকে। এমনই দাবি করেছে ওড়িশার এক সংগঠন। এই মর্মে খোদ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে একটি চিঠিও জমা করেছে সংগঠনটি।
আরও শুনুন: ‘ধর্মীয় আচারে’র নামে নিয়মিত ধর্ষণ নাবালিকাকে, অবশেষে গ্রেপ্তার স্বঘোষিত ‘ঈশ্বরের অবতার’
রানির মৃত্যুর পরই ব্রিটেনের সংগ্রহশালায় থাকা বিভিন্ন বহুমূল্য সামগ্রী নিয়ে শুরু হয়ছে বিতর্ক। অনেকেই মনে করেন ব্রিটিশরা তাদের শাসনকালে বিভিন্ন উপনিবেশ থেকে লুঠ করে নিয়ে গেছে সেইসব বহুমূল্য সামগ্রী। যার মধ্যে অন্যতম ভারতের কোহিনূর হিরেও। দেশের ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক ও বাহক হিসেবেই, কোহিনূর হিরে পুনরায় ফিরিয়ে আনার দাবি তোলেন দেশের অনেকেই। কিন্তু সেই হিরে নাকি আসলে দেবোত্তর সম্পত্তি, এবার এমনই দাবি করল শ্রী জগন্নাথ সেনা নামে ওড়িশার এক সংগঠন। প্রভু জগন্নাথের এই সম্পত্তি অবিলম্বে পুরীর মন্দিরে ফেরত পাঠানো হোক, এই দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছেও চিঠি পাঠিয়েছে তারা। সংগঠনের তরফে রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, আফগানিস্তানের বাদশা নাদির শাহের বিরুদ্ধে কোনও এক যুদ্ধে জয়লাভ করার পরে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ প্রভু জগন্নাথকে এমন উপহার দেন মহারাজা রণজিৎ সিং। কারও কারও মতে, দান করার পরেও হিরেটি রাজার হেপাজতেই ছিল। কিন্তু পারিবারিক ভাবে তাঁরা বিশ্বাস করতেন এই হিরে জগন্নাথের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে। ১৮৩৯ সালে মহারাজা রণজিৎ সিং-এর ছেলের কাছ থেকে এই হিরে লুঠ করে নিয়ে যায় তৎকালীন ব্রিটিশ প্রশাসন, এমনটাই দাবি অনেকের।
আরও শুনুন: টিপু সুলতানের মৃতদেহ থেকেই খুলে নেওয়া হয় বহুমূল্য আংটি! কোহিনূর ছাড়াও কী কী লুঠ করেছিল ব্রিটিশরা?
তবে এই প্রথম নয়, জানা গিয়েছে, জগন্নাথ সেনার তরফ থেকে ২০১৬ সালে খোদ রানিকেও এই মর্মে চিঠি লিখেছিলেন প্রিয়দর্শন পট্টনায়ক। ব্রিটেন থেকে উত্তরও এসেছিল। যেখানে বলা হয়েছিল রানি তাঁর দাবি বিবেচনা করে দেখবেন। শুধু এই বিতর্কে কোনও রাজনৈতিক রং যেন না লাগে। কিন্তু বাস্তবে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এমনকি বারংবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও ব্রিটেনে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়নি পট্টনায়ক-কে। রানির মৃত্যুর পর এবার এই দাবি ঘিরে কী পদক্ষেপ করবে ভারত এবং ব্রিটেন, সেটাই আপাতত দেখার।