হবে না দুর্গাপুজো। ৪৪ বছরের ঐতিহ্যে ছেদ টানলেন উদ্যোক্তারাই। গোটা শহর উৎসবে মাতলেও আলো জ্বলবে না এই মণ্ডপে। কোথায় বন্ধ হচ্ছে দুর্গাপুজো? নেপথ্যে কারণটাই বা কী? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মহালয়ার আগে শুরু হয়েছে উৎসব। ইতিমধ্যেই কলকাতার প্রায় সব জনপ্রিয় মণ্ডপ উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে। দলে দলে ঠাকুর দেখতে হাজির হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে প্যান্ডেল হপিং-এ শামিল হচ্ছে খুদেরাও। তবে চলতি বছরে পুজো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রিয় দুর্গাপুজো কমিটি। বিশেষ কারণে এবছর উৎসবে ফিরছেন না উদ্যোক্তারা।
দুর্গাপুজো মানেই কলকাতা! বছরের এই কটা দিন শহরের রূপটাই যেন বদলে যায়। রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও পুজো হয় ঘটা করেই। কোথাও কোথাও কলকাতার মতো জৌলুস ধরা পড়ে। তবে তিলোত্তমাকে ছাপিয়ে যাওয়া সম্ভব না। একইভাবে বাংলার বাইরেও দুর্গাপুজোর চল রয়েছে। ত্রিপুরা, আসাম, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড সহ বিভিন্ন রাজ্যে পুজো হয়। সেখানেও জাঁকজমকে খামতি রাখেন না উদ্যোক্তারা। তবে এবছরের পুজোটা খানিক আলাদা। বিশেষ করে ত্রিপুরায়। একদিকে বন্যা, অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ। রাজ্যের বহু বাসিন্দা রয়েছে শরনার্থী শিবিরে। তার মধ্যে বাঙালিরাই সংখ্যায় বেশি। তাই এবছর উৎসব বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ত্রিপুরার গণ্ডছাড়া এলাকার মানুষজন। একটি নয়, গোটা এলাকায় একাধিক দুর্গাপুজো হত। এবছর সবকটিই বন্ধ রাখা হবে। উদ্যোক্তাদের দাবি, এই মুহূর্তে উৎসবে ফেরার মতো মানসিকতা নেই তাঁদের। এছাড়া পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকতেন এমন অনেকেই শরনার্থী শিবিরে। তাই পুজো সম্ভব নয়।
জানা গিয়েছে, ১৯৮০ সাল থেকে এই এলাকায় দুর্গাপুজো চলে আসছে। বেশিরভাগ পুজোই এবার ৪৪ বছরে পা রাখত। কিন্তু সেই ঐতিহ্যে ছেদ টানলেন উদ্যোক্তারা। তাঁদের অভিযোগ, বিনা দোষে অনেককে শরানার্থী শিবিরে রাখা হয়েছে। তাছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগকেও পুজো বন্ধের জন্য দায়ী করছেন এঁরা। বন্যার জেরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এলাকার। নতুন করে সবকিছু স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। তাই এই আবহে পুজো করার মতো মানসিক বা আর্থিক অবস্থা নেই তাঁদের। যদিও প্রশাসনের তরফে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বলেই জানা গিয়েছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে এতগুলো পুজো বন্ধ হয়ে যাক, এমনটা চায়নি সে রাজ্যের প্রশাসন। তবে উদ্যোক্তারা সাফ জানিয়েছেন, কোনও অবস্থাতেই এবছর তাঁরা উৎসবে ফিরবেন না। ফলত এবছর বন্ধই রইল ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজো।