ভূতের মুখে রাম নাম নয়, স্বয়ং চালকের মুখে রাম নাম। অনেকটা এরকমই ঘটনা। নিয়ম না মানায় জনৈক চালককে শাস্তি দিতে গিয়ে পুলিশ জানল, তিনি আর কেউ নন, স্বয়ং দশরথপুত্র রামচন্দ্র। অবাক হচ্ছেন! তাহলে সেই অবাক করা ঘটনাটা, আসুন, শুনে নিই বরং।
নিয়ম সবার জন্যই এক। সে সাধারণ কেউ হোক বা খোদ দশরথপুত্র রামচন্দ্র। রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে নিয়ম যদি কেউ না মানেন, তাহলে নির্ধারিত শাস্তি তাঁকে পেতেই হবে। রামচন্দ্র হলেও তিনি রেহাই পাবেন না। সম্প্রতি এ কথাই যেন প্রমাণ করে দিলেন কেরলের কোভালাম জেলার পুলিশ।
আরও শুনুন: শুধুই খেলনা নয়, ছাপোষা মানুষের প্রতিবাদের প্রতীক হল তালপাতার সেপাই
এক ব্যক্তিকে তাঁরা ধরেছিলেন নিয়ম না-মানার জন্য। ভদ্রলোক গাড়ি চালাচ্ছিলেন, কিন্তু সিট বেল্ট পরেননি। যথারীতি পুলিশের নজরে আসতেই তাঁরা গাড়ি থামান। চালককে সতর্ক করেন। এবং সেই সঙ্গে জানান যে, এর জন্য তাঁকে জরিমানা দিতে হবে ৫০০ টাকা। এখন জরিমানার স্লিপ কাটতে নামধাম প্রয়োজন। পুলিশ তাই চালকের নাম জিজ্ঞেস করলেন। আর এখান থেকেই গল্পের শুরু। ভদ্রলোক কিছুতেই নিজের নাম বলবেন না। পুলিশ তখন জানায়, কোনও একটা নাম তো বলতেই হবে, বাধ্যতামূলক। এবার চালক ভদ্রলোক বুদ্ধি করে নিজের নাম বলেন, রামচন্দ্র। এতে অবাক হয় উপস্থিত পুলিশকর্মীরা। ভদ্রলোক তখন গড়গড়িয়ে বলে চলেছেন যে, তিনি স্বয়ং রামচন্দ্র, তাঁর বাবার নাম দশরথ, আর তিনি এসেছেন অযোধ্যা থেকে। যেন খোদ রামায়ণ মহাকাব্য থেকে উঠে এসে তিনি গাড়ি চালাচ্ছেন কেরলের রাস্তায়। পুলিশরা একটু হতবাক হলেও, শেষমেশ স্লিপে এই নামধামই লেখেন। তাঁদের বক্তব্য, ভুল করলে জরিমানা সকলকে দিতেই হবে। সে কেউ যদি তাঁর নাম রামচন্দ্র বলেও দাবি করে থাকেন, তাহলেও এর ব্যতিক্রম হতে পারে না। অন্যদিকে চালক ভদ্রলোকের বক্তব্য, যখন তাঁকে জরিমানা দিতেই হবে, তখন আসল নামধাম জানিয়ে আর কী হবে! নাহয় রামচন্দ্র হয়েই তিনি জরিমানা দিলেন, তাতে তো আর ক্ষতি-বৃদ্ধি কিছু হচ্ছে না। এই হল দশরথপুত্রের জরিমানা দেওয়ার ঘটনা। না, এসব অবশ্য মহাকাব্যে লেখা থাকে না। তবে বিপুলা এই দেশের কতটুকু আর জানা যায়! আনাচে কানাচে তার প্রতিদিন ঘটে চলে কত অবাক করা ঘটনা। শেষমেশ তাই যেন বলতেই হয়, সত্য সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!