মোদি জমানায় রেল দুর্ঘটনার সংখ্যা ৬০০ পেরিয়েছে। রাতারাতি জীবন বদেলেছে হাজার হাজার মানুষের। প্রাণও হারিয়েছেন বহু। বিগত দশ বছরের NDA জমানার এই পরিসংখ্যান কংগ্রেস আমলের থেকে কতটা আলাদা? মোদি জমানার আগের দশ বছরে রেল দুর্ঘটনার সংখ্যাটাই বা কত? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
করমণ্ডলের রক্তাক্ত স্মৃতি এখনও ঝাপসা হয়নি অনেকের কাছেই। বিশেষ করে যারা রেল দুর্ঘটনায় নিজেদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁরা চাইলেও ভুলতে পারেন না সেই অভিশপ্ত দিনের কথা। এরই মাঝে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনা। দুবছরে এই দুই দুর্ঘটনা মোদি জমানায় রেলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
আরও শুনুন: রেল দুর্ঘটনা থেকে মুক্তি পেতে অপেক্ষা করতে হবে ২২৭ বছর! কিন্তু কেন?
ঠিক কোন কারণে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা, তা জানা যায়নি এখনও। তাই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ নিয়ে নানা মুনির নানা মত ভেসে আসছে। একইসঙ্গে মোদি জমানায় রেল দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে না কমেছে সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকেই। কারণ বিগত দশ বছরে রেল সুরক্ষায় একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছে মোদি সরকার। ‘মিশন জিরো অ্যাক্সিডেন্ট’ চালু হওয়ার পরে ২০১৯ সালে রেল দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা শূন্যে পৌঁছায়, এমনটাও জানা গিয়েছিল। কিন্তু দুর্ঘটনা একেবারে থামেনি। কখনও যান্ত্রিক ত্রুটি কখনও আবার অন্য সমস্যা, বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েছে রেল নিরাপত্তা। তবু বিজেপির তরফে এই দাবি উঠছে NDA জমানায় রেল দুর্ঘটনা অনেকটাই কমেছে।
আরও শুনুন: কাঞ্চনজঙ্ঘা বেলাইন হতেই প্রশ্নের মুখে ‘মিশন জিরো অ্যাক্সিডেন্ট’, আসলে কী ছিল ওই ‘মিশন’?
দুই সরকারের পরিসংখ্যান বলছে বাস্তবিকই আগের ইউপিএ সরকারের তুলনায় গত ১০ বছরে রেল দুর্ঘটনা কমেছে। বেলাইন হওয়া, সরাসরি দুর্ঘটনা বা মৃত্যুর সংখ্যা, সবটাই আগের তুলনায় কম। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, রেল দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪-২০২৩ পর্যন্ত মোদি জমানায় দুর্ঘটনা হয়েছে ৬৩৮টি। এদিকে ইউপিএ জমানার ১০ বছরে অর্থাৎ ২০০৪ থেকে ২০১৪ অবধি রেল দুর্ঘটনা হয়েছে ১,৭১১টি। বিজেপি জমানায় রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৭৮১ জনের। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৫৪৩ জন। সে তুলনায় ইউপিএ জমানায় রেল দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৪৫৩। আহত ৪,৪৮৬ জন। এছাড়া ইউপিএ জমানায় মোট ৮৬৭ বার ট্রেন বেলাইন হওয়ার পরিসংখ্যান রয়েছে। সেখানে এনডিএ জমানায় ট্রেন বেলাইন হয়েছে ৪২৬ বার। এর জন্য অবশ্য অনেকটা কৃতিত্ব দিতে হয় আধুনিক প্রযুক্তিকে। গত ১০ বছরে প্রযুক্তির নিরিখে গোটা বিশ্বই অনেকটা এগিয়েছে। ব্যতিক্রম নয় ভারতীয় রেলও। তবে সেসব প্রযুক্তির ব্যবহার সত্ত্বেও যে হারে রেলে দুর্ঘটনা এখনও হচ্ছে, তা অবশ্যই উদ্বেগের।